সামনেই রঙের উৎসব। বসন্ত কাল। পলাশ রাঙানো পথে বসন্ত উৎসব কাটানোর থেকে বেশি রোমান্টিকতা বাঙালির জীবনে নেই। লাল মাটির রুক্ষ্ম ধুলো ওড়া পথ, শিমুল, পলাশ রাঙানো এলোমেলো দিন, গভীর অনন্ত হ্রদের শান্ত রূপ, এদিকে ওদিকে ছড়ানো ছিটানো পাহাড়, টিলা , নির্মল আকাশে চুমকি সাজানো শামিয়ানা যদি ভালো লাগে আপনাদের তাহলে ঘুরে আসুন বড়ন্তি। কলকাতা থেকে বড়ন্তি যেতে সময় লাগবে ৫-৬ ঘন্টা। আসানসোল শাখার লোকাল ট্রেনে পৌঁছতে হবে মুরাডি স্টেশন। সেখান থেকে বড়ন্তি যেতে হবে গ্রামের পথ ধরে। জয়চন্ডী পাহাড়ের নাম শুনেছি আমরা সবাই। সেই পাহাড় বড়ন্তি থেকেই ২১ কিমি দূরে। আর আমরা অনেকে এও জানি 'হীরক রাজার দেশে' ছবির শুটিং এখানে হয়েছে। উদয়ন মাস্টারমশাইয়ের সেই পাহাড়ের গুহায় লুকিয়ে থাকার দৃশ্যের শুটিং হয়েছে এইখানেই। তাই এই জায়গা ঘিরে আমাদের বাঙালিদের নস্টালজিয়া অনেকখানি।
এই ছোট্ট গ্রাম পুরুলিয়া জেলার সানতুরি ব্লকে অবস্থিত। বড়ন্তির একদিকে আছে রয়েছে বিহারিনাথ পাহাড়, কাছেই গড়পঞ্চকোট, অন্যদিকে পাঞ্চেত ড্যাম। এখান থেকে ঘুরেই আসতে পারেন কল্যাণেশ্বরী মন্দির। আর হ্যাঁ যারা ট্রেক করতে ভালোবাসেন, আর হাতে যদি সময় থাকে তাহলে করে আসুন ট্রেক, কাছের দন্ডাহিত পাহাড় থেকে। তবে সঙ্গে স্থানীয় পথপ্রদর্শক থাকলে সুবিধে হবে, চিনতে চিনতে যাবেন নিশ্চিন্তে। আর যদি কোথাও না যেতে চান তাহলে বড়ন্তি নদীর পাড়ে বসুন, পলাশ ফুলের আগুন মাখা সূর্যাস্ত দেখুন। ওই লালচে আবির কীভাবে পাহাড়ের মাথায় টিপ পরিয়ে গড়িয়ে পড়ছে ধীরে ধীরে- সে দৃশ্য দেখে মনের ক্লান্তি দূর হবেই হবে। যদি দোল্পূর্ণিমায় যান বড়ন্তি তাহলে রামচন্দ্রপুর জলাধারে জলে রুপোলি জোছনা তৈরি করবে মায়া, মোহ। আমাদের ঘরের কাছেই, কম টাকা খরচ করে এমন এমন জায়গায় আমরা যেতে পারি যেখানে গিয়ে বিস্মিত হই বারবার।
কোথায় থাকবেন- অনেক রিসর্ট আছে এখানে, আকাশমণি, পলাশ বাড়ি, লেক হিল রিসর্ট, বরন্তি ভিলেজ রিসর্ট প্রভৃতি। বড়ন্তি ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড নেচার স্টাডি হাট রয়েছে, থাকতে পারেন সেখানেও। যাওয়ার আগে ঘর বুক করে নেওয়াই শ্রেয়।
কীভাবে যাবেন-হাওড়া চক্রধরপুর প্যাসেঞ্জারে করে চলে যান আদ্রা জংশন। আদ্রা থেকে লোকাল ট্রেনে চলে আসুন মুরাডি। অথবা যেকোনও ট্রেনে চলে আসতে পারেন আসানসোল, সেখান থেকে লোকাল ট্রেনে মুরাডি, যা আগেই জানিয়ে দিয়েছি। মুরাডি থেকে.৬ কি.মি দূরে গাড়ি করে পৌঁছে যান বড়ন্তি।