
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনার জন্য আজারবাইজানে COP29-এ বিশ্বনেতারা একত্রিত হয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে, একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার জরুরি প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। ইউএনএসডব্লিউ সিডনির মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের গবেষণায়, অস্ট্রেলিয়ার তরুণদের মধ্যে উষ্ণ আবহাওয়া এবং আত্মহত্যার চিন্তাভাবনা এবং আত্মহত্যা-সম্পর্কিত আচরণ বৃদ্ধির মধ্যে একটি সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তন এই পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করছে। অনেক তরুণ আমাদের পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন, এবং এই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলি ইতিমধ্যেই উদ্বিগ্ন তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করছে।
নিউ সাউথ ওয়েলসে ১২-২৪ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার চিন্তাভাবনা এবং আত্মহত্যা-সম্পর্কিত আচরণের জন্য জরুরি চিকিৎসা বিভাগে ভর্তির উপর এই গবেষণাটি কেন্দ্রীভূত ছিল। ২০২২ এবং ২০১৯ সালের মধ্যে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত উষ্ণ মাসগুলির তথ্য বিশ্লেষণ করে, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং জরুরি বিভাগে ভর্তির বৃদ্ধির মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক দেখা গেছে। প্রতিদিনের গড় তাপমাত্রায় প্রতি ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির জন্য, আত্মহত্যার চিন্তাভাবনা এবং আচরণের জন্য জরুরি বিভাগে ভর্তির হার ১.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা একটি উদ্বেগজনক তথ্য।
উদাহরণস্বরূপ, গড়ে ২১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার তুলনায় গড়ে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার দিনগুলিতে জরুরি বিভাগে ভর্তির হার ১১ শতাংশ বেশি ছিল। শীতল দিনগুলির তুলনায়, মাঝারি উষ্ণ দিনগুলিতেও আত্মহত্যার চিন্তাভাবনার ঝুঁকি বেড়েছে। এছাড়াও, গবেষণায় দেখা গেছে যে অস্ট্রেলিয়ার উষ্ণ অঞ্চলে বসবাসকারী তরুণরা মানসিক চাপের ঝুঁকিতে বেশি। যদিও উষ্ণ আবহাওয়া সরাসরি তাদের উপর প্রভাব ফেলেনি, তবুও এটি তরুণদের মনে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা ছড়িয়ে দিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, উষ্ণ অঞ্চলে বসবাসকারী তরুণদের, বিশেষ করে যাদের বাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেই, তাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করছে।
এই প্রেক্ষাপটে, আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত কপ-২৯ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি রোধ করার জন্য উপযুক্ত কাউন্সেলিং প্রদানের জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার মতো বিশ্বের উষ্ণ দেশগুলিকে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমাতে বলা হয়েছে। এটি কেবল তাদের পরিবেশকে উষ্ণতা থেকে রক্ষা করবে না, তরুণদের মানসিক চাপও কমাবে।