কোথা থেকে পান লেখার রসদ, জন্মদিনে জানুন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের অজানা কাহিনি

  • তাঁর লেখার কোনও নির্দিষ্ট ছক নেই
  • লেখার রসদ কীভাবে পান শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়?
  • জন্মদিনে জানুন খ্যাতনামা সাহিত্যিকের অজানা কাহিনী
  • কী কেমন ছিল শুরুর দিনগুলি?

তিনি কথাকার। বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় ও মনপ্রিয় সাহিত্যিক তিনি। অথচ লেখা শুরুর আগে পর্যন্ত তাঁর লেখার কোনো ছক নেই, পরিকল্পনা নেই। লেখা শুরুর আগে পর্যন্ত তিনি জানেন না কী লিখতে চলেছেন তিনি। এমনটাই তাঁর লেখার ধরন। তবে মনে মনে একটি কথার জন্য তিনি অপেক্ষা করে থাকেন। ওই কথাটি যদি তাঁর পছন্দ হয় তবেই লেখা শুরু করেন। তাই এমনও হয়েছে কতবার যে সেই কথার মধ্যে একটি শব্দ খুঁজতে খুঁজতে পেরিয়ে গিয়েছে পক্ষকাল, অথচ লেখা শুরু হয় নি। আবার এমনও ঘটেছে সারাদিন ধরে শুধু লিখেই চলেছেন। লেখকের কথা অনুযায়ী তাঁর লেখার ধরন অনেকটা তুলোর গুটি থেকে সুতো পাকানো। লিখতে লিখতেই তাঁর লেখার মধ্যে ধীরে ধীরে একেকটি চরিত্রকে ফুটে উঠতে দেখেন। তাদের চোখ-মুখ, হাত-পা, পোশাক-আশাক ভেসে ওঠে লেখকের চোখের সামনে। এইভাবেই তিনি ওইসব মানুষদের জীবনযাত্রা দেখতে পান। তবে কি লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প, উপন্যাস একটি প্রতিবেদন? লেখক বলেন অনেকটা সেই ধরণের। তিনি এ কথাও বলেন, এভাবে লেখা প্রত্যাশিত নয়। লেখার এই ধরনটা বৈজ্ঞানিকও নয়। তাহলে? লেখক বলেন তিনি নিরুপায়। এভাবেই লেখক দশকের পর দশক ধরে ছোটদের জন্য ভূতের গল্প, রহস্য গল্প, বড়দের জন্য সমাজ জীবনের আখ্যান লিখে চলেছেন। 

কোথা থেকে পাচ্ছেন এত এত লেখার রসদ। এত সব মানুষের মুখ কোথায় গেলে দেখতে পাওয়া যায়। কতদিন ধৈর্যধরে বসে থাকলে মানুষের জীবনের বৈচিত্র্যময় ঘটনাক্রমগুলি প্রত্যক্ষ করা যায়। লেখক শীর্ষেন্দু বলেন, 'মানুষের জীবনের চলার পথে কিছু গর্ত রয়েছে, যা এড়ানো যায় না। মানুষ ভেতরে ভেতরে যেমন নিষ্ঠুর, কখনও কখনও খুব দয়ালু হয়ে ওঠে। মানুষের মনের সঙ্গে এই খেলা চলেই কিন্তু আমরা সব সময়ে তা বুঝতে পারি না। মনের মধ্যে এমন ভাবনা আসে, যা প্রকাশ করা যায় না;  যাকে আমরা বোতলবন্দি করে রাখি। কিন্তু মনের মধ্যে সেটা থেকে যায়’। লেখক শীর্ষেন্দু এই বিচিত্র জীবনকে দেখে চলেন। জীবন যে কত ভাবে না প্রকাশিত হচ্ছে। তা লেখক প্রত্যক্ষ করেন। 

