শিশুদের মাথার চুল কামানো হিন্দু এবং ইসলামী ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। কিন্তু এর পেছনে বৈজ্ঞানিক কারণও রয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানুন।
শিশুদের মাথার চুল কামানো হিন্দু ঐতিহ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হয়। শিশু জন্মের চার মাস থেকে তিন বছরের মধ্যে এই প্রক্রিয়াটি করা হয়। ইসলামী ঐতিহ্যে, এটি ৭ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে করা হয়। শিশুদের মাথার চুল কামালে তাদের পূর্বজন্মের পাপ মোচন হয় বলে বিশ্বাস করা হয়।
কিন্তু বাস্তবে, অনেক ধর্ম এই অনুষ্ঠান পালন করে না। তাহলে, এই অনুষ্ঠানের পেছনে কোন বৈজ্ঞানিক কারণ আছে কি?
বলা হয়, কাপড় এবং চুল ছাড়া সূর্যের আলোতে থাকলে শিশুর শরীরে ভিটামিন ডি দ্রুত এবং সহজে শোষিত হয়। এমনকি ডাক্তাররাও নবজাতকদের ভোরবেলায় কাপড় ছাড়া সূর্যের আলোতে রাখার পরামর্শ দেন।
আরেকটি কারণ হল, শিশুর চুল অসমভাবে থাকে, কিন্তু মাথার চুল কামালে চুলের সমানভাবে বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে। মাথার চুল কামালে স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশে সাহায্য করে বলেও অনেকে বিশ্বাস করেন। গরমের সময় শিশুর মাথা ঠান্ডা রাখতেও মাথার চুল কামানো সাহায্য করে।
ঠিক আছে। একটি শিশুর মাথার চুল কামানোর উপযুক্ত বয়স কত জানেন? মাথার চুল কামানো নিয়ে অনেক বিশ্বাস থাকায় অনেকেরই মাথার চুল কামানোর উপযুক্ত বয়স নিয়ে দ্বিধা থাকে। শাস্ত্র অনুযায়ী, একটি শিশুর ৬ মাস বা এক বছর বয়সের পর মাথার চুল কামানো যেতে পারে। কেউ কেউ এক বছরের আগে মাথার চুল কামানোর রীতি অনুসরণ করেন। আবার কেউ কেউ ৩ বছর বয়সের পরে মাথার চুল কামানোর রীতি অনুসরণ করেন।
তবে, ডাক্তাররা শিশুর মাথার চুল কামানোর সর্বোত্তম বয়স ১ বছর থেকে ৩ বছর বলে পরামর্শ দেন। তখন শিশুর চুলের গোড়ার কাছের গ্রন্থিগুলি বন্ধ থাকে। তাই তখন মাথার চুল কামালে কোন সমস্যা হয় না বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন। এছাড়াও, শিশু জন্মের কয়েক মাসের মধ্যেই মাথার চুল কামালে তাদের হাড়ের ক্ষতি হতে পারে বলেও তারা সতর্ক করেছেন।
নিরাপদে মাথার চুল কামানোর টিপস
শিশুকে ভালো করে খাইয়ে বিশ্রাম দিতে হবে। শিশুরা সাধারণত ক্ষুধার্ত বা ঘুম পেলে অস্থির হয়ে পড়ে, এবং একটি ছোট ভুল পদক্ষেপও আঘাতের কারণ হতে পারে।
শিশুদের সাথে ভালো অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন পেশাদার নাপিত বেছে নিন।
মাথার চুল কামানোর জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলি পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত হওয়া উচিত, যাতে শিশুর সংক্রমণ না হয়।
মাথা এবং শরীরে অনেক সময় ছোট ছোট আঁশ বা চুলের টুকরো আটকে যেতে পারে। তাই মাথার চুল কামানোর পর অবশ্যই শিশুকে গরম পানিতে গোসল করাতে হবে। চুল ঠিকমতো না সরানো হলে শিশুর চোখ, নাক বা কানে ঢুকে জ্বালা করতে পারে, এটা মনে রাখা জরুরি।