আমাদের দেহে অস্বাভাবিক হারে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণকে নির্দেশ করে হাইপারইউরিসিমিয়া। প্রোটিনগুলো ভাঙার পর শরীরে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়।
214
যখন প্রোটিন ভেঙে যায়, তখন সেগুলিতে থাকা ‘পিউরিনস’ নামক রাসায়নিক যৌগ ভেঙে ইউরিক অ্যাসিডে পরিণত হয়।
314
শরীরে তিনটি প্রধান কারণে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে – ইউরিক অ্যাসিডের খুব বেশি উৎপাদন, ইউরিক অ্যাসিড কমে যাওয়া নিঃসরণ,অথবা এই দুটো প্রক্রিয়ার একটা সংমিশ্রণ।
414
কোনও উপসর্গ ছাড়াই শরীরে হাইপারইউরিসিমিয়া হতে পারে, কিংবা এর আনুষঙ্গিক উপসর্গ থাকতে পারে। অনেক মেডিক্যাল পরিস্থিতি আছে, যা আনুষঙ্গিক উপসর্গের সঙ্গে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধির ফল হতে পারে।
514
এর মধ্যে রয়েছে ইউরিক অ্যাসিড নেফ্রোপ্যাথি (প্রস্রাবে ইউরিক অ্যাসিডের উচ্চ মাত্রার কারণে কমা কিডনির ক্রিয়াকলাপ), গেঁটেবাত (রক্তে চলাচলকারী ইউরিক অ্যাসিডের উচ্চ মাত্রার কারণে জোড় বা গাঁটগুলিতে ইউরেট ক্রিস্টাল জমা হওয়া), এবং ইউরিক অ্যাসিড নেফ্রোলিথায়াসিস (ইউরিক অ্যাসিড কিডনির পাথর)।
614
যখন হাইপারইউরিসিমিয়ার সাথে কোনও আনুষঙ্গিক উপসর্গ না থাকে, চিকিৎসার সাধারণতঃ পরামর্শ দেওয়া হয়না, কিন্তু লাক্ষণিক (সিম্পটোম্যাটিক) হাইপারইউরিসিমিয়ার ক্লিনিক্যাল উপস্থাপনা অনুযায়ী চিকিৎসার দরকার।
714
হাইপারইউরিসিমিয়ার জটিলতার মধ্যে আছে গেঁটেবাত, অ্যাকিউট (তীব্র কিন্তু অল্পস্থায়ী) ইউরিক অ্যাসিড নেফ্রোপ্যাথি, ইউরিক অ্যাসিড নেফ্রোলিথায়াসিস, এবং ক্রনিক রেনাল ইনসাফিসিয়েন্সি (কিডনিগুলির দুর্বল ক্রিয়াকলাপ)।
814
এই ধরনের কোনও উপসর্গ টের পেলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। তবে, চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধপত্র ছাড়াও কতগুলি ঘরোয়া উপায় মেনেও ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। সেই উপায়গুলি হল:
914
প্রচুর জলপান করা। দিনে অবশ্যই ২ থেকে ২.৫ লিটার জল পান করুন। শরীরে জলের মাত্রা সঠিক থাকলে ইউরিক অ্যাসিড কম থাকবে।
1014
চর্বিযুক্ত খবার, বিশেষ করে 'রেড মিট' কম খান।
1114
বেশি চিনিযুক্ত খাদ্যদ্রব্য যেমন ক্যান্ডি (মিছরি), সেঁকা খাবার এবং মিষ্টি দেওয়া খাবারগুলি এড়িয়ে চলুন।
1214
প্রোটিনের উৎস হিসাবে কম-চর্বিযুক্ত ডেয়ারি দ্রব্য এবং ডাল খান। উচ্চ-চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত দ্রব্যগুলি কম খান।
1314
বেশি করে ফল খান , ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল বা শাকসবজি এবং দানাশস্য ইউরিক অ্যাসিড কমানোর জন্য দারুণ উপকারী।
1414
প্রত্যেকদিন নিয়ম করে ২০-৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। শরীরের ওজন ঠিক রাখা এবং ইউরিক অ্যাসিড উৎপাদন কমানো ছাড়াও, এটা হাড়ের জোড় বা গাঁটের উপর ভার কমানো এবং জোড়গুলি শক্তিশালী করতেও সাহায্য করবে।