সোমবার রাজীব কুমারকে জেরা, বাড়িতে ঢুকে নোটিস সিবিআই-এর

  • রাজীব কুমারকে সোমবার জেরা করবে সিবিআই 
  • রাজীব কুমারকে সোমবার সকালে সিবিআই দফতরে যেতে হবে
  • রবিবার সন্ধ্যায় রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই-এর ৮ জনের দল 
  • রাজীব কুমারের নামে জিজ্ঞাসাবাদের নোটিস ধরানো হয় 

নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু, সরকারিভাবে তাঁর সেই দায়িত্ব গ্রহণের আগেই 'অপারেশন রাজীব কুমার'-গতি বাড়িয়ে দিল সিবিআই। যার জেরে সোমবার রাজীব কুমার-কে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে হবে সিবিআই দফতরে। সকাল ১০ নাগাদ এই হাজিরার সময় নির্ধারণ করে নোটিসও জারি করে দিয়েছে সিবিআই। ফলে, সিআইডি-র এডিজি-কে দফতরে হাজিরা দিতেই হবে। তবে, রাজীব কুমার আদৌ সোমবার সকালে সিবিআই দফতরে যাচ্ছেন কি না তা জানা যায়নি। 

সারদা চিটফান্ডকাণ্ডে দীর্ঘদিন ধরেই রাজীব কুমারকে জেরা করতে চেয়েছিল সিবিআই। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কয়েক মাস আগে শিলঙে তাঁকে জেরা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কর্মরত এই আইপিএস-এর বিরুদ্ধে সিবিআই সরাসরি তথ্য-প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ এনেছে। রাজীব কুমার অবশ্য বারবারই সিবিআই-এর নাগাালের বাইরে নিজেকে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। শীর্ষ আদালতও রাজীব কুমারকে গ্রেফতার না করার জন্য নির্দেশ জারি করে রেখেছিল। সপ্তাহখানেক আগেই শীর্ষ আদালত সেই রক্ষা কবচ তুলে নেয়। ফলে রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করার জন্য সিবিআই-এর সামনে এবার কোনও বাধা নেই। মনে করা হচ্ছে রাজীব কুমারকে জেরা করা সারদা চিটফান্ডকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের হদিশ মেলার সম্ভাবনা আছে। ইতিমধ্যেই রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে শনিবার রাতে লুকআউট নোটিস জারি করেছে সিবিআই। এরপর থেকেই একটা খবর ঘুরপাক খাচ্ছিল রাজীব কুমারের গ্রেফতারি এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। 

Latest Videos

এই গ্রেফতারির আশঙ্কাকে সত্যি করে যেন রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় লাউডাউন স্ট্রিটে রাজীব কুমারের বাড়িতে হাজির হয়েছিল সিবিআই। ৮ জনের সিবিআই দলটি রাজীব কুমারের সরকারি আবাসনে ঢোকার চেষ্টা করতেই কলকাতা পুলিশের কর্মীরা বাধা দেন বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যে, রাজীব কুমারের বাড়ির সামনে হাজির হয়ে যান পুলিশের উচ্চ-পদস্থ কর্তারা। আনানো হয় কয়েক গাড়ি পুলিশ বাহিনী। শেষমেশ অনেক আলোচনার পর সিবিআই-এর ৪ জন কর্মীকে বাড়ির ভিতরে ঢোকানো হয়। তারা রাজীব কুমার ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। তবে সে সময় বাড়িতে হাজির থাকাদের আদালতের আইনি নোটিস দেখান সিবিআই অফিসাররা। রাজীব কুমার যাতে সোমবার সিবিআই দফতরে হাজিরা দেন সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। 

