বিশ্বের অনেক হ্রদই সংকটে রয়েছে। প্রফেসর রাজাগোপালন তার রিপোর্টে বলেছেন যে চমকপ্রদ বিষয় হল বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ২৫ শতাংশ হ্রদের অববাহিকায় বসবাস করছে এবং যা ক্রমাগত শুকিয়ে যাচ্ছে।
ক্রমেই গোটা বিশ্ব জল সংকটের দিকে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে বহুবার প্রকাশ পেয়েছে। একই সময়ে, আরেকটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে বিশ্বের বৃহত্তম হ্রদ এবং জলাশয়গুলির জলস্তর দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে এবং তা শুকিয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে। একইসঙ্গে মনে করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে মানুষকে জল সঙ্কটের মহা ট্র্যাজেডির মুখোমুখি হতে হবে।
সংবাদ সংস্থা এএফপি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই গবেষণাটি করেছেন কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক এবং গবেষণাপত্রটির সহ-লেখক। এতে তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক হ্রদই সংকটে রয়েছে। প্রফেসর রাজাগোপালন তার রিপোর্টে বলেছেন যে চমকপ্রদ বিষয় হল বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ২৫ শতাংশ হ্রদের অববাহিকায় বসবাস করছে এবং যা ক্রমাগত শুকিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এটা ঘটলে প্রায় দুই বিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নদীগুলোর অবনতির দিকে নজর রাখা
অধ্যাপক বলেন, সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা নদীগুলোর অবনতির দিকে নজর রাখছেন। তা সত্ত্বেও এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরাল সাগর ও কাস্পিয়ান সাগরের মতো বড় হ্রদের বিপর্যয় এই সংকটের ইঙ্গিত দিয়েছে।
৩০ বছরে জলের পরিমাণের পার্থক্য কত?
প্রকৃতপক্ষে, যে দলটি এটি নিয়ে রিসার্চ করেছিল তাতে আমেরিকা, সৌদি আরব এবং ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা অন্তর্ভুক্ত ছিল। তথ্য অনুযায়ী, দলটি ১৯৯২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত স্যাটেলাইট ইমেজের সাহায্যে ১৯৭২টি বৃহত্তম হ্রদ এবং জলাধার পরীক্ষা করেছে। এ সময় ৩০ বছরে এসব হ্রদে জলের পরিমাণে কী পরিমাণ পার্থক্য এসেছে তা জানার চেষ্টা করা হয়। একইসঙ্গে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৫৩ শতাংশ হ্রদ ও জলাশয়ের জল বার্ষিক প্রায় ২২ গিগাটন হারে কমেছে।
ভারী বৃষ্টির পরেও জলের অভাব
এর মধ্যে বড় কথা হলো শুষ্ক অঞ্চলে জলের স্তর কমেছে, যেখানে বেশি বৃষ্টি হয়েছে সেসব এলাকার জলাশয়েও জলের ঘাটতি ছিল। এই পুরো গবেষণার সময়, ৬০৩ কিউবিক কিলোমিটার (১৪৫ ঘন মাইল) জল অদৃশ্য হয়ে গেছে। দয়া করে বলুন যে এই পরিমাণ আমেরিকার লেক মিডের জলের চেয়ে ১৭ গুণ বেশি।
জলের স্তর কমার প্রধান কারণ
অন্যদিকে, আমরা যদি জলের স্তর হ্রাসের কারণ সম্পর্কে কথা বলি, তবে গবেষণায় দেখা গেছে যে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর অন্যতম কারণ, এর পাশাপাশি মানুষের মধ্যে ক্রমবর্ধমান জলের ব্যবহারও এর জন্য দায়ী। জলের অভাবের অন্যতম কারণ তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জল বাষ্পীভূত হয়। এছাড়া কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাতও কমেছে।