Latest Videos

লেখক নিজেই বলেছেন, শুরুতে তাঁর লেখা পড়ে নাকি পাঠক বুঝতেই পারতেন না। সে জন্য নাকি তিনি জনপ্রিয় লেখক হতে পারেন নি। লেখকের মধ্যে কিছুটা ভয়, কিছুটা সংকোচ কাজ করত লেখা যদি কেউ বুঝতেই না পারে, তাহলে তো তার পত্রিকা থেকে চাকরিটা চলে যেতে পারে। তাঁর উপন্যাস "ঘুণপোকা' পড়ে অনেকেই বলেছিলেন, ওর লেখা পড় না, মন খারাপ হয়ে যাবে। শীর্ষেন্দু সে কথা জানতে পেরে খুব ভয় পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি থেমে যাননি। কারণ লিখতেই সব থেকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন।  কোনও কোনও ছোট লেখা একবারের জায়গায় একাধিকবার লিখতে হয়েছে। ছ’মাস, এক বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। এত সময় পরিশ্রমের পরও যে সেই লেখা খুব একটা আলোচিত হয়েছে তাও নয়। কিন্তু লেখক শীর্ষেন্দু তাতে বিন্দুমাত্র উদ্যম হারান না, হতাশ হন না। তাঁর কথা মতো তিনি সব সময় একটা চেতন অবচেতনে বিরাজ করেন। অনেক সময় তাঁর মনেও থাকে না যে তিনি লেখক। তাহলে তাঁর স্বত্বা কি। এ নিয়ে তিনি নিজেই বলেন, একজন ব্যক্তি জীবনযাপনে অনেক টুকরোতে বিভক্ত হয়ে জীবন যাপন করে। স্ত্রীর স্বামী, সন্তানের বাবা। লেখক শীর্ষেন্দুও তাই। 

তাহলে লেখকের কাজ কি? লেখক তো সাংবাদিক নন। খবর দেওয়াও তাঁর কাজ নয়। লেখক শীর্ষেন্দু এ বিষয়ে যেভাবে আলোকপাত করেন তাতে বোঝা যায় তিনি লেখককে আবিস্কারক মনে করেন। যা বাল্মীকি-হোমার-বেদব্যাসের সময় থেকেই হয়ে চলেছে। বারবার মানুষকে আবিষ্কার করা হচ্ছে। তারপরও মানুষ সম্পর্কে শেষ কথা বলা যায়নি। মানুষ সম্পর্কে এখনো অনেক কিছু অজানা রয়ে গিয়েছে, থেকেও যাবে। মানুষ এখনও আমাদের কাছে পুরোপুরি প্রতিভাত নয়। আমরা এখনও তাঁকে সম্পূর্ণভাবে ধরতে ছুঁতে পারি না। আমরা কি নিজেকে পুরোপুরি জানতে বুঝতে পারি? লেখক শীর্ষেন্দুর লেখা নিজের ভেতর যে রহস্যময় ‘আমি’ তার স্বরূপ উদঘাটন বা আবিষ্কার।যেমন তাঁর কাছে চারপাশে বিস্ময়ের অন্ত নেই। জীবনও তাঁর কাছে বিস্ময়। লেখক হিসেবে আকাশ ছোঁয়া সাফল্য পাওয়াটাও তাঁর কাছে বিস্ময়ের।

Share this article
click me!

Latest Videos

Suvendu Adhikari: 'কয়লার ৭৫ ভাগ তৃণমূলের পকেটে যায়' বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর
‘সরকারকে প্রশ্ন করলেই সরকার উলঙ্গ হয়ে যাবে!’ বক্তব্য রাখতে না দেওয়ায় বিস্ফোরক Sajal Ghosh
Mamata Banerjee Live: নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা, দেখুন সরাসরি
Suvendu Adhikari Live: বিধানসভার বাইরে মুখোমুখি শুভেন্দু অধিকারী, দেখুন সরাসরি
‘অনেকদিন পর কেষ্টদা ফিরেছে তাই একটু বিশৃঙ্খলা হচ্ছে’ অদ্ভুত ব্যাখ্যা Satabdi-র! | Satabdi Roy News