সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এসেছিল অনেক উত্থান-পতন, কীভাবে সকলের 'ছোড়াদা' হয়েছিলেন সোমেন মিত্র

  • প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসাবেই জীবন শেষ করেলন সোমেন মিত্র
  • প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গে মতবিরোধের কারণে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন
  • শোনা যায় সোমেন মিত্রের কারণেই কংগ্রেস ছেড়েছিলেন মমতা
  • বাংলার মানুষের কাছে ছোড়দা হিসেবেই থেকে গেলেন তিনি

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসাবেই জীবন শেষ করেলন সোমেন মিত্র। যেদলে তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি সেখান থেকেই জীবনের ওপারে গেলেন।  আমহার্স্ট স্ট্রিটের ‘ছোড়দা’ নামেই কংগ্রেস রাজনীতিতে বেশি পরিচিত ছিলেন সোমেন। কিন্তু কেন তাঁকে ছোড়দা বলা হতো সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন তিন। 

এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের গল্প বলেছিলেন সোমেন মিত্র। জানিয়েছিলেন তাঁর ডাক নাম আসলে খোকন। আবার তাঁর এক পিসতুতো দাদা ছিলেন, তাঁরও নাম খোকন। তিনি সোমেন বাবুদের বাড়িতেই থাকতেন। তাই খোকন বলে ডাকলে, কে সাড়া দেবে, তা নিয়ে ছিল সমস্যা। আর সেই সমস্যা কাটাতেই সোমেনবাবুর সেই দাদাকে ‘বড়দা’ আর সোমেনবাবুকে ‘ছোড়দা’ নামে ডাকা শুরু হয়। সেই থেকেই সবার ছোড়দা হয়ে রয়ে গেলেন তিনি।

Latest Videos

আরও পড়ুন: বরকত গনিখানের শিষ্য হয়ে উঠেছিলেন কংগ্রেসের 'ছোড়দা', সোমেন মিত্রের প্রয়াণ এক অধ্যায়ের অবসান

সোমেন মিত্রের জন্ম ১৯৪১ সালে। আসল নাম ছিল সোমেন্দ্রনাথ মিত্রে। প্রয়াত কংগ্রেস নেতা বরকত গনিখান চৌধুরীর শিষ্য বলা হত তাঁকে। ষাটের দশকে ছাত্র রাজনীতি দিয়েই পথচলা শুরু। তাঁর রাজনৈতিক জীবন ছিল দীর্ঘ। আর সেই রাজনৈতিক জীবনে এসেছে অনেক উত্থান-পতন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে ছোড়দা হিসেবেই থেকে গেলেন তিনি।

কংগ্রেস ছেড়ে এসেছিলেন তৃণমূলে, আবার ফেরেন কংগ্রেসে। তবে সোমেন মিত্র বরাবরই দাবি করেছেন, তিনি ক্ষমতার লোভে কোনোদিনই কিছু করেননি। দ্বিতীয়বার কংগ্রেস ফেরার পর বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে সোমেন মিত্র বলেন, তিনি ক্ষমতার লোভে ফিরতে চাননি বলেই তৃণমূল সরকারে থাকাকালীন দল ছাড়েন। তাঁর বক্তব্য ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাইটার্সে প্রবেশ করার পরই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

আরও পড়ুন: বাংলার রাজনীতিতে ইন্দ্রপতন, চলে গেলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র

এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সোমেন মিত্র বলেছিলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার লোভ তিনি কখনই দেখাননি। এমনকি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে তিনি পিছন থেকে লড়াই করার পক্ষেই ছিলেন। তিনি নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছিলেন, ‘আমি অতুল্য ঘোষ হব, তুমি বিধান রায় হও।’ অতুল্য ঘোষ ছিলেন কংগ্রেসের একজন দক্ষ সংগঠক। আর সেটাই হতে চেয়েছিলেন সোমেন মিত্র। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন মমতাকেই। যখন একথা বলেছিলেন, তখন তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন।

অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কংগ্রেস ছেড়েছিলেন, তখন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন সোমেন মিত্র। সেইসময় নাকি সভাপতি নির্বাচনের ভোটে মমতাকে হারিয়ে দিয়েছিলেন সোমেন। এরপরেই তৃণমূল তৈরি করেন মমতা। পরে সেই দলেই যোগ দেন সোমেন।

২০১৪-র জানুয়ারিতে তৃণমূলের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন সোমেন মিত্র। সেইসময় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ার লোকই বেশি ছিল। আথচ সোমেন মিত্র হাঁটলেন উল্টো পথে। তৃণমূল ছেড়ের কংগ্রেসে যোগদান করলেন তিনি। জানা যায়, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গে মতবিরোধের কারণে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন সোমেন মিত্র। তৈরি করেছিলেন প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস।

মধ্য কলকাতায় একসময় দের্দন্ড প্রতাপ ছিল তাঁর। ১৯৭২ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে  শিয়ালদহ আসন থেকে কংগ্রেসের হয়ে একাধিকবার বিধায়ক নির্বাচিত হন। তবে সেই কংগ্রেস থেকে বেরিয়েই ২০০৮ সাল প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস গঠন করেন। ২০০৯ সাল ইন্দিরা কংগ্রেস যুক্ত হয় তৃণমূলের সঙ্গে। আবার  ২০১৪ সালে ফের কংগ্রেসে ফেরা। এভাবেই পুরনো দলে ফিরে নিজের জীবনের বৃত্তটা যেন সম্পূর্ণ করেছিলেন সোমেন মিত্র।

Share this article
click me!

Latest Videos

'কয়লার ৭৫ ভাগ তৃণমূলের (TMC) পকেটে যায়' বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari)
Nadia-এ ডাম্পিং গ্রউন্ড ঘিরে বিতর্ক! থানায় আটক বিজেপি বিধায়ক! দেখুন | Nadia News Today
ট্যাব কেলেঙ্কারির প্রতিবাদে শিক্ষকদের জোরদার বিক্ষোভ! দাবি সঠিক তদন্তের! | Bengal Tab Scam
Guyana-র সরস্বতী বিদ্যা নিকেতন স্কুলে Narendra Modi, কথা বললেন পড়ুয়াদের সঙ্গে
Suvendu Adhikari Live: বিধানসভার বাইরে মুখোমুখি শুভেন্দু অধিকারী, দেখুন সরাসরি