বিশ্বভারতীর পাঁচিল ভাঙা কাণ্ডে এবার মুখ্য়মন্ত্রীকে কড়া চিঠি পাঠালেন রাজ্য়পাল জগদীপ ধনখড়। চিঠিতে রাজ্যপাল লিখেছেন,যেভাবে পুলিশ প্রশাসন থাকা সত্ত্বেও বিশ্বভারতীর মতো জায়গায় তাণ্ডব চলেছে , তাতে তাঁর লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। কবিগুরুর বিশ্বভারতীতে বিশ্ববিদ্য়ালয় কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। গুন্ডাদের হাত থেকে বিশ্বভারতীকে না বাঁচাতে পারায় তাঁর আফসোস হচ্ছে।
এই বলেই অবশ্য থেমে থাকেননি রাজ্য়ের সাংবিধানিক প্রধান। মুখ্য়মন্ত্রীকে ধনখড় বলেছেন, পুলিশ প্রশাসন থাকা সত্ত্বেও কেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জায়গায় এমন কাজ হল তা জানা উচিত। এখানেও পুলিশের রাজনীতিকরণ দেখতে পাচ্ছেন তিনি। এই রাজনীতিকরণ আইনের শাসন ও গণতন্ত্র ধ্বংস করছে। রাজ্য়পালের প্রশ্ন কেন গোয়েন্দা প্রশাসন থাকা সত্ত্বেও এই কাজ হল। সবশেষে মুখ্য়মন্ত্রীকে দ্রুত দোষীদের সাজা দেওয়ার কথা বলেন রাজ্য়পাল।
সোমবার বিশ্বভারতীর মেলার মাঠ ঘিরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। সেই অনুযায়ী কাজও চলছিল জোরকদমে। কিন্তু হঠাৎ এই কাজের মাঝেই যত গণ্ডগোল। জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরে মাঠ ঘিরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে উত্তেজনা পারদ চড়ছিল শান্তিনিকেতনে। এরইমধ্যে আবার রবিবার কয়েকজন প্রাক্তনীকে বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরা হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে।
সোমবার সকালে বোলপুর পোস্ট অফিসের কাছ থেকে ধিক্কার মিছিল বের হয়। মিছিলে পা মেলান হাজার দশেক মানুষ। কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা না থাকলেও, মিছিলের প্রথমসারিতে ছিলেন দুবরাজপুরের তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউরি, বোলপুরের কাউন্সিলর শেখ ওমর-সহ আরও অনেকে। মিছিল যখন বিশ্বভারতীর মেলার মাঠের কাছে পৌঁছয়, তখন এলাকায় নির্বিচার ভাঙচুর শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। চোখের নিমেষে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাঁচিল নির্মাণের সামগ্রী, এমনকী ঠিকাদারের অস্থায়ী অফিসের টেবিল-চেয়ার ফ্যানও। বাদ যায়নি মেলার মাঠের স্থানীয় বাতিস্তম্ভগুলিও। এরপর নিরাপত্তাজনিত কারণে আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্বভারতী বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।