বুধবারই গঙ্গাসাগরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে করোনা ঠেকাতে প্রশাসনকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। কিন্তু বর্ষবরণের মুখে ফের নতুন করে নাইট কার্ফু জারি হবে কিনা তা নিয়ে দোলাচলে নবান্ন।
ভারতে যে নতুন মোড়কে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের হার সেই ইঙ্গিত গত কয়েকদিনেই গ্রাফেই ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩০ শতাংশ বাড়ল করোনার সংক্রমণের(Corona infections) পরিমাণ। আর তাতেই মাথায় হাত স্বাস্থ্য কর্তাদের। এদিকে এবার অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গেও(Westb Bengal)। বছরের শেষের মুখে কলকাতায়(Coronavirus in Kolkata) হু হু করে বেড়ে চলেছে সংক্রমিতের পরিমাণ। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যে ক্রমেই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে তা মানছেন সকলেই। কিন্তু বর্ষবরণের(New Year's Eve) মুখে করোনার এই মারণ কামড়ে বিপাকে পড়েছে রাজ্য প্রশাসনও। এদিকে গতকালই গঙ্গাসাগরের প্রশাসনিক বৈঠক(Gangasagar administrative meeting) থেকে করোনা ঠেকাতে প্রশাসনকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়(Chief Minister Mamata Banerjee)। কিন্তু বর্ষবরণের মুখে ফের নতুন করে নাইট কার্ফু(Night curfew) জারি হবে কিনা তা নিয়ে দোলাচলে নবান্ন।
এদিকে করোনার থাবা নতুন করে চওড়া হতেই চেন্নাই(Chennai) পুলিশ ১ জানুয়ারি শহরের সব অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছে। অন্যদিকে একই রাস্তায় হেঁটেছে মুম্বইও(Mumbai)। জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। দিল্লিতে জারি হয়েছে নাইট কার্ফু। কর্ণাটক, বিহারের মতো রাজ্যগুলিতেও উদযাপনে জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। অন্যদিকে স্বাস্থ্য খাতে ভালো অবস্থায় থাকলেও কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় গোয়া প্রশাসনও। সেখানেও বর্ষবরণের পার্টিতে কোভিড টিকা সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ১৫৪ জন, প্রাণ হারিয়েছেন ২৬৮ জন। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যাও। ভারতে ইতিমধ্যেই ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছুঁই ছুঁই। মোট ওমিক্রন আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬১ জন। এমতাবস্থায় বাংলা কেন বিধিনিষেধ আরোপের পথে হাঁটবে না সেই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে বিভিন্ন মহলে।
এদিকে এই নিয়ে পর পর ৩ দিন রাজ্যে কয়েকগুণ বেড়েছে করোনা সংক্রমণের পরিমাণ। বুধবার রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ১,১০০। যা মঙ্গলবারের চেয়ে যা প্রায় দ্বিগুণ। অন্যদিকে ওমিক্রণ আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। এমতাবস্থায় বর্ষবরণের পাশাপাশি গঙ্গাসাগর মেলা, কলকাতা বইমেলা নিয়েও বাড়ছে উদ্বেগ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন শীতে করোনাভাইরাসের দ্রুত বংশবৃদ্ধি হয়। কিন্তু সেসবে বিশেষ তোয়াক্কা যে করছে না আম-আদমি তা বড়দিনের পার্কস্ট্রিটের জমায়েতের ছবিতেই স্পষ্ট। এবার একই ছবি যদি বর্ষবরণ, বই মেলা, গঙ্গাসাগর মেলাতেও দেখা যায় তবে বাংলা করোনা বিস্ফোরণ যে সময়ের অপেক্ষা তা বলাই বাহুল্য। এমতাবস্থায় নাইট কার্ফু নিয়ে রাজ্য প্রশাসন কি সিদ্ধান্ত নেয় সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।