যারা কখনও ধূমপান করেননি তাদের মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সারের একটি প্রধান ঝুঁকির কারণ হল সেকেন্ডহ্যান্ড ধোঁয়া। অর্থাৎ ধূমপায়ীদের সংস্পর্শে আসাও এই রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ধূমপান না করলেও বাড়ছে ফুসফুস ক্যান্সার; কারণ জেনে নিন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপান না করা ব্যক্তিদের মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ছে। ১০ থেকে ২০ শতাংশ ফুসফুস ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তি কখনও ধূমপান করেননি। টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের গবেষকদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতে ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ফুসফুস ক্যান্সারের কারণে।
ল্যানসেটের ক্লিনিক্যাল মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ভারতীয় তরুণদের মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ছে। ১৯৯০ সালে ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি ছিল ৬.৬২, যা ২০১৯ সালে বেড়ে ৭.৭ হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে শহরাঞ্চলে এই ঝুঁকি আরও বাড়বে বলে গবেষকরা আশঙ্কা করছেন। বায়ু দূষণ ফুসফুসের স্বাস্থ্যের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে এবং ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
বায়ু দূষণ আমাদের সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। শিশুদের জন্য, বিশেষ করে যাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা এবং অ্যালার্জি আছে, তাদের জন্য এটি একটি গুরুতর হুমকি। বায়ু দূষণের উচ্চমাত্রার কারণে শিশুরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এটি ফুসফুস ক্যান্সার, হাঁপানির মতো জীবনঘাতী রোগের কারণ হতে পারে, বলছেন চক্র ইনোভেশনের নির্বাহী পরিচালক অনমল খান্ডেলওয়াল।
গবেষণায় দেখা গেছে, শহর অথবা বৃহৎ শিল্পাঞ্চলে বসবাসকারী ব্যক্তিদের ধূমপান না করলেও ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি। বিশ্বব্যাপী রাসায়নিক শিল্পের বৃদ্ধির সাথে সাথে আরও বেশি মানুষ এই ক্ষতিকর দূষণের সংস্পর্শে আসছে। এর ফলে ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ছে।
ধূমপান না করা ব্যক্তিদের ফুসফুস ক্যান্সারের ক্ষেত্রে জিনগত কারণও ভূমিকা পালন করে। কিছু জিনগত পরিবর্তন, যা বংশগতভাবে প্রাপ্ত হতে পারে, ধূমপান না করলেও ব্যক্তিদের ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ইজিএফআর (এপিডার্মাল গ্রোথ ফ্যাক্টর রিসেপ্টর), এএলকে (অ্যানাপ্লাস্টিক লিম্ফোমা কাইনেস) জিনের মিউটেশন ধূমপান না করা ফুসফুস ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এই মিউটেশনগুলি ফুসফুসে অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে, যা ক্যান্সারের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
যারা কখনও ধূমপান করেননি তাদের মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সারের একটি প্রধান ঝুঁকির কারণ হল সেকেন্ডহ্যান্ড ধোঁয়া। অর্থাৎ ধূমপায়ীদের সংস্পর্শে আসাও এই রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কার্সিনোজেনিক রাসায়নিক পদার্থ (সিলিকা, আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, নিকেল) এর সংস্পর্শে আসা, পারিবারিক ইতিহাস এবং জিনগত কারণগুলিও ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ
বুকে ব্যথা
শ্বাসকষ্ট
ক্রমাগত কাশি
আকস্মিক ওজন কমে যাওয়া
বারবার ফুসফুসের সংক্রমণ