শরীরের সব নষ্টের গোড়া সেই ধূমপান। তবে সেকথা শুনেও শোনেন না ধূমপায়ীরা। বিশ্ব ধূমপান বিরোধী দিবসে নতুন করে কড়া সতর্কতা জারি করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। হু জানিয়েছে ধূমপান করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। যাঁরা ধূমপান করেন তাঁদের মধ্যে শুধু করোনা নয়, নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এমনই মন্তব্য করেছেন হু-র ডিরেক্টর জেনারেল টেডরোস অ্যাডানম ঘিব্রিয়েসাস।
টেডরোস জানিয়েছেন হৃদযন্ত্রের সমস্যা, ক্যান্সার ও শ্বাসযন্ত্রের জটিল রোগ তৈরি হতে পারে ধূমপানের মাধ্যমে। এরই সঙ্গে তৈরি হয় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের আবেদন ধূমপান ছেড়ে দিন। তবেই সুস্থ হওয়ার দিকে পা বাড়ানো যাবে। শুধু নিজেরা নন, অন্যদেরও ধূমপান ত্যাগ করার জন্য উৎসাহিত করতে আবেদন করেছেন টেডরোস।
টেডরোস ধূমপান বিরোধী পদক্ষেপে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছেন ভারতের নাম। তিনি বলেন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে ভারত। এই বিষয়ে নাম উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের।
উল্লেখ্য জানুয়ারি মাসেই কেন্দ্র জানিয়েছিল সদ্য গোঁফের রেখা ওঠা ঠোঁটের নিচে দেখা যাবে না সিগারেট। লালচে হৃদয়ে ঘা হোক কিংবা ইমপ্রেস করার ইচ্ছে হোক, কচিকাঁচাদের মুখ থেকে ধোঁয়া উড়তে আর দেখা যাবে না। কারণ সিগারেট সহ যে কোনও তামাকজাত সামগ্রী কেনার ন্যূনতম বয়স বাড়ানোর পথে হাঁটতে চাইছে কেন্দ্র। এই আইন কার্যকর হলে দেশে সিগারেটের বিক্রির নিয়মে বদল আসবে। খসড়া বিলের ৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে,ভবিষ্যতে সিলড প্যাকেট হিসেবেই বিক্রি করতে হবে। খুচরো বিক্রি করলে অপরাধ বলে ধরে নেওয়া হবে। এই অপরাধে গুরুতর শাস্তির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
কেন্দ্র জানিয়েছিল যদি কেউ খুচরো সিগারেট প্যাকেট বিক্রি করে, প্রথমবারের অপরাধে দুই বছরের জেল অথবা ১ লক্ষ টাকা জারিমানা করা হবে। এই অপরাধ দ্বিতীয়বার করে ধরা পড়লে গুনতে হবে ৫ লক্ষ টাকা , দিতে না পারলে ৫ বছরের জেল। অপরদিকে, বিলে আরও উল্লেখ করা হয়েছে ধূমপান নিষিদ্ধ এমন এলাকায় তামাকজাত নেশার দ্রব্য সেবন করলে ২০০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে ৩৯ শতাংশ পুরুষ ও ৯ শতাংশ মহিলা ধূমপান করেন । ইউরোপে ধূমপানের প্রবণতা সর্বাধিক, প্রায় ২৬ শতাংশ। ধূমপান রোধ করা না গেলে হৃদযন্ত্রের সমস্যা, ক্যান্সার ও শ্বাসযন্ত্রের জটিল রোগ সমস্যা আরও ২ শতাংশ বাড়তে পারে ২০২৫ সালের মধ্যে।