
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম অর্থাৎ পিসিওএস-এ আক্রান্ত নারীদের জীবনে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অনিয়মিত ঋতুস্রাব, বন্ধ্যাত্ব, ওজন বৃদ্ধি, মুখে পুরুষের মতো চুল পড়া, মুখ কালো হয়ে যাওয়াসহ আরও অনেক কিছুর মুখোমুখি হতে হয় এই রোগে। কিন্তু, আপনি কি জানেন যে পিসিওএস-এ আক্রান্ত মহিলাদেরও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
পিসিওএস এবং ডায়াবেটিসের মধ্যে সম্পর্ক-
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) এবং ডায়াবেটিসের মধ্যে একটি সংযোগ রয়েছে, কারণ এই দুটি রোগই বিপাকীয় ব্যাধির কারণে হয়। অনেক মহিলা রয়েছে যাদের পিসিওএস সমস্যা আছে, খারাপ জীবনযাত্রার কারণে তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। পিসিওএস দ্বারা আক্রান্ত মহিলা যাদের BMI অর্থাৎ বডি মাস ইনডেক্স (BMI) 25-এর বেশি এবং টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও চিকিত্সকরাও বলছেন যে এটি নিরাময় করা যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অবলম্বন এবং শরীরের ভাল যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে এই ধরনের সমস্যাগুলি প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
পিসিওএস-এ কেন ডায়াবেটিস হতে পারে?
পিসিওএস-এর কারণে শরীর ইনসুলিন প্রতিরোধী হয়ে যায়, অর্থাৎ ইনসুলিন হরমোন সঠিকভাবে ব্যবহার হয় না। এর ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় এবং টাইপ টু ডায়াবেটিস হয়। গবেষণা অনুসারে, এই অবস্থায় শরীর ইনসুলিন তৈরি করে কিন্তু কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
যেসব মহিলারা জাঙ্ক ফুড বা কম ফাইবারযুক্ত খাবার গ্রহণ এবং ব্যায়াম না করার মতো জীবনযাত্রায় আসক্ত, তাদের বিএমআই বেশি থাকে। যদিও কিছু পিসিওএস এবং ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে যে নারীদের ওজন স্বাভাবিক কিন্তু তারা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রতিরোধের উপায়
১) ডাক্তারের মতে, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে মহিলাদের ৩০ বছর বয়সে তাদের ডায়াবেটিস পরীক্ষা করানো উচিত। এর মাধ্যমে, তিনি এমন কোনো ঝুঁকির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন কি না তা সময়েই জানা যাবে।
২) মহিলাদের বায়বীয় ব্যায়ামের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত, কারণ এটি মূলত ইনসুলিন নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করে।
৩) ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে ডায়েটও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনেও এই ঝুঁকি কাটিয়ে ওঠা যায়। প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে, গোটা শস্য জাতীয় খাবার খেতে হবে।
৪) বিপরীত পরিস্থিতিতে ডায়াবেটিস যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে তা চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ নিন যা মহিলাদের ইনসুলিন কমাতে সাহায্য করে।