সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কাজের সমালোচনা করেছিলেন। খোলা চিঠি লিখেছিলেন খোদ মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে। সেকারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয় বলে অভিযোগ। এবার পুলিশের অতি সক্রিয়তা ও তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর খারিজ করার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন কাউন্সিলর সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী সোমবার মামলাটি শুনবেন হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য।
প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় পেশায় সাংবাদিক। দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন রাজ্যের একটি প্রথমসারির খবরের কাগজে। কংগ্রেসের টিকিটে কাউন্সিলরও নির্বাচিত হয়েছিলেন সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। গত মাসের শেষের দিকে উত্তর ২৪ পরগণার সোদপুরে তাঁর এক পরিচিতের হঠাৎ হানা দেয় ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ। রাতের অন্ধকারে পরিচিতের বাড়ি থেকে ওই কংগ্রেস নেতাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় পুরুলিয়ায়। কিন্তু সরকারিভাবে সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের কথা পুলিশ জানায়নি বলে অভিযোগ। ফলে গ্রেফতার করে তাঁকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে? তা নিয়ে প্রথমে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। শেষপর্যন্ত অবশ্য ধৃত কংগ্রেসকে নেতাকে পুরুলিয়া আদালতে পেশ করে পুলিশ। শর্তসাপেক্ষে জামিনও পেয়ে যান সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়।
গ্রেফতার হওয়ার কয়েক দিন আগে ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোলা চিঠি লিখেছিলেন কংগ্রেস নেতা সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ করেছিলেন, সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় রাতে বাড়িতে এসে তাঁর বৃদ্ধ দাদাকে শাসিয়ে গিয়েছে দুই গাড়ি পুলিশ। এমনকী, পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করার অভিযোগও করেন। এরপরই সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে। একযোগে খড়দহ থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। রাজ্যপালের কাছেও অভিযোগ জানান প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর পুলিশের বিরুদ্ধে সন্ময়ও নিজে ক্ষোভ উগরে দেন। কংগ্রেস নেতার দাবি, স্রেফ সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তাঁর বিরুদ্ধে পুরুলিয়া, নন্দীগ্রাম-সহ একাধিক থানায় অভিযোগ করা হয়। কিন্তু এফআইআর না থাকা সত্ত্বেও খড়দহ থানায় আইসি অনিমেষ সিংহ রায় সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলে নিয়ে যান এবং জেলে অত্যাচারও করেন বলে অভিযোগ। চাপের মুখে খড়দহ থানার আইসি অনিমেষ সিংহ রায়কে সরিয়ে দেয় প্রশাসন। এমনকী, অপসারিত হন পুরুলিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চন্দ্রশেখর বর্ধনও।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে ঘটনার দিনের খড়দহ থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের আর্জিও জানান সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।