অবশেষে শুক্রবার শেষ হলো ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক নেতা অং সান সুকির বিচার। বিচার শেষে মায়ানমারের শীর্ষ আদালতের নির্দেশ যে ৭৭ বছরের এই নোবেলজয়ীকে ৩৩ বছর কারাদণ্ডবাস করতে হবে।
অবশেষে শুক্রবার শেষ হলো ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক নেতা অং সান সুচির বিচার। বিচার শেষে মায়ানমারের শীর্ষ আদালতের নির্দেশ যে ৭৭ বছরের এই নোবেলজয়ীকে ৩৩ বছর কারাদণ্ডবাস করতে হবে। ২০২১ সালে অং সান সুচির অভ্যুথানের পর সামরিক বাহিনীর এক বন্দি কিছু গুরুতর অভিযোগ আনে তার বিরুদ্ধে। আর্থিক দুর্নীতি, ভোটে কারচুপি এমনকী ভোটপ্রচারে করোনাবিধি লঙ্ঘন এইসকল অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সু কি অস্বীকার করলেও পরে তদন্তে সেই সব অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে তাকে ৩৩ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে মায়ানমারের আদালত।
বলে রাখা ভাল, এর আগে ১২টি মামলায় সু কি-কে দোষী শশব্যস্ত করে ২৩ বছরের জেলের সাজা দেওয়া হয়েছিল। পরে বিভিন্ন মামলায় যোগ হয় আরও তিন বছরের সাজা। এদিনের রায়দানের পর সব মিলিয়ে ৩৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত সু কি।
শুক্রবার প্রধানত একটি হেলিকপ্টার ক্রয় ও তার রক্ষনাবেক্ষন সংক্রান্ত দুর্নীতিসহ মত ৫টি অভিযোগ দায়ের হয় তার বিরুদ্ধে। যা 'রাষ্ট্রের ক্ষতি' নামেও অভিহিত করে মায়ানমার কোর্ট।এর আগেও দুর্নীতির মামলায় সাত বছরের জেল হয়েছিল আং সান সু কির।তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার পর ১৮ মাস বিচারাধীন অবস্থায় ছিলেন তিনি।১৮ মাসের বিচারের শেষে মায়ানমারের এক আদালত তাঁকে এই সাজা শুনিয়েছে। নোবেলজয়ী সু কির বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অভিযোগ। সব মিলিয়ে ৩৩ বছরের জেল হল তাঁর।
কিন্তু আদালতে শুনানি চলাকালীন কোর্টরুমে কোনো সাংবাদিককে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি সু কির আইনজীবীকেও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
শুনানির আগে পর্যন্ত মায়ানমার সেনাবাহিনীর তৈরী রাজধানী নেপিডোতে সু কিকে আটকে রাখা হয়েছিল কারাগারে। কারণ হিসেবে জানানো হয়েছিল যে সু কিকে আদালতে আনতে যাতে সুবিধে হয় সেকারণেই ওইখানে রাখা হয়েছিল তাকে। ওই কারাগার থেকে আদালতে আসার রাস্তাটি সবচেয়ে বেশি যানজটমুক্ত থাকে। আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে সু চি খুব শীঘ্রই আপিল করবেন এমটাই সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে মায়ানমারের গণতন্ত্রের সংগ্রামে সু চি একটি উজ্জ্বল নাম। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি মায়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য অবিরাম কাজ করে যাচ্ছিলেন। তার বিরুদ্ধে এই দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে অনেকেই বলছেন যে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক তায়েন বলেন যে সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ একেবারেই হাস্যকর। সুচির নেতৃত্ব, শাসনব্যবস্থা বা জীবনধারার কোনো কিছুতাই দুর্নীতির ক্ষুদ্রতম ইঙ্গিতও নেই।