কালীর আরাধনায় চিনা পুরোহিত, প্রসাদে দেওয়া হয় নুডুলস, চপস্যুই...

  • শক্তির আরাধনা কেবলমাত্র এই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়
  • পাকিস্তানেও যুগ যুগ ধরে পূজিত হচ্ছেন মা কালী
  • কলকাতার বুকে শক্তির দেবী মিলিয়ে দিয়েছেন ভারত ও চিনকে
  • অজানা রহস্যে মোড়া কলকাতার এই চিনা কালী মন্দির

Indrani Mukherjee | Published : Aug 1, 2019 10:43 AM IST / Updated: Aug 01 2019, 04:18 PM IST

শক্তির আরাধনা কেবলমাত্র এই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। অনেকেই হয়তো জানেন না যে পাকিস্তান বা বালুচিস্তানের জন্মের আগে থেকেই পাকিস্তানের খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চলে পূজিত হয়ে আসছেন কালাট কালী দেবী। সেই মন্দিরের যাবতীয় কাজকর্ম, আচার অনুষ্ঠান সবই পালন করে আসছেন সেখানকার মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। 

কালাটকালী মাতা ছাড়াও খাস কলকাতার বুকে এমন নিদর্শন রয়েছে যেখানে ধর্ম ও ভৌগোলিক সীমানার বেড়েজাল পেরিয়ে শক্তির আরাধনায় এক হয়েছে দুই দেশ। খাস কলকাতার বুকেই মা কালীর নিত্যপুজো করেন এক চিনা পুরোহিত। আর সেই মন্দির পরিচিত চিনা কালী মন্দির নামেই। খাস কলকাতার ট্যাংড়ায় চায়না টাউনের কাছে চিনা কালীমন্দিরে মা কালীর নিত্য সেবা করে থাকেন খ্রীষ্টান এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী চিনারা। 

Latest Videos

এই মন্দির নিয়ে কথিত রয়েছে যে,বহু বছর আগে এক বৌদ্ধ চিনা দম্পতির সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। চিকিৎসকরাও কোনওভাবেই কোনও নিরাময়ের পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। সেই সময়ে এলাকার একটি গাছের নীচে থাকা দুটি পাথরের সামনে হত্যে দিয়ে পড়েছিলেন। তারপর একটু একটু করে সুস্থ হয়ে উঠতে থাকে তাঁদের সন্তান। আর তারপর থেকেই শক্তির আরাধনায় বিশেষ বিশ্বাস জন্মায় তাঁদের। সেই ভক্তি ও বিশ্বাসের ওপর ভর করে চিনা পাড়ায় চিনা কালী মন্দির প্রতিষ্টিত হয়। মন্দিরটির বয়স আনুমানিক ৬৫ বছর।

সেখান থেকে শুরু হয়ে আজও প্রতিদিন চিনা পুরোহিতের হাতে নিত্য সেবা পান দেবী কালী। সেইসঙ্গে রয়েছে মহাদেবের মূর্তিও। জানা যায়, সেই পাথর দুটিও স্থান পেয়েছে সেই মন্দিরে। বর্তমানে মন্দিরের প্রধান সেবক চ্যাং ইয়ি শেং নিজেই দেব-দেবী নিত্য পুজোর আয়োজন করে থাকেন। দেবীর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে নিজের ধর্মও পরিবর্তন করেছেন বৃদ্ধ চ্যাং। বৌদ্ধ থেকে হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন তিনি।  নিয়ম মেনে সন্ধ্যারতি, প্রসাদ নিবেদন সবটাই একাই সামলান তিনি। তবে কালী পুজো ছাড়াও বিশেষ বিশেষ তিথিতে দেবীর পুজোর জন্য আসেন হিন্দু পুরোহিতরাও। সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় হল প্রতিদিন প্রায় অগণিত বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টার ধর্মাবলম্বীরা এখানে এসে মা'কে আরতি করেন। তাঁদের আরতির কায়দাটা কিন্তু চিনা মতেই। হিন্দুরা যেভাবে বিগ্রহের সামনে হাত ঘুরিয়ে আরতি করেন, সেখানে চিনারা আরতি করে ওপর থেকে নিচের দিকে। 

সবথেকে আকর্ষণীয় যে বিষয়টি, তা হল ই মন্দিরের প্রসাদ। প্রসাদ হিসাবে প্রদান করা হয় সুস্বাদু নুডুলস এবং চপস্যুই। পাশাপাশি মিষ্টি ও ফল প্রসাদও নিবেদন করা হয়ে থাকে দেবীকে। মন্দিরে আগত সকল দর্শনার্থীদের সেই প্রসাদ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে তা সম্পুর্ণ নিরামিষ। মন্দিরে আমিষ খাবার সম্পূর্ণরূপেই নিষিদ্ধ, তবে বিশেষ উৎসব অনুষ্ঠানে কারণ-বারি নিবেদন করে দেবীর আরাধনা করা হয়ে থাকে। তবে ট্যাংরার এই চিনা কালীই কিন্তু প্রমাণ করে দিলেন বিশ্বাসে মিলায় বস্তু.... কারণ শক্তির দেবীর প্রতি টান থেকেই ধর্মের বেড়াজাল ছিন্ন করে চিনা বৌদ্ধরা মাথা ঠেকান দেবী কালীর চরণে।  

Share this article
click me!

Latest Videos

তিহার জেল থেকে বেরলেন অনুব্রত মণ্ডল | Anubrata Mandal #shorts #anubratamandal #tiharjail
'মমতার পাঠশালার ভালো ছাত্র...' ঝাড়খণ্ডে মঞ্চ কাঁপালেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | Jharkhand
পুজোর আগেই হানা খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের! বিপদের মুখে বহু রেস্তোরাঁ ও স্ট্রীট ফুডের দোকান! | WB News
'রবিবার শ্যুটিং ছিল না তাই ছবি তুলতে এসেছিল' ঘাটালে গিয়ে দেবকে এক হাত নিলেন Suvendu Adhikari
নো এন্ট্রি! ভিতরে হাউ হাউ করে কাঁদছেন অনুব্রত! 'তাড়িয়ে' দেওয়া হল এই ২ TMC নেতাকে | Anubrata Mondal