বিশ্বের উষ্ণতম বছর ২০২২, রাষ্ট্র সংঘের জলবায়ু রিপোর্টে শুধুই ধ্বংসের আশঙ্কা

Published : Apr 23, 2023, 05:44 PM IST
560 climate disasters

সংক্ষিপ্ত

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিশ্বজু়ড়ে প্রাণঘাতী বন্যা, খরা ও তাপপ্রবাহের কারণে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বেড়ে চলায় তা প্রতিহত করা যায়নি। 

২০২২ সাল ছিল বিশ্বের উষ্ণতম বছরগুলির মধ্যে অন্যতম। এটি ছিল রেকর্ড করা পঞ্চম বা ষষ্ঠ উষ্ণতম বছর, যেখানে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ১.১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গিয়েছিল। গত বছর ছিল লা নিনার বিরল তৃতীয় বছর। ওয়ার্ল্ড আর্থ ডে-এর ঠিক এক দিন আগে শুক্রবার বিশ্ব আবহাওযার সংস্থা বা ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজি অর্গানাইজেশন একটি ৫৫ পাতার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। স্টেট অব গ্লোবার ক্লাইমেট ২০২২ বলছে গত আট বছর বিশ্বব্যাপী রেকর্ডের সবথেকে উষ্ণ আট বছর ছিল।

গত কয়েক মাস ধরেই আবহাওযার তথ্য বিশ্লেষ করে এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিশ্বজু়ড়ে প্রাণঘাতী বন্যা, খরা ও তাপপ্রবাহের কারণে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বেড়ে চলায় তা প্রতিহত করা যায়নি। অ্যান্টার্কটিক সমুদ্রের বরফ ও ইউরোপীয় আল্পস হিমবাহ দ্রুত গলে যাচ্ছে। যা আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে পূর্ব আফ্রিকায় ক্রমাহত খরা, পাকিস্তানের ভয়ঙ্কর বন্যা আর চিন ও ইউরোপের দেশগুলিতে তাপমাত্রার বৃদ্ধি কয়েক কোটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলেছে। আবহাওার জন্য অভিবাসন বেড়েছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। চিনের তাপপ্রবাহ সেই দেশের দীর্ঘতম বলে রেকর্ড করা হয়েছে। চিনের গড় তাপমাত্রাও বেড়েছে ০.০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এই দেশে আগে কখনই হয়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, আফ্রিকার খরা সোমালিা ও ইথিওপিয়াতে ১.৭ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। পাকিস্তানের বিধ্বংসী বন্যা দেশের এক তৃতীয়াংশ এলাকায় ভাসিয়ে দিয়েছে। যার কারণ ৪ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে এমনটাই যদি চলতে থাকে তাহলে প্রাকৃতিক তাণ্ডব আগামী ২০৬০ সাল পর্যন্ত চলতে থাকবে। দুষণের কারণে তাপমাত্রা বাড়বে। তবে রিপোর্টে সতর্ক করে বলা হয়েছে ইতিমধ্যেই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বিশ্বের বড়বড় হিমবাহগুলি গলতে শুরু করেছে। যা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা অত্য়ান্ত খারাপ লক্ষণ বলেও রিপোর্টে সতর্ক করাহয়েছে।

প্রতিবেদনের মূল অনুসন্ধান-

অ্যান্টার্কটিকায় বরফ গত জুন ও জুলাই মাসে অনেকটাই গলে গেছে। মহাসাগরের উষ্ণতা বাড়িয়ে দিয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠে ৫৮ শতাংশ সামুদ্রিক তাপপ্রবারের সম্মুখীন হয়েছিল।

বিজ্ঞানীরা বিশ্বের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হিমবাহগুলিকে ব্যবহার করেন। বিজ্ঞানীদের মতে হিমবাহের মাত্রা গত এক বছর ১.৩ মিটার কমে গিয়েছে। বিশ্বের ইতিহাসে এটাই প্রথমবার এমন হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের হিমবাহ গ্রীষ্ণেই গলে গিয়েছিল। অন্য ঋতুতে এখানে কোনও বরফের দেখা পাওয়া যাযনি।

চরম হিমবাহ গলে যাওয়ায় সমুদ্রের তাপমাত্রা রেকর্ড বাড়তে থাকে। যার কারণ সমুদ্রে জলের চাপ বাড়ছে যা জলের উচ্চতাও বাড়িয়ে দিচ্ছে। ২০১৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সমুদ্রের জলস্তরের উচ্চতা বেড়েছে ৪.৬২ মিলি মিটার।

এভাবেই যদি চলতে থাকে আগামী দিনে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আরও বাড়িয়ে দেবে। যা বন্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

তবে এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে বাঁচার উপায় হল,বিশ্বের তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে হবে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে। তবে বিশ্বের কতগুলি দেশ এই পথ অনুসরণ করেছে। কিন্তু অধিকাংশই এখনও তেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলেও রিপোর্টে বলা হয়েছে।

PREV
click me!

Recommended Stories

জাপানে মাত্র ১০ ফুট গভীরে ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি
মহাকাশে নক্ষত্রে বিরাট বিস্ফোরণ! প্রথম ক্লোজ-আপ ছবি তুললেন বিজ্ঞানীরা, দেখুন