বৃহস্পতিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন ঘোষণা করেছেন যে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের নিহত হওয়া 'ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের জন্য একটি শুভ দিন'।
বৃহস্পতিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন ঘোষণা করেছেন যে ইজরায়েলি বাহিনীর হাতে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের নিহত হওয়া 'ইজরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের জন্য একটি শুভ দিন'। তিনি এটিকে হামাসের হাতে বন্দী ইজরায়েলিদের মুক্তি এবং এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটানোর একটি 'সুযোগ' হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ইজরায়েল নিশ্চিত করার পরপরই বাইডেনের এই মন্তব্য সামনে এসেছে যে গাজায় তাদের বাহিনী সিনওয়ারকে হত্যা করেছে। ইজরায়েলি নেতারা সিনওয়ারের হত্যাকে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রতিশোধ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। উল্লেখ্য হামাস-নেতৃত্বাধীন জঙ্গিরা দক্ষিণ ইজরায়েলে আক্রমণ চালাবার এক বছরেরও বেশি সময় পরে এই ঘটনা ঘটল। তারা এই ঘটনাকে হামাসের আত্মসমর্পণ এবং প্রায় ১০০ জন বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার সুযোগ হিসেবে দেখছে।
তার বিবৃতিতে, বাইডেন সিনওয়ারের মৃত্যুর সঙ্গে ১১ সেপ্টেম্বর, ২০০১-এর হামলার জন্য দায়ী আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার মার্কিন অভিযানের মধ্যে মিল খুঁজেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এ ইজরায়েলের উপর হামলার মাস্টারমাইন্ডের হত্যা 'আবারও প্রমাণ করে যে বিশ্বের কোথাও কোনও জঙ্গি বিচার থেকে রক্ষা পেতে পারে না, সময় যতই লাগুক না কেন।'
গত এক বছর ধরে ইয়াহিয়া সিনওয়ার সহ হামাস নেতাদের ট্র্যাকিং এবং সনাক্ত করার ব্যাপারে বাইডেন মার্কিন বিশেষ অভিযান বাহিনী এবং গোয়েন্দা দলের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত করেছে যে সিনওয়ারের মৃত্যুর কারণ ইজরায়েলি বাহিনীর অভিযান, তবে তাদের এই অভিযানে সমর্থন ছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থারও।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সিনওয়ারকে শান্তির পথে একটি 'গুরুত্বপূর্ণ বাধা' হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে 'যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার ফলে এগিয়ে যাওয়ার, বন্দীদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনার সুযোগ তৈরি হয়েছে।'
সিনওয়ার বেশ কয়েক বছর ধরে গাজা উপত্যকায় হামাসের শীর্ষ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, এর সামরিক শাখার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন এবং এর শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছিলেন। জুলাই মাসে তার পূর্বসূরি ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুর পর তিনি হামাসের সর্বোচ্চ পদে উন্নীত হন। হানিয়া তেহরানে একটি ইজরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলিতে, ইজরায়েল বায়ু হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় হামাস এবং লেবাননের হিজবুল্লাহর বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিকে টার্গেট করা হয় এবং নির্মূল করা হয়। যদিও ইজরায়েল দাবি করেছে যে এই হামলার একটিতে হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফকে হত্যা করা হয়েছে, তবে গোষ্ঠী দাবি করে যে তিনি বেঁচে আছেন।