সোমবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ হাতায় আরেকটি ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে বলে জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা জানিয়েছে।
ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বেরোয়নি এখনও তুরস্ক। এখন স্তুপের মধ্যে আটকে রয়েছে শত শত লাশ। শ্মশানপুরীর স্তব্ধতা দেশের আনাচে কানাচে। তারই মাঝে ফের কেঁপে উঠল তুরস্ক। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৪। সোমবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ হাতায় আরেকটি ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে বলে জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা জানিয়েছে। ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (EMSC) জানিয়েছে যে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত অঞ্চলে দুই কিলোমিটার (১.২ মাইল) গভীরতায় ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।
আজ ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পের পরপরই মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং চারিদিকে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। বর্তমানে কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, ১০ই ফেব্রুয়ারি বড়সড় আফটারশক দেখা যায় তুরস্কে। মধ্য তুর্কি অঞ্চলে ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (EMSC) অনুসারে ভূমিকম্পটি ১০ কিলোমিটার বা ৬.২১ মাইল গভীরতায় ছিল। তবে ভূমিকম্পের পর কোনো সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের কারণে মৃতের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়েছে। উদ্ধারকাজ চলছে, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ভূমিকম্পে তুরস্কের প্রায় ২,৬৪,০০০ অ্যাপার্টমেন্ট ধ্বংস হয়ে গেছে। এগুলোতে বসবাসকারী লাখ লাখ মানুষের মধ্যে অনেকেই নিহত বা আহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। লাখ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা পেলেও তাদের সবকিছু শেষ এবং তারা প্রচণ্ড ঠান্ডায় মৌলিক সুবিধা ছাড়া দিন কাটাচ্ছেন।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় দুই মিলিয়নেরও বেশি গৃহহীন মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়ে বসবাস করছে। তুরস্কের ভূমিকম্প কবলিত এলাকায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে এবং এখন ত্রাণসামগ্রী আসছে,তবে সিরিয়ার পরিস্থিতি ভয়াবহ। ভূমিকম্পে সেখানকার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ নেমে এসেছে। এলাকাটি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে দিচ্ছে না।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি উত্তর সিরিয়া এবং দক্ষিণ-পশ্চিম তুরস্কে আঘাত হানে দুটি বড় মাত্রার ভূমিকম্প। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৪২ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। লক্ষ লক্ষ অসহায় মানুষ কনকনে ঠাণ্ডায় গৃহহীন হয়ে পড়ে রয়েছেন। এই কম্পনের পর বিশ্বজুড়ে অনেকগুলি দেশ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করার জন্য কম্বল, খাবার, তাঁবু এবং ওষুধে ভরা ত্রাণ প্যাকেজ পাঠাতে শুরু করেছে।
সিরিয়া এবং তুরস্কের ভূমিকম্পে রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৭.৮। তার পর প্রায় ১০০ বার আফটার শকে কেঁপে উঠেছে তুরস্ক আর সিরিয়া। মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪১ হাজার। সিরিয়ার জাতীয় ভূমিকম্প কেন্দ্রের প্রধান রায়েদ আহমেদ জানিয়েছেন, ইতিহাসে এর থেকে তীব্র ভূমিকম্প হয়নি তাদের দেশে। অন্তত যবে থেকে ভূমিকম্পের মাত্রা নথিভুক্ত করা হচ্ছে,তার পর থেকে এত তীব্র ভূকম্প সে দেশ দেখেনি।