বনধের প্রভাব পড়বে না বলেই দাবি করেছিল সরকার এবং প্রশাসন। কিন্তু সকাল থেকেই রাস্তায় বেরিয়ে বাম এবং কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের ডাকা ভারত বনধের ভালই প্রভাব টের পেয়েছেন সাধারণ মানুষ। রাস্তায় প্রচুর পরিমাণে পুলিশ থাকলেও বেসরকারি যানবাহন প্রায় নেই বললেই চলে। কলকাতায় যান চলাচল মোটের উপর স্বাভাবিক থাকলেও সংলগ্ন জেলাগুলিতে বনধের প্রভাব তুলনামূলক ভাবে বেশি পড়েছে। সরকারি বাস থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ফলে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বেরিয়েও অনেকে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দমদম মেট্রো স্টেশনেও কিছুক্ষণের জন্য জোর করে টিকিট কাউন্টার বন্ধ করে দেন বনধ সমর্থকরা। শিয়ালদহ এবং হাওড়া স্টেশনেও ট্যাক্সির সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। অ্যাপ ক্যাবের চাহিদা বাড়ায় ভাড়াও দ্বিগুন থেকে তিনগুন বেশি দিতে হচ্ছে। যদিও অ্যাপ ক্যাব পেতেও অনেকটা সময় লাগছে। কোথাও কোথাও তা পাওয়ায়ও যাচ্ছে না।
সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয়, সরকার এবং শাসক দলের পক্ষ থেকে জনজীবন স্বাভাবিক রাখার আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে দেখা গিয়েছে উল্টো ছবি। শাসক দল প্রভাবিত কর্মী সংগঠনের প্রভাব রয়েছে যে বেসরকারি বাস রুটগুলিতে, সেই সমস্ত রুটের বাসও বন্ধ রাখা হয়েছে। তা পথে নামানোর জন্য শাসক দল বা পুলিশকেও সক্রিয় হতে দেখা যায়নি।
রেল বা সড়কপথে সমস্যা হলেও কলকাতা বিমানবন্দরে ধর্মঘটের কোনও প্রভাব সেভাবে পড়েনি। বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপত্তার ব্যবস্থার পাশাপাশি অতিরিক্ত সরকারি বাস বরাদ্দ করা হয়েছে। যদিও ট্যাক্সির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। সেক্টর ফাইভেও অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিড় ছিল অনেকটাই কম। সরকারি বাসের দেখা মিললেও বেসরকারি বাস, অটো রাস্তায় প্রায় নেই বললেই চলে।
সকাল থেকেই উত্তর এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার একাধিক স্টেশনে রেল অবরোধ হয়েছে। ফলে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। ট্রেন বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে অনেকেই সড়কপথে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু রাস্তায় বেসরকারি বাসও প্রায় অমিল থাকায় চরম সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার রাজ্য পরিবহণ দাবি করেছিল, বনধের দিন বেসরকারি যানবাহন স্বাভাবিকই থাকবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, সেই দাবি মিলল না। সরকারের আশ্বাস ছিল, বেসরকারি যানবাহন রাস্তায় নামলে ক্ষতির মুখে পড়লে সরকার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবে। সেই আশ্বাসেও অবশ্য কাজ হয়নি।