বিদ্য়াসাগর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে জারি অচলাবস্থা। যার সূত্রপাত, এক ছাত্রীকে অধ্য়াপকের কুপ্রস্তাব দেওয়াকে ঘিরে। আর পড়ুয়াদের এই আন্দোলনকে 'বেআইনি' বলে বিতর্কে জড়ালেন উপাচার্য।
সম্প্রতি, বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পদার্থ বিভাগের অধ্য়াপক পরেশচন্দ্র জানা এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ। যদিও অধ্য়াপক ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন। একটি কমিটি বসানো হয় ঘটনার তদন্তের জন্য়। তারপর বিশ্ববিদ্য়ালয় কর্তৃপক্ষ পরেশবাবুকে অনির্দিষ্টকালের জন্য় ছুটিতে যেতে বলেন। যদিও তাতে করে বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পড়ুয়ারা শান্ত হননি। তাঁরা এদিন থেকে বিক্ষোভে নামেন। উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্য়ালয় ওই অধ্য়াপকের বিরুদ্ধে ব্য়বস্থা নেওয়া সত্ত্বেও কেন এইভাবে অচলাবস্থা জারি করে রেখেছেন পড়ুয়ারা তা বোধগম্য় নয়। পড়ুয়াদের এই আন্দোলনকে তিনি বেআইনি বলে আখ্য়া দিয়েছেন।
অন্য়দিকে পড়ুয়াদের অভিযোগ, এই প্রথম নয়। এর আগেও ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এক অধ্য়াপকের বিরুদ্ধে। মাসচারেক আগে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের এই অধ্য়াপক এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। আর তা নিয়ে ক্ষোভ দানা বেঁধেছিল পড়ুয়াদের মনে। তাঁদের বক্তব্য়, চারমাসের মধ্য়ে আবার এই ধরনের ঘটনা ঘটল। তাই তাঁরা অভিযুক্ত অধ্য়াপকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ঐক্য়বদ্ধ আন্দোলনে নেমেছেন। এদিন তাঁরা বিশ্ববিদ্য়ালয়ে চত্বরে একটি মিছিল করেন। তারপর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের প্রশাসনিকভবনের সামনে প্ল্য়াকার্ড হাতে করে বিক্ষোভ অবস্থান শুরু করেন। এদিন ডিএসও ও এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে একটি করে ডেপুটেশন দেওয়া হয় কর্তৃপক্ষকে।
উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী এই আন্দোলনকে রীতিমতো বেআইনি আখ্য়া দিয়ে বলেছেন, যথারীতি আইন মোতাবেক স্বশাসিত কমিটি আইসিসি গঠিত হয়েছে। যা কারও অধীনে নয়। ফলে সেই কমিটি কীভাবে তদন্ত করবে তা পুরোপুরি তাদের বিষয়। গত নভেম্বরের মাইক্রোবায়োলজির অভিযুক্ত অধ্যাপকের ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট ইতিমধ্যেই জমা করে দিয়েছে আইসিসি। আগামী ৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হবে। এদিকে পদার্থ বিভাগের ওই অধ্য়াপকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে যা যা করার সবই করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলনে নেমেছেন আইসিসিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে। ছাত্রছাত্রীদের এই আন্দোলন সম্পূর্ণ বেআইনী। অবিলম্বে তাদের বিষয়টি বোঝা উচিত।