সম্পর্ক বিভাগ। বিবাহ একটি সুন্দর যাত্রা। কিন্তু এই যাত্রায় অনেক সময় চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন হতে হয়। আর্থিক সমস্যা থেকে শুরু করে ছোট ছোট ভুল বোঝাবুঝি, সবকিছুই সম্পর্কে টানাপোড়েনের কারণ হতে পারে। যদিও অনেক সময় কিছু জিনিস উপেক্ষা করে দম্পতিরা। কিন্তু অনেক সময় এটি ঝগড়ার বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে, সময় থাকতে এই সমস্যাগুলির সমাধান করে আপনি আপনার সম্পর্ককে সুখী এবং মজবুত করতে পারেন।
বিবাহিত জীবনে আসা সমস্যাগুলি সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি। এর সাথে সাথে এটাও জানা উচিত যে, কীভাবে সমস্যাগুলি থেকে বেরিয়ে এসে ভালোবাসা বজায় রাখা যায়। সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা ৬-৭ টি কারণ বলেছেন যা দম্পতির মধ্যে টানাপোড়েনের কারণ হয়। আসুন জেনে নিই সেগুলি সম্পর্কে।
বিবাহের কয়েক বছর পর্যন্ত দম্পতির মধ্যে সবকিছু ঠিকঠাক চলে। কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে যোগাযোগের অভাব দেখা দেয়। যার ফলে ভুল বোঝাবুঝি বাড়তে থাকে এবং তা ঝগড়ার রূপ নেয়। অনেক সময় সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার এটিই কারণ হয়। তাই দম্পতির মধ্যে কখনোই কথোপকথনের ধারা বন্ধ হওয়া উচিত নয়। যোগাযোগকে সঠিক করার জন্য দুজন সঙ্গীরই একে অপরকে শোনার ক্ষমতা থাকতে হবে। একে অপরকে বিরক্ত না করে তাদের কথা শুনুন। তাদের কথায় প্রতিক্রিয়া দিন যাতে তারা বুঝতে পারে যে আপনি সত্যিই তাদের কথা শুনছেন। কথা বলার জন্য সময় বের করুন। তা সে ঘুমানোর সময় হোক বা সন্ধ্যার চায়ের সাথে, কথা বলা দম্পতির মধ্যে খুবই জরুরি।
ভালোবাসায় আমরা যতই বলি যে আমরা আমাদের সঙ্গীকে ভালোবাসি, কিন্তু একসাথে থাকতে থাকতে টাকা-পয়সা কথার অংশ হয়েই যায়। টাকা কোথায় খরচ হচ্ছে, বেশি টাকা খরচ করছেন বা করছেন, এই ধরনের কথা সম্পর্কে টানাপোড়েনের কারণ হতে পারে। টাকা-পয়সা নিয়ে ঝগড়া সঙ্গীর মধ্যে বিশ্বাস এবং সম্মান নষ্ট করতে পারে। টাকা-পয়সা নিয়ে কথা বলা জরুরি কিন্তু এটিকে টানাপোড়েনের কারণ হতে দেওয়া উচিত নয়। দুজনকে মিলে ঘরের বাজেট তৈরি করা উচিত। সঞ্চয়ের পরিকল্পনাও একসাথে করা উচিত।
সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতে পারে। একজনকে বেশি কাজ করার অনুভূতিও টানাপোড়েনের কারণ হয়। তাই দম্পতিদের মিলে সন্তানের দায়িত্ব পালন করা উচিত। সন্তান লালন-পালনের জন্য সময়সূচী তৈরি করুন এবং দায়িত্ব ভাগ করে নিন। পরিবারের সদস্য বা শিশু-পরিচারিকার সাহায্য নিন। একে অপরের সাথে মানসম্মত সময় কাটানোর জন্য সময় বের করুন।
বিবাহের কয়েক বছর পর্যন্ত একে অপরের সঙ্গ ভালো লাগে। কিন্তু ধীরে ধীরে একঘেয়েমি আসতে শুরু করে। যার ফলে দম্পতির মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। অনেক সময় অবৈধ সম্পর্কের কারণও এটিই হয়। তাই দম্পতিদের তাদের বিবাহিত জীবনে রোমাঞ্চ বজায় রাখা উচিত। সপ্তাহান্তে ডেট নাইটের পরিকল্পনা করুন। ৩ বা ৬ মাস অন্তর ছুটির পরিকল্পনা করুন। ছোট ছোট বিষয়ে আনন্দ খুঁজুন এবং একে অপরকে চমক দিন। আপনার সম্পর্কে নতুন স্মৃতি তৈরি করুন।
মানসিক চাপ জীবনের একটি অংশ। কাজ, টাকা-পয়সা, স্বাস্থ্য বা পারিবারিক দায়িত্ব সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই বিবাহিত জীবনে মানসিক চাপ মিলেমিশে দূর করা উচিত। দম্পতিদের একে অপরের পাশে থাকা উচিত। প্রতিটি সমস্যার সমাধান একসাথে করা উচিত। ধ্যান, যোগ বা শারীরিক কার্যকলাপ যেমন হাঁটা বা জগিং করুন। একে অপরের সহায়ক হন এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখুন।
একে অপরের থেকে বেশি প্রত্যাশা করাও দম্পতিদের জন্য খারাপ। তুমি আমার জন্য এটা করোনি। তোমার সব প্রতিশ্রুতি মিথ্যা ছিল, এই ধরনের কথা প্রায়ই দম্পতির মধ্যে হয়। ধীরে ধীরে ঝগড়ার কারণ হয়। বিবাহ মানে একে অপরের জীবনভর সাথ দেওয়া। কেউ কম বা কেউ বেশি নিজের পক্ষ থেকে করে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে তার কাজকে অবহেলা করা হবে।