World Refugee Day: বিশ্ব জুড়ে সংকটে উদ্বাস্তুরা, ভারত কি ছবিটা বদলাতে পারবে

  • বিশ্ব উদ্বাস্তু দিবস
  • সারা পৃথিবী জুড়েই সংকটে উদ্বাস্তুরা
  • সারা বিশ্বে ৮২.৪ মিলিয়ন মানুষ বলপূর্বক উদ্বাস্তু
  • রাষ্ট্রের অন্তর্দ্বন্দ্বে ৪৮.০ মিলিয়ন মানুষ গৃহত্যাগী হয়েছে

Parna Sengupta | Published : Jun 20, 2021 5:36 AM IST

World Refugee Day বা বিশ্ব উদ্বাস্তু দিবস। সংকট ক্রমশ বাড়ছে উদ্বাস্তুদের। রাষ্ট্রসংঘের সমীক্ষা রিপোর্ট উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। গোটা পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ গৃহত্যাগী। কখনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে, কখনও অর্থিনেতিক পরিস্থিতির দুর্বিপাকে, কখনও দুই রাষ্ট্রের সশস্ত্র সংঘর্ষে মাথার ছাদ আর পায়ের তলার মাটি হারিয়েছেন উদ্বাস্তুরা। কোথাও কাজ করেছে ধর্মের ভুলভুলাইয়াও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে অন্তত ৩০ মিলিয়ন শিশু রয়েছে উদ্বাস্তু তালিকায়। আর প্রতিদিনই সেই সংযোজনের দৈর্ঘ্য বাড়ছে।  

রাষ্ট্রসংঘের রিফিউজি এজেন্সি UNHCR জানাচ্ছে, সারা বিশ্বে ৮২.৪ মিলিয়ন মানুষ বলপূর্বক উদ্বাস্তু হতে বাধ্য হয়েছে। ২০২০ সালের শেষে ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টার বা IDMC-এর তথ্য জানাচ্ছে, ৪৮.০ মিলিয়ন মানুষ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের ফলে গৃহত্যাগী হয়েছে। ভিটেমাটি ছেড়ে যাত্রা করতে হয়েছে অনিশ্চিতের উদ্দেশে। 

আয়লান কুর্দি, ৩ বছরের সেই শিশুর মর্মান্তিক পরিণতির কথা ভুলে যায়নি সভ্যতা। ২০১৫ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে প্রাণ বাঁচাতে পরিবারের সঙ্গে সে পাড়ি দিয়েছিল ইউরোপের দিকে। তুরস্কের উপকূলে পাওয়া গিয়েছিল সেই শিশুর নিথর দেহ। সেদিন কেঁদেছিল গোটা বিশ্ব। রোহিঙ্গা পরিস্থিতিও বা ভুলি কী করে। মায়ানমারের রাখাইন জেলা থেকে রোহিঙ্গাদের উৎখাত হতে বাধ্য করা হয়েছিল। মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ সেদিন বাংলাদেশের কাঁটাতার পেরিয়ে একটু ছাদ খুঁজেছিলেন, সেই খোঁজার শেষ হয়নি আজও। 

UNHCR-এর পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালে যত উদ্বাস্তু হয়েছেন, তার দুই তৃতীয়াংশ এসেছেন মাত্র পাঁচটি দেশ থেকে। সিরিয়া (৬.৭ মিলিয়ন), ভেনেজুয়েলা (৪ মিলিয়ন), আফগানিস্তান (২.৬ মিলিয়ন), দক্ষিণ সুদান (২.২ মিলিয়ন), মায়ানমার (১.১ মিলিয়ন)। 

ভারতের ছবি আদৌ কি উজ্জ্বল

পুব থেকে পশ্চিম, ভারতের উদ্বাস্তু সমস্যা বারবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দিন কয়েক আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ঘোষণা করেছে, অ-মুসলিম শরণার্থী বা উদ্বাস্তুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেবে কেন্দ্র। তেমনই পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এর মধ্যে রয়েছে হিন্দু, জৈন, বৌদ্ধ, শিখ, পারসি ও খ্রীস্টান শরণার্থীরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে আসা শরণার্থীরা এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

এই তিনটি দেশ ছাড়াও গুজরাট, ছত্তিশগড়, পঞ্জাব ও হরিয়ানার ১৩টি জেলায় বসবাসকারী অ-মুসলিম শরণার্থীরা আবেদন করতে পারবেন ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য। নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫ ও ২০০৯ সালে তৈরি করা আইন মোতাবেক এই শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। খুব দ্রুত এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে। তবে এই নির্দেশ ২০১৯ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সঙ্গে কোনও ভাবেই সম্পর্কিত নয় বলে জানিয়েছে মন্ত্রক। 

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এখনও কার্যকর করা হয়নি বলেই এই সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের। ২০১৯ সালে যখন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রণয়ন করা হয়, তখন দেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এমনকী দিল্লিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। ২০২০ সালের প্রথম দিকেও তার রেশ ছিল। ওই আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অমুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। জানানো হয় ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত যে সব অ মুসলিম শরণার্থী ভারতে এসেছেন ওই তিন দেশ থেকে, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। 

Share this article
click me!