ঘুরে আসুন ইতিহাসের গন্ধমাখা ব্রিটিশ বাংলো, চা বাগান আর রঙিন অর্কিডের দেশ তাকদা

দার্জিলিং জেলায় অবস্থিত তাকদা ছবির মতো সুন্দর একটি গ্রাম
তাকদার সবচেয়ে বিখ্যাত জায়গা হল অর্কিড হাউস
ব্রিটিশ আমলের বেশ কিছু হেরিটেজ বাংলো আছে এখানে, যাদের বয়স কম করে একশো পূর্ণ হয়ে গেছে
লামাহাট্টা, দুরপিন, পেশক, মংপু, ছোটো মাংওয়া ইত্যাদি সুন্দর সুন্দর হ্যামলেট তাকদার কাছেই অবস্থিত

দার্জিলিং জেলায় এমন অনেক জায়গা আছে যে জায়গার নাম সকলে শোনেননি অথচ সেই জায়গায় পৌঁছলে মায়ায় জড়াবেন অবলীলায়। বেড়ানো মানে ভিড়, রোজের ছুটে চলা, একই কাজ, ট্রামে বাসে ঝুলে গন্তব্যে পৌঁছনো আবার হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে বাড়ির রাস্তা ধরা এসমস্ত কিছুর থেকে ছুটকারা। এই পাহাড়ি গ্রামগুলোয় আছে দু দন্ড শান্তি, নির্জনতা, উন্মুক্ত প্রকৃতি , বিশুদ্ধ বাতাস আর আনন্দ। লেপচা ভাষায় নাকি তাকদা শব্দের অর্থ মেঘে ঢাকা বা কুয়াশায় ঘেরা । এখানে নেমে আসে কুয়াশা যখন তখন, তারপর সবুজ চা বাগিচা, বড়ো বড়ো পাইন গাছের সারি, পাথুরে সুপ্রাচীন রাস্তা, ইতিহাসের গন্ধ মাখা ব্রিটিশ বাংলো তখন ঢেকে যায় কুয়াশা চাদরে। মেঘও ঘিরে ফেলে সবুজ ঢেউ খেলানো চা বাগান, পাহাড়ি উপত্যকা।
তাকদার সবচেয়ে বিখ্যাত জায়গা হল অর্কিড হাউস। এই উপমহাদেশের অন্যতম সেরা সেরা অর্কিডের সন্ধান মিলবে এখানে। সমগ্র অর্কিড বাগান ঘুরে দেখতে সময় লাগবে এবং বিশাল সবুজ ক্যানভাসের মাঝে অদেখা, অজানা অর্কিড দেখে ভালো লাগবেই সবার। 
ব্রিটিশ আমলের বেশ কিছু হেরিটেজ বাংলো আছে এখানে, যাদের বয়স কম করে একশো পূর্ণ হয়ে গেছে। ব্রিটিশ আর্মি অফিসাররা ভালোবেসে ফেলেছিলেন এই জায়গা, তাদেরই বাংলোগুলো এখন ইতিহাসের অধ্যায় বুকে নিয়ে রয়ে গেছে। কোনও কোনও বাংলোর তলায় নাকি আছে ব্রিটিশ বাঙ্কার! ইউরোপিয়ান ক্লাব রয়েছে এখানে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ঝাউবাংলোর রহস্য পড়তে পড়তে যেমন জায়গা কল্পনা করে পাঠক ঠিক তেমন  ঝাউবাংলো রয়েছে তাকদার কাছেই। এছাড়া রয়েছে 'সোনপুর হাউস', বিহারের বিখ্যাত সোনপুর মহারাজের এক সময়কার ছুটি কাটানোর বাংলো এটি। তবে এ বাংলোটিও নির্মিত হয়েছে কলোনিয়াল স্থাপত্য রীতি মেনে।  ব্রিটিশ ক্যান্টনমেন্ট এরিয়া হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে তাকদা সেই উনিশ শতকে। আর এখন হেরিটেজ ট্যুরিসিম সাইট হিসেবে জায়গাটিকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। 
তাকদার কাছেই আর একটি নামকরা জায়গা হচ্ছে রংলি রংলিয়ত চা বাগান। যা পর্যটকরা তিনচুলে, ছোটো মাঙ্গওয়া থেকেও দেখতে আসেন। অপূর্ব সুন্দর চা বাগান এটি, যেমন নাম তেমন ছবির মতো জায়গা। এছাড়াও ভঞ্জংবাজার ক্রশিং ভিউ পয়েন্ট থেকে পর্যটকরা দেখতে পাবেন কালিম্পং, দুরপিন, টাইগার হিল, রাম্বি খোলা প্রভৃতি । মাত্র তিন কিমি দূরেই তিনচুলে। তিনচুলের নাম সবারই জানা এখন। তিনচুলে যারাই গেছে তারা জানেন এখান থেকে তিস্তা ও রংগিত নদীর সংগম স্থল কি অসামান্য দৃশ্য। তাকদা থেকে ১২/১৪ কিলোমিটারের মধ্যেই আপিনি দেখে নিতে পারবেন লামাহাট্টা, দুরপিন, পেশক, মংপু, ছোটো মাংওয়া ইত্যাদি সুন্দর সুন্দর হ্যামলেট। বারব্যাটে হ্যাঙ্গিং ব্রিজ যেতে হলে তিস্তা ভ্যালি থেকে যেতে হবে খানিকটা। সময় লাগবে প্রায় একঘন্টা। তারপর ঢালু পাহাড়ি পথে হেঁটে আরো কিছুটা। পথের ধারে সবুজ গাছের সারি, তারপর ঝুলন্ত ব্রিজ, নীচে ছুটে চলা ঝর্না। 
এমন পাহাড়ি গ্রামে ছুটি কাটানোর অভিজ্ঞতা পূর্ণ হয়ে ওঠে যখন পায়ে হেঁটে, জঙ্গলের গন্ধ গায়ে মেখে নিজের ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়ানো যায়। গাছের ফাঁক গলে আসা সোনালি রোদ, পাখির ডাক, বুক ভর্তি অক্সিজেন নিয়ে নিজেকে নতুন খুঁজে পাওয়া যায়। 

কীভাবে যাবেন- নিউ জলপাগুড়ি থেকে তাকদার দূরত্ব ৯০ কিমি। আর দার্জিলিং থেকে ৩০ কিমি। নিউ জলপাগুড়ি স্টেশন থেকে ভাড়া গাড়িতে বা শেয়ার জিপে করে পৌঁছে যান তাকদা।

Latest Videos

কোথায় থাকবেন- অনেকগুলো ব্রিটিশ বাংলো আছে এখানে। এই বাংলোগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে আগে থেকে বুক করে রাখুন।


 

Share this article
click me!

Latest Videos

'একত্রিত হতে হবেই, ওরা ৫০ পেরলেই শরিয়া আইন চালু করবে' গর্জে উঠলেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | News
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury