বধূর গয়না কোথায়? বারবার জানতে চেয়েও উল্টোডাঙা থানার তদন্তকারী অফিসারের(আইও) কাছ থেকে কোনও উত্তর মেলেনি। বলা যায় এই মামলার তদন্তকারী অফিসার হাইকোর্টের নির্দেশকে কোনো তোয়াক্কাই যেন করেননি৷ থানার আইও'র আচরণে বেজায় চটে গিয়ে বৃহস্পতিবার কোর্ট প্রথমার্ধে নির্দেশ দেয়, কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে এই জন্য কোর্টে হাজির হতে হবে। পরে যদিও পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) অনুরোধে আদালত তা প্রত্যাহার করে নেয়৷
বধূ নির্যাতনের অভিযোগ এনে চলতি বছরের ২৩ জুলাই উল্টোডাঙ্গা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অপর্ণা জানা নামে এক গৃহবধূ। গ্রেফতারি এড়াতে বধূর স্বামী সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে মামলা করেন। তাদের আইনজীবী প্রসুন দত্ত জানান , ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা তন্ময় জানা ভালোবেসে বিয়ে করেন উল্টোডাঙার এক যুবতীকে। বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়িতে সঙ্গে কিছুই আনেননি তিনি। অথচ নিজের গয়না ফেরতের দাবি করছেন গৃহবধূ। যদি গয়নাই থেকে থাকে তবে তদন্তকারী অফিসারকে বাড়িতে এসে স্ত্রীয়ের গয়না নিয়ে যাওয়ার অনুরোধও করেন মহিলার স্বামী। কিন্তু তিনি আসেননি। এদিকে কোর্ট এই মামলার কি অগ্রগতি হয়েছে, রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। আদৌ কোনো গয়না রয়েছে কিনা তাও জানতে চাওয়া হয়। আদালত দু'বার চাওয়ার পরও আইও রিপোর্ট জমা দেননি। ক্ষুব্ধ হয়ে হাইকোর্ট এদিন কলকাতার পুলিশ কমিশনারকেই তলব করে বসে। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চ আগামী বৃহস্পতিবার হাজিরার নির্দেশও দিয়েছিল পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে।
এদিকে দুপুর দুটোয় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে উল্টোডাঙা থানার তদন্তকারী অফিসার বেজায় চাপে পড়ে গিয়ে দ্রুত হাজির হয়ে নিজের হাতেই রিপোর্ট লিখে তা জমা দেন কোর্টে। পাবলিক প্রসিকিউটর শাশ্বত গোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, ভুলবশত তদন্তকারী অফিসার রিপোর্ট জমা দিতে পারেননি। হাইকোর্ট যাতে পুলিশ কমিশনারের সশরীরে হাজিরার নির্দেশটি বাতিল করে। শেষমেষ তদন্তকারী অফিসারের ভুল স্বীকারোক্তিতে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের হাজিরার নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয় ডিভিশন বেঞ্চ। তবে মামলার আইও'কে আগামী সপ্তাহে রিপোর্ট পেশ করতে বলেছে কোর্ট।