ঠিক যেন এনআরএস কাণ্ডেরই পুনরাবৃত্তি। প্রথমে অভিযোগকে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ উঠলেও দেরিতে নড়েচড়ে বসল পুলিশ। প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া ঊষশী সেনগুপ্তের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত কড়া ধারায় মামলা করল পুলিশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারাতেও মামলা করা হয়েছে। পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে লালবাজার।
আরও পড়ুন-অন্য থানায় যান, বিপদের মুহূর্তে পুলিশের ভূমিকায় পাঁচ প্রশ্ন ক্ষুব্ধ উষশীর
মডেল এবং প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া ঊষশীর অভিযোগ অনুযায়ী, গত আঠারো জুন রাতে নিজের সহকর্মীর সঙ্গে একটি অ্যাপ ক্যাবে চড়ে কর্মস্থল থেকে দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। এক্সাইড মোড়ে জনা পনেরো যুবক তাঁদের গাড়িটিতে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। এর পরে উল্টে ওই গাড়ির চালককে বাইরে বের করে ওই যুবকরা বেধড়ক মারধর করতে থাকে।
ঊষশীর অভিযোগ অনুযায়ী, ঘটনায় সাহায্য চাইতে গেলে প্রথমে ময়দান থানা থেকে তাঁকে ভবানীপুর থানায় যেতে বলা হয়। পরে ওই যুবকরা ফের প্রিন্স আনওয়ার শাহ রোডে ঊষশীদের উপরে চড়াও হলে চারু মার্কেট থানায় অভিযোগ জানাতে যান ঊষশী। সেখান থেকেও তাঁকে ফের ভবানীপুর থানায় যেতে বলা হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার পরে পুলিশ প্রাথমিকভাবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মহিলাদের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগ এনে ৩৫৪-এ ধারায় মামলা করে পুলিশ। পুলিশের এই ভূমিকাতেও প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন ঊষশী। তাঁর পরিচয় সামনে আসার পর এবং ওই ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেন লালবাজারের কর্তারা।
এর পরেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে তৎপরতা শুরু হয়। গ্রেফতার করা হয় সাত অভিযুক্তকে। ঊষশীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন কলকাতা পুলিশের কয়েকজন শীর্ষ আধিকারিক। বুধবার সকালে ঊষশী এবং ওই অ্যাপ ক্যাবের চালকের বয়ানও রেকর্ড করে পুলিশ। তার পরেই জামিন অযোগ্য ৩৫৪ ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করে পুলিশ। সত্যিই প্রাথমিকভাবে পুলিশের গাফলতি ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখতে ডিসি পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পুলিশের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ঊষশীও। কিন্তু একই সঙ্গে প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়ার প্রশ্ন, তাঁর সামাজিক পরিচিতর জন্য হয়তো শেষ পর্যন্ত তৎপর হয়েছে পুলিশ। কিন্তু সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে এই তৎপরতা দেখানো হবে তো?