আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মহিলাদের প্রতি এই ধরণের হিংসাত্মক আচরণ মানবাধিকারের লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে। তিনি এ জন্য একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করার জন্য সরকারগুলির কাছে আবেদন করেছেন।
সারা দেশে আলোচনার মূল বিষয় শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যা মামলা। শ্রদ্ধা হত্যার প্রধান আসামি তার প্রেমিক আফতাব। এরকম আরও অনেক ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে সঙ্গী, প্রেমিক বা স্বামী তার প্রেমিকা বা স্ত্রীর জীবন কেড়ে নিয়েছে। শ্রদ্ধা হত্যা মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস নিজের প্রতিক্রিয়া দেন। তিনি বলেন প্রতি ১১ মিনিটে একজন মহিলাকে হত্যা করা হয়। তিনি আরও বলেন, এই ধরণের কেসে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা বা পার্টনাররাই সেই মহিলা বা মেয়েদের খুন করে। এই ঘটনা বারবার সামনে আসছে, যা বেশ উদ্বেগজনক।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মহিলাদের প্রতি এই ধরণের হিংসাত্মক আচরণ মানবাধিকারের লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে। তিনি এ জন্য একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করার জন্য সরকারগুলির কাছে আবেদন করেছেন। আন্তোনিও গুতেরেস ২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলা মহিলাদের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক কার্যকলাপ বন্ধের অনুষ্ঠানের আগে এই বিবৃতি দেন। গুতেরেসের মতে, প্রতি ১১ মিনিটে একজন মহিলা তার ঘনিষ্ঠ পরিবার বা সঙ্গীর দ্বারা খুন হন।
'নারী অধিকার লঙ্ঘিত'
তিনি আরও বলেন, মহিলারা অনলাইন হয়রানির শিকারও হচ্ছেন। ঘৃণাত্মক বক্তৃতা, পর্নোগ্রাফি, যৌন হয়রানি এবং ছবি টেম্পারিংয়ের মতো নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ সাধারণ হয়ে উঠেছে। গুতেরেস আরও বলেন, 'এই ধরনের অপরাধের কারণে নারী ও মেয়েদের জীবনে প্পতিকূলতা তৈরি হচ্ছে ও তাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হচ্ছে।'
আন্তোনিও গুতেরেস বিশ্বজুড়ে সরকারকে নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। এর জন্য, তিনি সমাজ থেকে সুশীল সমাজের গোষ্ঠীর সাহায্য নিতে, একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে এবং আইনগুলি কঠোরভাবে অনুসরণ করা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছেন। তিনি আরও বলেন, নারীর স্বার্থে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল বাড়ানো দরকার।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো অর্থাৎ NCRB ২০২১ সালে সারা দেশে অপরাধের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এই হিসাবে, ২০২১ সালে সারা দেশে ২৯,২৭২টি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছিল। অর্থাৎ ২০২১ সালে দেশে প্রতিদিন ৮২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। ২০২০ সালের তুলনায় দেশে খুনের ঘটনা বেড়েছে ০.৩%। এই প্রতিবেদনে হত্যার বিভিন্ন কারণও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, পারস্পরিক বিরোধের জের ধরে বেশির ভাগ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ প্রতিবেদনে হত্যার জন্য ২৪টি ভিন্ন কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। এতে প্রেমের সম্পর্কে খুন থেকে শুরু করে অবৈধ সম্পর্কের কারণে খুন পর্যন্ত কারণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।