কলকাতায় আমফানের বলি অন্তত ১০০০০, লকডাউন উঠলেই দূষণের গ্রাসে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা

ঘূর্ণিঝড় আমফানের শহর কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনেরও বেশি মানুষের

সেইসঙ্গে সমূলে উপরে গিয়েছে অন্তত দশ হাজার গাছ

এতেই আচমকা তীব্র বায়ুদূষণের আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা

কীভাবে সামাল দেওয়া যাবে এই বিপদের

 

amartya lahiri | Published : May 25, 2020 12:38 PM IST / Updated: May 25 2020, 06:20 PM IST

ঘূর্ণিঝড় আমফানের ধাক্কায় তছনছ হয়ে গিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা। সেইসঙ্গে লণ্ডভণ্ড শহর কলকাতাও। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের, কলকাতা পুলিশ অবশ্য জানিয়েছিল মৃতের সংখ্যাটা আরও কিছু বেশি হতে পারে। এতো গেল মানুষের মৃত্যুর কথা। কিন্তু, মানুষের নীরব বন্ধু শহরের অসংখ্য গাছেদের মৃত্যু বিপদ আরও বাড়িয়েছে। ডালপালা ভেঙে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার গাছ সমূলে উপড়ে গিয়ে লকডাউনের পর আচমকা তীব্র দূষণের মাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে কলকাতায়।

কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের দাবি, ৫০০০-এরও বেশি গাছ পড়ে গিয়েছে। এর মধ্যে বহু গাছই ৫০ বছরেরও বেশি পুরনো। শহরের পরিবেশবিদরা অবশ্য বলছেন সংখ্যাটা কম করে ১০,০০০ হবেই। এই গাছগুলি রাস্তার দুইপাশে দাঁড়িয়ে জ্হালানি বা অন্যান্য কারণে নিঃসৃত কার্বন শুষে নিয়ে কলকাতার বাতাসে দূষণের মান নিয়ন্ত্রণে রাখত। বিশেষ করে লকডাউনের সময়টায় যানবাহন না থাকায় কলকাতার বাতাসের মানের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল এই গাছগুলি।

পরিবেশবিদ সোমেন্দ্রনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, শহরের রাস্তার পাশে থাকা গাছগুলির এক তৃতীয়াংশেরও বেশি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। তাঁর আশঙ্কা সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে লকডাউন পুরোপুরি উঠে যেতে পারে। সেই ক্ষেত্রে সেই সময় রাস্তায় কিছু না হলেও  আট লক্ষ বাস-গাড়ি-অটো-ট্যাক্সি-ট্রাক চলতে শুরু করবে। তখন বাতাসের পিএম ২.৫ লেভেল অর্থাৎ বাতাসে ২.৫ মাইক্রনের থেকে ক্ষুদ্র কণার পরিমাণ মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে যাবে। এখন লকডাউন চলছে বলে অতটা বোঝা যাচ্ছে না।

এই অবস্থায় আমফান পরবর্তী পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আসন্ন বর্ষা মরসুমে প্রচুর পরিমাণে নতুন গাছ লাগাতে হবে শহরে। সমূলে উপরে যাওয়া এক-একটি গাছের ক্ষতিপূরণের জন্য অন্তত দশটি নতুন গাছ লাগানো দরকার। কেএমসি-র পরিচালন বোর্ডের সদস্য এবং তথা প্রাক্তন মেয়র-পারিষদ (উদ্যান), দেবাশিস কুমার বলেছেন, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপণ অভিযান শুরু করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার সবুজ আচ্ছাদন ফিরিয়ে আনার জন্য গাছ লাগানোরও আহ্বান জানিয়েছেন।

Share this article
click me!