IPL 2023: ধার করা ব্যাটে প্রথম শতরান, আর্থিক সঙ্কটের বাউন্সার সামলে আইপিএল-এ তিলক ভার্মা

আইপিএল-এ মুম্বই ইন্ডিয়ানসের প্রথম ম্যাচে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখালেন মিডল অর্ডার তিলক ভার্মা। অসাধারণ ইনিংসের মাধ্যমে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে গিয়েছেন এই ব্যাটার।

Web Desk - ANB | Published : Apr 3, 2023 10:19 AM IST

২ দশক আগে পর্যন্ত ক্রিকেট ছিল মূলত ধনী বা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের খেলা। আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের সন্তানদের পক্ষে ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখা সম্ভব ছিল না। কিন্তু গত ২ দশকে ভারতীয় ক্রিকেটের চেহারা বদলে গিয়েছে। ছোট শহর থেকে উঠে আসছেন ক্রিকেটাররা। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ভারতীয় দলের অধিনায়ক থাকাকালীন এই বদল শুরু হয়। আইপিএল শুরু হওয়ার পর আরও অনেক ক্রিকেটার প্রচারের আলোয় এসে গিয়েছেন। বড় মঞ্চে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন আর্থিক সঙ্কটের সঙ্গে লড়াই করে উঠে আসা ক্রিকেটাররা। তাঁদেরই একজন মুম্বই ইন্ডিয়ানসের ব্যাটার তিলক ভার্মা। রবিবার এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ৪৬ বলে ৮৪ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে ক্রিকেট বিশ্বের নজর কেড়ে নিয়েছেন এই তরুণ ক্রিকেটার। তাঁকে নিয়ে সবারই আগ্রহ তৈরি হয়েছে। 

মাত্র ২০ বছর বয়স তিলকের। এরই মধ্যে তিনি বেশ পরিণত হয়ে গিয়েছেন। তবে ছোটবেলার কোচের বকাঝকা এখনও হজম করতে হয়। সাফল্য না পেলে পুরনো কোচেরই দ্বারস্থ হন তিলক। সাফল্য এখনও তাঁর মাথা ঘুরিয়ে দিতে পারেনি। কোচকে ভোলেননি এই ক্রিকেটার। তাঁর কোচ সালাম বায়াশ জানিয়েছেন, 'একদিন বিকেলে আমি ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ বারকাস গ্রাউন্ডে দেখি কয়েকজন ছোট ছেলে টেনিস বলে ক্রিকেট খেলছে। তাদের মধ্যে একটি ছেলের ব্যাটিংয়ের ধরন দেখে অবাক হয়ে যাই। তখন তিলকের বয়স ১১ বছর। আমি ওকে জিজ্ঞাসা করি, ও কোথায় ক্রিকেট খেলা শেখে? ও বলে, এই মাঠেই খেলে। এরপর আমি ওর বাবার সঙ্গে দেখা করি। তাঁকে বলি, তিলক প্রতিভাবান। ওকে অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করানো উচিত। তিলকের বাবা নাম্বুরি নাগারাজু প্রথমে রাজি হননি। তিনি পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান। ছেলেকে ক্রিকেট খেলা শেখানোর মতো আর্থিক সঙ্গতি ছিল না। আমি বলি, তিলককে রোজ নিয়ে যাব, নিয়ে আসব। ওকে টাকা দিতে হবে না। তখন ওর বাবা রাজি হন।'

এভাবেই শুরু হয় তিলকের ক্রিকেটার হয়ে ওঠার লড়াই। রোজ কোচের বাইকে চড়ে বাড়ি থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অ্যাকাডেমিতে যাওয়া শুরু করে সে। এক বছর পর কোচের কথায় অ্যাকাাডেমির কাছে চাকরি খোঁজা শুরু করেন তিলকের বাবা। তিনি প্রত্যাশিত চাকরি পেয়েও যান। ফলে তিলকের সমস্যা কিছুটা মেটে। কিন্তু আর্থিক সমস্যা তখনও দূর হয়নি। ব্যাট, প্যাড, গ্লাভস, হেলমেট, গার্ড কেনার মতো টাকা ছিল না। অন্যদের থেকে ধার করে ব্যাট নিয়ে খেলতে হত। সেই ধার করা ব্যাটেই জীবনের প্রথম শতরান করেন তিনি। এরপর শুধুই লড়াই করে এগিয়ে চলা।

তুলনাটা হয়তো বাড়াবাড়ি, কিন্তু সচিন তেন্ডুলকরের জীবনে যেমন রমাকান্ত আচকেরকর, তিলকের কাছেও তেমনই ছোটবেলার কোচ। দেশের হয়ে খেলাই তিলকের লক্ষ্য। তাঁর কোচও সেই স্বপ্ন দেখছেন। তিনি চান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সফল হয়ে উঠুন তিলক।

আরও পড়ুন-

চোট পেয়ে হতাশা সঙ্গী করে দেশে ফিরলেন গুজরাট টাইটানসের কেন উইলিয়ামসন

ফের প্রথম ম্যাচে হার, হতাশ মুম্বই ইন্ডিয়ানসের বোলিং কোচ শেন বন্ড

শিম্পাঞ্জিকে নকল করে শরীরচর্চা যুবরাজ সিংয়ের

Read more Articles on
Share this article
click me!