কলকাতা শহরের বুকে ক্লাব, গমগম করছে সারাক্ষণ। ঢুকছেন বোরোচ্ছেন হাজার হেভিওয়েট। অথচ প্রবেশাধিকার ছিল না মহিলাদেরই। এই সেদিন পর্যন্ত।
হ্যাঁ, এ কথা সত্যি। ব্রিটিশ আমলে, ১৯০৭ সালে মধ্য কলকাতায় স্থাপিত ‘‘ক্যালক্যাটা ক্লাব’’-এর একটি অদ্ভুত নিয়ম ছিল। এই ক্লাবে মহিলাদের প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। অবাক হতে হয় জানলে যে, ২০০৭ সাল পর্যন্ত এই নিয়ম বহাল ছিল। তার পরে অবশ্য ক্লাব কর্তৃপক্ষ নিয়ম বদলে ফেলে। কিন্তু এই প্রাগৈতিহাসিক নিয়ম বদলাতে শতাব্দী পার হয়ে গেল কেন? কলকাতা থেকে প্রকাশিত এক বিখ্যাত দৈনিকে ২০০৫ সালে ক্লাবের তৎকালীন চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার তথা সাধারণ সম্পাদক এস এন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘আমরা প্রথা মেনে আসছি। যে সময়ে ক্লাবটি স্থাপিত হয়েছিল, সেই সময়ে সমাজের খুব কম মহিলাই ক্লাবে আসার কথা ভাবতে পারতেন। সেইম তোই ক্লাবের সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল। তবে আজ আর তাকে সমর্থন করা যায় না।’’
প্রসঙ্গত মহিলাদের ক্লাবে ঢুকতে দিতে হবে এই মর্মে আওয়াজ উঠছিলই। মহিলারা নিমন্ত্রণ পেয়ে ক্লাবে আসতে পারতেন কিন্তু ভোট দিতে পারতেন না।
২০০৭ সালে অবস্থা পাল্টায়। সিদ্ধান্ত হয়, ক্লাবের সদস্য এবং প্রাক্তন সদস্যদের স্ত্রী, কন্যাদেরও সদস্যপদ দেওয়া হবে। এই পরিবর্তনের নেপথ্য সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন আইএএস অফিসার কল্যাণ চৌধুরী। পূর্ত দফতরের তৎকালীন সচিব ক্যালক্যাটা ক্লাবের এই বিভাজন নিয়ে সরব হন। ২০০৭ সালে ক্লাবের শততম প্রতিষ্ঠা দিবসে অবশেষে দরজা খুলে দেওয়া হয় মহিলাদের জন্য।