রাজ্য়ের একাধিক স্টেট ব্যাঙ্ক শাখায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে একের পর এক মৃত্যু। এক এসবিআই কর্মী জানিয়েছেন, এখানে সবথেকে বড় রহস্য, এখনও অবধি রাজ্যের স্টেট ব্য়াঙ্ক শাখায় যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের প্রত্য়েকেরই ফুসফুসের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। আর এবার করোনায় প্রাণ হারালেন এসবিআই-এর খিদিরপুর ডক শাখার সঞ্জীব বণিক নামের এক নিরাপত্তা রক্ষী।
আরও পড়ুন, করোনায় ফের ১ এসবিআই কর্মীর মৃত্য়ু, মৃতের পরিবারকে চাকরি দেওযার দাবিতে ব্যাঙ্ক কর্মীরা
ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার শিকড় অনেক দূর। প্রসঙ্গত, ২৫ জুন করোনা আক্রান্ত হয়ে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন ওই ব্য়াঙ্কের ব্রাঞ্চ ম্য়ানেজার। এরপরেই কোভিড বিধি মেনে পরেরদিন ২৬ জুন এসবিআই এর এই শাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবং ওই শাখার সকল কর্মচারীকে কোভিড টেস্ট করতে বলা হয়। খিদিরপুর ডক শাখার ব্য়াঙ্কের সকল স্টাফ ২৮ জুন নমুনা পরীক্ষা করিয়ে নেন। কিন্তু সঞ্জীব বণিক নামের ওই নিরাপত্তা রক্ষী এর একদিন আগেই অর্থাৎ ২৭ জুন কোভিড টেস্ট করান। এরপরেই ঘটনা মোড় নেয়।
আরও পড়ুন, কোভিড চিকিত্সায় এগিয়ে এল এসবিআই, বেলেঘাটা আইডিকে দিল পিপিই কিট-ভেন্টিলেটর উপহার
এক এসবিআই কর্মী জানিয়েছেন, আচমকাই সঞ্জীব বণিক নামের ওই নিরাপত্তা রক্ষী শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। রাত ২ টোর সময় তাঁর দাদা অসহায় অবস্থায় একটি ট্য়াক্সি খুঁজে পায়। এরপর শহরে ৬ কোভিড বেসরকারি নামজাদা হাসপাতাল তাঁদের ফিরিয়ে দেয়। উল্লেখ্য, রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রী আগেই জানিয়েছেন কোনও কোভিড হাসপাতালে বেড ফাঁকা থাকা সত্বেও যদি ভর্তি না নিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সেই হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল পর্যন্ত হতে পারে। মুখ্য়মন্ত্রীর বলা সত্বেও একই দৃশ্য় ফিরে আসে এই ঘটনাতেও।
আরও পড়ুন, করোনা যুদ্ধে পরাজিত আরও ১ এসবিআই কর্মী, আতঙ্কে মমতাকে চিঠি ব্য়াঙ্ক কর্মীদের
এরপর স্টেট ব্য়াঙ্কের এক কর্মীর সহায়তায়, ২৯ জুন ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাত সঞ্জীব বণিককে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ধীরেধীরে সঞ্জীব বণিকের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। এবং ফুসফুসে সমস্যার সৃষ্টি হয়। চিকিৎসকেরা রীতিমত চেষ্টা করা সত্বেও শেষ রক্ষা হয়নি। দীর্ঘ ২০ দিন লড়াই করার পর ১৯ জুলাই রবিবার বেলা ১১ টা ৩০ নাগাদ সঞ্জীব বণিক নামের ওই নিরাপত্তা রক্ষীর মৃত্যু হয়। স্বাভাবিকভাবেই এসবিআই কর্মীরা একদিকে যেমন এই ঘটনায় শোকাহত এবং অপরদিকে রাজ্যের একাধিক শাখায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে সহকর্মীদের মৃত্যুতে আতঙ্কিত। যদিও এই মুহূর্তে সুস্থ আছেন খিদিরপুর ডক শাখার ওই করোনা জয়ী ম্য়ানেজার।
অপরদিকে, রায়গঞ্জ শাখার সিএম কুমার গৌতম কোভিডে আক্রান্ত। জানা গিয়েছে, আক্রান্তের সংখ্য়া বেড়ে যাওয়ায় শিলিগুড়িতে কোভিড হাসপাতালে আর জায়গা নেই। এদিকে মাঝামাঝি উপসর্গ যাদের দেখা দিচ্ছে তাঁদেরকে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে। অপরদিকে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন নাগাল্য়ান্ড হাউজের সুবোধ দাশ। উল্লেখ্য, এসবিআই একাধিক শাখায় করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও শাখা বন্ধ করা নিয়ে কর্তৃক্ষের তরফে গড়িমসি চলছে বলে অভিযোগ। এবং করোনা আক্রান্তের সহকর্মীদের মধ্য়ে যাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে, তাঁদেরকে অফিস আসতে বলা হচ্ছে।
পূর্ব ভারতের প্রথম সরকারি প্লাজমা ব্যাঙ্ক-কলকাতা মেডিকেল, করোনা রুখতে প্রস্তুতি তুঙ্গে
মৃত্যুর পর ২ দিন বাড়ির ফ্রিজে করোনা দেহ, অভিযোগ 'সাহায্য মেলেনি স্বাস্থ্য দফতর-পুরসভার'
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু এক সেনা কর্তার, ফোর্ট উইলিয়ামের শোকের ছায়া
অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকলের পরও কোভিড জয়ী ৫৪-র দুধ ব্যবসায়ী, শহরকে দিলেন এক সমুদ্র আত্মবিশ্বাস
কোভিড রোগী ফেরালেই লাইসেন্স বাতিল, হাসপাতালগুলিকে হুঁশিয়ারি রাজ্য়ের