শুভ জন্মদিন কল্লোলিনী তিলোত্তমা

  • ডিহি কলকাতা, সুতানুটি ও গোবিন্দপুর মূলত এই তিনটি গ্রাম নিয়েই কলকাতার জন্ম হয়েছিল
  • এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা
  • জব চার্নকের সময়কার সেই ক্যালকাটা ছিল পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র
  • ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তুলেছিল এই তিলোত্তমার বুকেই

ডিহি কলকাতা, সুতানুটি ও গোবিন্দপুর মূলত এই তিনটি গ্রাম নিয়েই কলকাতার জন্ম হয়েছিল ১৬৯০ সালে। এর আগে অবধি এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে। তিলোত্তমা কলকাতার আদি নাম ক্যালকাটা। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে গড়ে ওঠে এই শহর। জব চার্নকের সময়কার সেই ক্যালকাটা ছিল পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। কলকাতা বন্দরই ছিল ভারতের প্রাচীনতম বন্দর।  একইসঙ্গে দেশের প্রধান নদী বন্দরও ছিল এটিই।

১৬৯০ সালের ২৪ অগাস্ট কলকাতায় এসেছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলা জব চার্নক। মতোবিরোধ থাকলেও এই দিনটিকেই তাই কলকাতার জন্মদিন হিসেবে মনে করা হয়। জব চার্নকের কলকাতায় আসার পরেই গ্রামের পরিবর্তে তা আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে ওঠার সূচনা হয়েছিল। এমনকী কলকাতাকে ঘিরেই গোটা এশিয়ায় ব্রিটিশ শাসন পরিচালিত করা হয়েছিল। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে  দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তুলেছিল এই তিলোত্তমার বুকেই। 

Latest Videos

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথম দিকে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত দেশের রাজধানী। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে কলকাতাই ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। এর মধ্যে ঘটে গিয়েছে প্রচুর উত্থাণ পতন। দিল্লির সিংহাসনে তখন রয়েছেন বাদশাহ আওরঙ্গজেব। ১৬৯০ সালের ২৩ এপ্রিল এক আদেশনামায় আওরাঙ্গজেব বার্ষিক তিন হাজার টাকা শুল্কের বিনিময়ে ইংরেজদের বাংলায় বাণিজ্যের অনুমতি দিলেন। ইব্রাহিম খাঁর আমন্ত্রণে জব চার্নক ফিরে আসেন কলকাতায়। সুতানুটিতে জব চার্নকের এই তৃতীয় পদার্পনের তারিখটিই ২৪ আগস্ট। 
ইংরেজরা তো বটেই দেশীয় ইতিহাসবিদদের অনেকেই এই তারিখটিকেই কলকাতা শহরের ‘জন্মদিন’ বলে মনে করেন। শহর কলকাতার নগরায়নের সূচনা পলাশির যুদ্ধের পরবর্তী সময় থেকে৷ যুদ্ধে জিতে ইংরেজরা কলকাতাকেই গড়ে তুলল তাদের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে, আর সেই সূত্রেই অন্য জায়গা থেকে নানা মানুষ এখানে এসে বাণিজ্য করতে৷ ধীরে ধীরে এখানেই বসবাসও গড়ে উঠে এই শহরের জনবহূল হয়ে ওঠে ৷ জন্মদিন না হলেও, চার্নকের তৃতীয়বারের সুতানুটি পদার্পণের দিনকে ধরলে কলকাতার বয়স দাঁড়ায় ৩৩০ বছর৷ ১৯১১ সালে ভারতের রাজধানী হিসেবে ক্যালকাটার পরিবর্তে সেটি স্থানান্তরিত করা হয় নয়া দিল্লিতে। স্বাধীনতার পরও তাই কল্লোলিনী তিলোত্তমাই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। সেই থেকে এতগুল বছর পেরিয়েও "কলকাতা আছে কলকাতাতেই"। ১৬৯০ সাল থেকে শুরু করে এখনও অবধি বিভিন্ন প্রতিকূলতা, ভালো-মন্দ সময় পেরিয়েও, জাত-পাত, ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে কল্লোলিনী আজও চির সবুজ। তোমাকে জানাই জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
 

Share this article
click me!

Latest Videos

মাননীয়া জঙ্গিদের ঢুকতে দিচ্ছেন, কিন্তু চাকরি দিচ্ছেন না, শিল্প আনছেন না : Suvendu Adhikari
'জঙ্গিরা ধরা তো পড়ছে, তাহলে আর চিন্তার কি আছে?' হাসতে হাসতে উত্তর রচনার | Rachna Banerjee News
মমতা হারবে, DA ন্যায্য অধিকার, জয় আপনাদের দোরগোড়ায়, ঐক্যবদ্ধ থাকুন : শুভেন্দু | Suvendu Adhikari
'তৃণমূলের দুয়ারে সরকার এখন দুয়ারে জঙ্গি', তীব্র আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর | Suvendu Adhikari
Suvendu Adhikari Live : নবান্নের সামনে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ধর্না অবস্থান মঞ্চে শুভেন্দু