গবেষণা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে নতুন এই মহাদেশটির ৯৪ শতাংশই জলের নিচে রয়েছে। নিউজিল্যান্ডের মত মাত্র কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে।
নতুন আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের। এবার তা বদলে দিয়েছে বিশ্বের মহাদেশের সংখ্যাও। প্রায় ৩৭৫ বছর পরে ভূ-বিজ্ঞানীরা এমন একটি মহাদেশ আবিষ্কার করেছে যা এতদিন ধরে সাধারণ মানুষের দৃষ্টির আড়ালে ছিল। ভূতাত্ত্বিক এবং সিসমোলজিস্টদের ছোট দল জিল্যান্ডিয়া বা তে রিউ-এ-মাউয়ের একটি নতুন পরিমার্জিত মানচিত্র তৈরি করেছে। তেমনই জানিয়েছে Phys.org। গবেষকরা সমুদ্রের তলা থেকে উদ্ধারকৃত ড্রেজড রক নমুনা থেকে যে তথ্য পেয়েছে তার থেকেই নতুন এই মহাদেশের আবিষ্কার সম্ভবপর হয়েছে। গবেষণার বিস্তারিত রিপোর্ট টেকটোনিক্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। বিবিসির একটি প্রতিবেদন অনুসারে, জিল্যান্ডিয়া ১.৮৯ মিলিয়ন বর্গ মাইল (৪.৯ মিলিয়ন বর্গ কিমি) একটি বিশাল মহাদেশ যা মাদাগাস্কারের প্রায় ছয় গুণ। বিজ্ঞানীদের দল জানিয়েছে যে এটি অষ্টম মহাদেশ। তবে এখানেই শেষ নয়, নতুন এই মহাদেশ একাধিক রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছে। এটি বিশ্বের সবথেকে ছোট, রোগা ও কমবয়সী মহাদেশ।
গবেষণা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে নতুন এই মহাদেশটির ৯৪ শতাংশই জলের নিচে রয়েছে। নিউজিল্যান্ডের মত মাত্র কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে। নিউজিল্যান্ডের ক্রাউন রিসার্চ ইনস্টিটিউট জিএনএস সায়েন্সের একজন ভূতাত্ত্বিক অ্যান্ডি টুলোচ বলেছেন, এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলার সময় আসেনি। তবে এটি একটি উদাহরণ মাত্র।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জিল্যান্ডিয়া বরাবরই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। কিন্তু এটি নিয়ে গবেষণা বা অধ্যায়ন করা বরাবরই কঠিন ছিল। বিজ্ঞানীরা এখনও সমুদ্রের তলদেশ থেকে আনা পাথর ও পলির নমুনা সংগ্রহ করে রিসার্চ করছেন। বেশিরভাগই ড্রিলিং সাইট থেকে এসেছে। কিছু নমুনা এই এলাকার দ্বীপগুলি থেকে আনা হয়েছে। শিলা নমুনাগুলির গবেষণায় পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার ভূতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি দেখানো হয়েছে যা নিউজিল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলে ক্যাম্পবেল মালভূমির কাছে একটি সাবডাকশন জোনের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। গবেষকরা সেই এলাকায় চৌম্বকীয় অসঙ্গতি খুঁজে পাননি, যা ক্যাম্পবেল ফল্টে স্ট্রাইক-স্লিপকে ঘিরে তত্ত্বের বিরুদ্ধে যুক্তি দেয়।
নতুন পরিমার্জিত মানচিত্রটি শুধুমাত্র জিল্যান্ডিয়া মহাদেশের ম্যাগম্যাটিক আর্ক অক্ষের অবস্থানই নয় অন্যান্য প্রধান ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যগুলিও দেখা গেছে। জিল্যান্ডিয়া মূলত গন্ডোয়ানার প্রাচীন মহাদেশের অংশ ছিল, যা প্রায় ৫৫০ মিলিয়ন বছর আগে গঠিত হয়েছিল এবং মূলত দক্ষিণ গোলার্ধের সমস্ত ভূমিকে একত্রিত করেছিল।