ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল এজেন্সি ফর ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (বিএনপিবি) জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা সিয়ানজুর রিজেন্সির কুগেনাং উপ-জেলার নাগারাক গ্রামে আজকা মাওলানা মালিক নামের শিশুটিকে উদ্ধার করেছে।
রাখে হরি তো মারে কে। ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভা প্রদেশের সিয়ানজুরে সোমবার ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সরকারী রেকর্ড অনুসারে, এই ধ্বংসযজ্ঞে এ পর্যন্ত ২৭১ জন মারা গেছে। ন্যাশনাল ডিজাস্টার এজেন্সি জানিয়েছে যে ভূমিকম্পের পরে ১৫১ জন নিখোঁজ রয়েছে, এবং ১০৮৩ জন আহত হয়েছে, যাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিন শতাধিক মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। তবে এসবের মধ্যে মিলেছে একটি সুখবর। বুধবার গভীর সন্ধ্যায় ধ্বংসস্তূপ থেকে ছয় বছরের এক শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপে প্রায় তিন দিন বেঁচে ছিল শিশুটি। শিশুটিকে জীবিত দেখে উদ্ধারকারীরা রীতিমত অবাক, কিভাবে সে তিন দিন না খেয়ে বেঁচে রইল।
শিশুটির মা, বাবা ও দিদা মারা গেছেন
ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল এজেন্সি ফর ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (বিএনপিবি) জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা সিয়ানজুর রিজেন্সির কুগেনাং উপ-জেলার নাগারাক গ্রামে আজকা মাওলানা মালিক নামের শিশুটিকে উদ্ধার করেছে। একটি উদ্ধারকারী দল তাকে খুঁজে পাওয়ার মুহূর্তটি ফুটেজে দেখা গেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ছেলেটিকে তার দিদার মৃতদেহের পাশে পাওয়া গেছে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আজকা এখন সিয়ানজুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সংস্থাটি বলেছে যে উদ্ধারকর্মীরা এর আগে তার বাবা-মায়ের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
সবচেয়ে বেশি ধ্বংসযজ্ঞ সিয়ানজুরে
সবচেয়ে বিধ্বংসী ঘটনা ঘটেছে সিয়ানজুর শহরে, যেখানে ভূমিকম্পের সময় বিল্ডিংগুলো তিন মিনিটের জন্য কাঁপতে থাকে। অধিকাংশ মৃত্যুও এখানেই হয়েছে। তবে মৃতের সরকারি পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি। সিয়ানজুর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কারণ সেখানে জনসংখ্যা খুবই ঘন। এখানে ভূমিধস সাধারণ ঘটনা। বাড়িগুলো খুব মজবুত নয়।
এই ভূমিকম্পে ৫৬,৩২০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে এক তৃতীয়াংশেরও বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত বিল্ডিংয়ের মধ্যে রয়েছে ৩১টি স্কুল, ১২৪টি উপাসনালয় এবং তিনটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র। সুহারিয়ন্তো বলেন, সংস্থাটি বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য সুবিধাসহ ১৪টি শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তরা তাদের অস্থায়ী তাঁবু ছেড়ে এই প্রধান আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সুহারিয়ন্তোর মতে, BNPB অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের জন্য ছয় হাজারেরও বেশি উদ্ধারকর্মী মোতায়েন করেছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো।
উল্লেখ্য, সোমবার বিকেলে ইন্দোনেশিয়ার প্রধান দ্বীপ জাভাতে ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে এখনও বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ন্যাশনাল ডিজাস্টার মিটিগেশন এজেন্সির প্রধান সুহারিয়ন্তোকে উদ্ধৃত করে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে "সিয়ানজুর আঞ্চলিক হাসপাতালে আহতদের ভিড়। ধসে পড়া বাড়িগুলির আঘাতে অনেকে আহত হয়েছেন"।
সোমবারের ভূমিকম্পটি রাজধানী জাকার্তার প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে সিয়ানজুরে ভূমিতে আঘাত হানে এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার বা ৬.২ মাইল গভীরতায় ছিল এর উৎস। আবহাওয়া ও ভূ-পদার্থবিদ্যা সংস্থা বিএমকেজি বলেছে, ইন্দোনেশিয়ায় সুনামির কোনো সম্ভাবনা নেই।