
ঘুরতে যাওয়ার জন্য আমরা অনেকেই এক পায়ে রাজি। কিন্তু, বেরাতে যাওয়া যদি নিজের দেশের মধ্যে না হয়ে থাকে, তাহলে আপনি কতগুলি অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন। আগে থেকেই এই বিষয়গুলি সম্পর্কে জেনেবুঝে তারপর ঘুরতে বেরোন।
ঘোরার প্ল্যান করার আগে সর্বপ্রথম চেক করুন নিজের পাসপোর্ট। এর বৈধতা যদি ১০ বছর পেরিয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই সেটা এই মুহূর্তে রিনিউ করে নিন। মনে রাখবেন, পাসপোর্ট ১০ বছর পেরিয়ে না গেলেও যদি আপনার পাসপোর্টের পৃষ্ঠা শেষ হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলেও আপনি অন্য দেশে যাওয়ার ভিসা পাবেন না।
আপনি কোন দেশের মানুষ, সেই দেশ থেকে কোন কোন দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে যাওয়া যায়, তা নিয়ে গবেষণা করে নিন। যদি ভিসার প্রয়োজনীয়তা আবশ্যক হয়ে থাকে, তাহলে অনেক আগেই সেটির জন্য আবেদন জানিয়ে রাখা ভালো।
গন্তব্যস্থল সম্পর্কে কিছুটা পড়াশোনা করে নিন। সেখানকার ভাষা কী, মানুষজন ইংরেজি বোঝেন কিনা, সেখানে ঘুরতে গেলে আপনাকে কোনও রোগের ভ্যাকসিন নিয়ে রাখতে হবে কিনা, সবকিছু ভেবেচিন্তে তবেই ঘুরতে যান।
যে দেশে ঘুরতে যাচ্ছেন, সেই দেশের আইনকানুন সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত থাকবেন না। মনে রাখবেন, সিঙ্গাপুরে যেমন চুইংগাম বেআইনি, তেমনই ভেনিসে বেআইনি হল পায়রাদের খাবার খাওয়ানো, যদি কখনও স্কটল্যান্ডে গিয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গরুর পিঠে চড়েন, তাহলেও জেলে যেতে পারেন। বহু দেশ এমন কয়েকটি আইনে পরিপূর্ণ, যা আপনার কাছে অদ্ভুত মনে হতে পারে, কিন্তু, যদি ঘুরতে গিয়ে জেল খাটতে না চান, তাহলে একটু জেনেবুঝে চলুন।
যে দেশে যাচ্ছেন, অবশ্যই সেই দেশের পোশাকআশাক, ধর্ম, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বা সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞাত হয়ে যান। কোন মুদ্রায় জিনিসপত্র কেনা যাবে, পর্যটকদের জন্য জায়গাগুলি কতখানি নিরাপদ, পানীয় জল কোথা থেকে পাওয়া যাবে, রাস্তাঘাটে চলাচলের জন্য ট্রাফিক আইন কী কী মানতে হবে, সবকিছু সম্পর্কে জেনে যান।
বিদেশ ভ্রমণের আগে আপনাকে আপনার ব্যাঙ্কে জানাতে হবে যে, আপনি বিদেশে যাচ্ছেন। যাতে আপনার ব্যাঙ্ক প্রতারণার সন্দেহ না করে যে, আপনার কার্ডটি হঠাৎ করে এই দেশ থেকে অন্য আরেকটি দেশের বাজারে ব্যবহৃত হল কেন! ওই দেশে আপনার এটিএম-এ সহজে অ্যাক্সেস না-ও থাকতে পারে। কিছু দেশ যেগুলি মূলত নগদ অর্থনীতিতে চলে, তাদের বেশিরভাগ রেস্তোরাঁ বা ব্যবসায় কার্ড রিডার না-ও থাকতে পারে। যদি এরকম হয়, তাহলে একদিনে নিজের খরচ মেটানোর জন্য নিজের কাছে পর্যাপ্ত অর্থ রেখে দিতে ভুলবেন না।
বিদেশে ঘোরাফেরার জন্য গণপরিবহণ পরিষেবা ব্যবহার করা ভালো, এতে টাকাপয়সার সাশ্রয় হয়, অনেক মানুষের সঙ্গে কথাবার্তাও হতে পারে। গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য কোন কোন স্টপেজে নামতে হবে, তা জেনে নিন।
দীর্ঘক্ষণ বিমানে যাতায়াতের কারণে আপনার শরীরে ক্লান্তি এবং অসুস্থতা আসতে পারে। অন্য দেশের সময়ের সঙ্গেও নিজেকে মানিয়ে নিতে সময় লাগতে পারে। তার পাশাপাশি, আপনি কোনও রোগেও ভুক্তভোগী হয়ে থাকতে পারেন। সবকিছুর জন্য প্রয়োজনীয় নিত্য-ব্যবহার্য ওষুধপত্র সঙ্গে রাখুন এবং অবশ্যই পর্যাপ্ত সময়ে বিশ্রাম নিন।
যেকোনও দেশে একা ঘুরতে বের হলে বেশি রাতে নির্জন স্থান এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজন হলে ক্যাব বা বাস পরিষেবা ব্যবহার করে অতিরিক্ত সময় ধরে অন্য পথে দিয়ে ঘুরে ঘুরে ফিরুন। প্রতি মুহূর্তে নিজের বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছোট ছোট যোগাযোগ বজায় রেখে ভ্রমণপথ পাঠাতে থাকুন, যাতে আপনি কোথায় যাচ্ছেন, সেটা কেউ-না-কেউ জেনে রাখতে পারে। বাসস্থানের ঠিকানা এবং যোগাযোগের তথ্য দিয়ে রাখুন। আপনার দেশের স্থানীয় দূতাবাস কোথায় আছে, সেটাও জরুরি অবস্থার সময়ে জেনে রাখা দরকার।