এরপরই সিবিআই-এর দলটি রাজীব কুমারের বাড়ি থেকে বেরিয়ে রওনা দেয় ভবানী ভবনে সিআইডি দফতরে। কারণ, এদিকে সিবিআই যখন রাজীব কুমারের বাড়িতে হাজির হয় ঠিক তখনই এই আইপিএস-কে সিআইডি-র এডিজি পদে ফেরানোর কথা জানিয়ে দেয় রাজ্য সরকার । কারণ, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সিআইডি এডিজি পদ থেকে অপসারিত হয়েছিলেন রাজীব। লোকসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া মিটতেই তাই রাজ্য সরকারকে রাজীবকে তাঁর পদে ফিরিয়ে নেয়। তাই, লাউডাউন স্ট্রিটে রাজীব কুমারের বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভবানী ভবনে হাজির হয়েছিলেন সিবিআই অফিসাররা। সেখানেও রাজীব কুমারের দেখা না পেয়ে তাঁর  দফতরের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা এবং জানিয়ে দেওয়া হয় রাজীব কুমারকে সোমবার জেরা করার সময়সীমাটাও। 

এদিন সিবিআই-এর এই অভিযান নিয়ে একটা আশঙ্কা চাউড় হয়েছিল কলকাতা পুলিশ মহলে। মনে করা হচ্ছিল হয়তো রবিবারই রাজীবকে গ্রেফতার করে নিতে এসেছে সিবিআই। তবে, তেমন কিছু ঘটেনি। জানা গিয়েছে, সিবিআই যে নোটিস নিয়ে এসেছিল তাতে সুপ্রিম কোর্টের কথা উল্লেখ ছিল। এই নোটিসে গ্রেফতারি নিয়ে কোনও কথা বলা ছিল না। শুধু বলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই তাঁকে সিবিআই ফের জেরা করতে চাইছে। 

সোমবার রাজীব কুমার আদৌ সিবিআই দফতরে যান কি না তার দিকে তাকিয়ে এখন সকলে। তবে, রাজীব জেরায় হাজির না হলে তাঁর সঙ্কট যে আরও বাড়বে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। যদিও. যে কোনও মুহূর্তে তাঁর গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। রাজীবের কাছে এই মুহূর্তে কোনও রক্ষাকবচও নেই। আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করলেও তা প্রক্রিয়াগত ভুলভ্রান্তির জেরে বাতিল হয়ে গিয়েছে। সোমবার বারাসত আদালতে তাঁর ফের আগাম জামিনের আবেদন করার কথা। 

মাস দুয়েক আগে এমনই রবিবার সন্ধ্যায় রাজীব কুমারের বাড়িতে হাজির হয়েছিল সিবিআই। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি করতে চেয়েছিল তারা। সেই নিয়ে চূড়ান্ত নাটক হয়। মমতা বন্দ্যোপাাধ্যাায় সিবিআই-কে হুঁশিয়ারি দিয়ে মেট্রো চ্যানেলে রাত থেকে অনশন আন্দোলনে বসে পড়েন। দুই দিন ধরে সেই অনশন আন্দোলন চালানোর পর তা প্রত্যাহার করেন মমতা। রাজীব কুমারকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগও এনেছিলেন মমতা। 

সতেরতম লোকসভা নির্বাচন শেষে হতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একটু চুপচাপ আছেন। যেভাবে বিজেপি এই রাজ্যে ১৮টি আসন পেয়েছে তাতে তৃণমূল কংগ্রেস কার্যত চিন্তায় পড়ে গিয়েছে। ফলে, রাজীব তাঁর নতুন সঙ্কটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে কতটা সাহায্য পাবেন তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। 

Share this article
click me!

Latest Videos

‘Chinmoy Krishna-কে আমি মুক্ত করবোই’ নির্ভীক Bangladeshi আইনজীবী Rabindra Ghosh-এর চরম প্রতিশ্রুতি
Kolaghat-এ Mamata Banerjee-কে তীব্র আক্রমণ Suvendu Adhikari-র! দেখুন কী বললেন শুভেন্দু
নয়া মোড় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়! পার্থ-অর্পিতাদের বিরুদ্ধে শুরু হলো চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া!
Rashifal : আজ আপনার ভাগ্য কি বলছে? দেখুন শুক্রবারের রাশিফল | Astro | Friday | Horoscope
প্রয়াত Manmohan Singh-এর স্মৃতিচারণায় Narendra Modi, দেখুন কী বললেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী