তথ্য প্রমাণ দিয়ে অভিযোগপত্র দাখিলের আবেদন বিজেপির। মামলার অনুমতি চেয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী দেবলীনা সরকার। দুটি মামলাই মঞ্জুর করেছেন প্রধান বিচারপতি।
কলকাতা পুরভোটকে (KMC Election) কেন্দ্র করে রবিবার উত্তাল হয়ে উঠেছিল কলকাতা (Kolkata)। নির্বাচনে ভোট লুঠের (Vote Looth) অভিযোগ তুলে সিপিআইএম, কংগ্রেস ও বিজেপিকে একসঙ্গে রাস্তায় বসে প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছিল। আর এবার সেই একই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata High Court) দ্বারস্থ হল সিপিআইএম ও বিজেপি। তথ্য প্রমাণ দিয়ে অভিযোগপত্র দাখিলের আবেদন বিজেপির (BJP)। মামলার অনুমতি চেয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী (CPIM Candidate) দেবলীনা সরকার। দুটি মামলাই মঞ্জুর করেছেন প্রধান বিচারপতি। এই মামলার শুনানি ২৩ ডিসেম্বর।
হাইকোর্ট আগেই নির্দেশ দিয়েছিল, পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) থাকছে না। কিন্তু যদি কোনও রকম অশান্তি কিংবা বিশৃঙ্খলার অভিযোগ সামনে আসে, তাহলে কৈফিয়ত নেওয়া হবে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) কমিশনার ও ডিজির কাছ থেকে। পাশাপাশি রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেও (State Election Commission) উত্তর দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এদিকে ভোট নিয়ে প্রহসন হয়েছে বলে দাবি করেছে বিজেপি। পাশাপাশি ভোটলুঠ, বোমাবাজি, এজেন্টকে বসতে না দেওয়া সহ একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও ভোট মোটের উপর শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে দাবি করেছে রাজ্য সরকার ও কলকাতা পুলিশ। এরপর শাসকদলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে রবিবারই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে ধর্না দিয়েছে বিজেপি প্রতিনিধি দল। কারণ বিরোধীদের কথায়, এই ভোট কোনওভাবেই শান্তিপূর্ণভাবে হয়নি।
অবশ্য কলকাতা পুরভোট নিয়ে যে বিজেপি হাইকোর্টে যাবে তা শোনা গিয়েছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মুখেই। আর এবার সেটাই হল। গতকাল বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ফেসবুক পোস্ট করে লিখেছিলেন, মমতা পরাজিত। সুতরাং আইনের পথ যে তাঁরাও ধরবেন সেটাও বোঝা যাচ্ছিল। কিন্তু একসঙ্গে একই অভিযোগে যে মামলা দায়ের করবেন সেটা বোঝা যাচ্ছিল না। একই সঙ্গে কলকাতা পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করল বিজেপি ও সিপিএম। এই মামলার শুনানি হবে ২৩ ডিসেম্বর।
উল্লেখ্য, এদিন আরও একটি মামলার শুনানি রয়েছে হাইকোর্টে। মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরসভাগুলিতে কবে এবং কত দফায় ভোট হবে তা জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কমিশনকে। এদিন সেটিও শুনবে আদালত। আর এই সব বিষয় নিয়ে ২৩ ডিসেম্বর আদালতে কমিশনকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সিসিটিভি ফুটেজে যে সন্ত্রাসের ছবি ধরা পড়েছে, পুলিশ ভূমিকা ঠিক কী ছিল, তা নিয়ে কমিশন এখন আদালতে ঠিক কী বলে সেটাই এখন সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন- ‘কোনও বুথেই পুনর্নির্বাচন হবে না’, সাফ জানাল রাজ্য নির্বাচন কমিশন
এ বিষয়ে বিজেপির আইনজাবী বলেন, ‘কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও শান্তিপূর্ণ এবং অবাধ নির্বাচন হয়নি। বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। আদালত সমস্ত বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দিলেও রাজ্য নির্বাচন কমিশন তা করেনি। এই বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ আমরা আদালতের কাছে জমা দিয়েছি। সেই মামলার শুনানি হবে ২৩ ডিসেম্বর।’
এদিকে ভোট নির্বিঘ্নে না হওয়ায় পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিল বিরোধী দলগুলি। যদিও সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভোটে বাধা দেওয়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি আর কোনও বুথও বন্ধ হয়নি। তাই কোনও ওয়ার্ডেই পুনর্নির্বাচন হবে না। তারপরই দুটি রাজনৈতিক দলের তরফে ঠিক করা হয় যে তারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন। আর সেই মতো আবেদন করা হয়েছে।