ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে আজ থেকেই কলকাতায় বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া, জারি হল হলুদ সতর্কতা

  • ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়় আমফান, যার প্রভাব পড়ছে রাজ্যে
  • ইতিমধ্যে আপতাকালীন নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে
  • সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের যেতে নিষেধ করা হয়েছে
  • পূর্বাভাস অনুযায়ী আজ থেকেই বঙ্গে শুরু হচ্ছে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া

Asianet News Bangla | Published : May 18, 2020 3:19 AM IST / Updated: May 18 2020, 01:22 PM IST

পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের খুব কাছে এই মুহূর্তে চলে এসেছে ঘূর্ণিঝড় আমফান। ক্রমশই শক্তি বাড়াচ্ছে এই সামুদ্রিক ঝড়। দিঘা থেকে এই মুহূর্তে আমফানের দূরত্ব ১০০০ কিলোমিটারের নিচে নেমে এসেছে। পারাদ্বীপ থেকে আমফানের দূরত্ব রয়েছে ৯০০ কিলোমিটারের নিচে। বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে আমফানের দূরত্ব রয়েছে এই মুহূর্তে ১০০০ কিলোমিটারের সামান্য কিছু বেশি। এই মুহূর্তে আলিপুর আবহাওয়া দফতর যে পূর্বাভাস জারি করেছে তাতে কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের বেশকিছু জেলায় আজ থেকেই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি শুরু হতে চলেছে। সেই সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া এবং বজ্র-বিদ্যুৎ। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার। সন্ধের পর থেকেই আবহাওয়ার এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এই আবহাওয়া থাকবে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। 

দক্ষিণবঙ্গের ১৫ জেলায় এই হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আমফানের জেরে উত্তরবঙ্গের আবহাওয়াতেও প্রবল প্রভাব পড়তে চলেছে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। যার জেরে উত্তরবঙ্গের ৮ জেলাতেও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি-সহ ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্র-বিদ্যুৎ-এর প্রকোপ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ১৯ তারিখ অর্থাৎ মঙ্গলবার সন্ধে থেকে ২০ মে সন্ধে পর্যন্ত এই আবহাওয়াই বজায় থাকার কথা। এর মাঝে ঝোড়ো হাওয়ায় কিছু পরিবর্তন হতে পারে, যার গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬৫ কিলোমিটারে পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির প্রতাপও বাড়তে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে ২০ তারিখ সন্ধে-র পর পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঁছড়ে পড়বে আমফান। এখনও পর্যন্ত এই ঝড়ের মূল কেন্দ্রবিন্দু পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকেই আসার কথা বলে আবহাওয়ার দফতরের বিভিন্ন বুলেটিনে বলা হয়েছে। ফলে, দিঘা, সাগর, হিঙ্গোলগঞ্জ, মৌসুমী দ্বীপ-গুলিতে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পূর্বাভাসের যা ইঙ্গিত তাতে ২০ মে যখন আমফান আঁছড়ে পড়বে তার কিছু সময় আগে থেকে রাজ্যে ঝড় ও বৃষ্টি-র প্রতাপ বাড়বে এবং ঝোড়়ো হাওয়ার গতিবেগ ১০০ কিলোমিটার থেকে ২০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে। 

ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় মৌসুম ভবন থেকে বঙ্গোপসাগর লাগোয়া রাজ্যগুলিকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সতর্কতা জারি করা হয়েছে ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গকে। এছাড়াও বাংলাদেশের সঙ্গে আলাদাভাবে সতর্কতা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কারণ, পারাদ্বীপ ও দিঘা উপকূল যেমন ঘূর্ণিঝড়ের মূল অভিমুখে রয়েছে, তেমনি রয়েছে বাংলাদেশের খেপুপাড়া এবং ল্যান্ড ফলের পর আমফান বাংলাদেশের দিকে ধাবিত হবে। এর জন্য ২০ তারিখ থেকে এই সমস্ত জায়গাগুলি যাতে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকে তার জন্য আগাম সতর্ক করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারও বিশেষভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে। খোলা হচ্ছে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোলরুম। রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপকূল তীবরবর্তী এলাকাগুলি থেকে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। মৎস্যজীবীরা যাতে সমুদ্রে না যায় তার জন্য সমানে মাইকিং করা হচ্ছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর স্যাটেলাইট ইমেজে পরিস্কার ধরা পড়েছে যে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ছবি। ঢেউ-এর উচ্চতা বেড়ে গিয়েছে। এমনকী ঘূর্ণিঝড় আমফান-এর কেন্দ্রে থাকা রাগড-আই-কেও চিহ্নিত করা গিয়েছে। তাই আশা করা হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়টি নিজের পর্যাপ্ত শক্তি সঞ্চয় করে নিয়েছে। রাগড-আই থাকার জন্য ল্যান্ড ফল হলেই ঘূর্ণিঝড়টি দূর্বল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার যাবতীয় সম্ভাবনা রয়েছে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।  

Share this article
click me!