আমেরিকার প্রথম মহিলা হিসেবে মহাকাশে পা রেখেছিলেন তিনি
৩৬ বছর পর তিনিই মহাসাগর অভিযানের গৌরব অর্জন করলেন
নজিরবিহীন এই গৌরব অর্জনের অধিকারী একমাত্র ক্যাথি সুলিভান
৬৮ বছরের নবীনা ১০ ঘণ্টার অভিযানে মহাসাগরের সবচেয়ে গভীরে পৌঁছন
এ পর্যন্ত মহাকাশ অভিযানে সফল হয়েছেন অন্তত সাড়ে পাঁচশো জন। তবে মহাসাগরের সবচেয়ে গভীরতম স্থান চ্যালেঞ্জার ডিপ-এ পৌঁছতে পেরেছেন মাত্র আটজন মানুষ। তবে সফল মহাকাশ ও মহাসাগর অভিযানের নজিরবিহীন গৌরব অর্জনের অধিকারী হয়েছেন মাত্র একজনই, তিনি ক্যাথি সুলিভান। প্রথম মহিলা হিসেবে মহাকাশে হাঁটার পর ৬৮ বছরের ক্যাথি সুলিভান পৌঁছলেন মহাসাগরের গভীরতম এলাকায়।
গবেষণা অনুযায়ী চ্যালেঞ্জার ট্রেঞ্চ পৃথিবীর গভীরতম এলাকা। ক্যাথি সুলিভান ওই গভীরতম এলাকায় প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় অতিবাহিত করেন। মারিয়ানা ট্রেঞ্চের ভিতর দিয়ে প্রায় ৭ মাইল গিয়েছিলেন অভিযাত্রী ক্যাথি সুলিভান। ওই এলাকাটির অবস্থান গুয়ামের ২০০ মাইল দক্ষিণ পূর্বে।
একটি বিশে ডুবো জলযান থেকে তিনি ওই এলাকার ছবিও তোলেন। এই পর্বে মোট চার ঘণ্টা লেগেছে তাঁদের নামতে ৷ নিজেদের জাহাজে ফেরার সময় তাঁরা আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে থাকা মহাকাশচারীদের সঙ্গে কথা বলেন ৷ যাঁরা পৃথিবীর থেকে ২৫৪ মাইল দূরে ছিলেন ৷
মারিয়ানা ট্রেঞ্চে অবস্থিত চ্যালেঞ্জার ডিপে পৌঁছানোর অভিযান ‘রিং অব ফায়ার’ ছিল অ্যাডভেঞ্চার কোম্পানি আইয়োস ও সমুদ্রের নীচের প্রযুক্তি স্পেশালিস্ট প্রতিষ্ঠান ক্যালাদান ওশানিকের যৌথ আয়োজন। তিনজন নির্ভীক অভিযাত্রীকে আমন্ত্রণ জানায় আইয়োস, যাকে তারা বলছেন ‘মিশন স্পেশালিস্টস’। তিনজনের মধ্যে ক্যাথি সুলিভানই ১০ ঘণ্টার এই দীর্ঘ অভিযানে মহাসাগরের সবচেয়ে গভীরে পৌঁছন।
ক্যাথি সুলিভান অভিযান করেন ১১. ৫ টন ওজনের সমুদ্রযান লিমিটিং ফ্যাক্টর বা বিশ্বের একমাত্র যান যা কিনা বারবার মহাসাগরের যে কোনও গভীরে ডুব দিতে পারে; এমন একটি বিশেষ সমুদ্রযানে। মিশন সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া হলেও বলা হয়, এটা এভারেস্ট পর্বতে আরোহন কিংবা মহাকাশে অভিযানের মতো নয়। এতে অংশগ্রহণের জন্য অ্যাথলিট হওয়ারও কোনও প্রয়োজন নেই। এটা অনেকটাই নতুন তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
অভিযাত্রী মহাসাগরের নীচে যাওয়ার আগে সেখানকার জলের তাপমাত্রা, লবনাক্ততা এবং অন্যান্য অবস্থা জানতে বৈজ্ঞানিক যান ‘ল্যান্ডার্স’ পাঠানো হয়। ল্যান্ডার্স সঠিক জায়গায় পৌঁছানোর পর অভিযাত্রী জলের নীচে অভিযান শুরু করেন।
সুলিভান ১৯৮৪ সালে স্পেস শাটল চ্যালেঞ্জারে প্রথম আমেরিকান মহিলা হিসেবে মহাকাশে পৌঁছে ইতিহাস গড়েছিলেন। নাসা ক্যারিয়ারে এরপর আরও দুটি মিশনে নাম লেখান সুলিভান। ১৯৯০ সালে স্পেস শাটল ডিসকভারিতে এবং ১৯৯২ সালে স্পেস শাটল আটলান্টিসেও অন্যতম অভিযাত্রী হিসেবে ছিলেন তিনি। পরে তিনি ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়ে তাঁর মহাসাগরের অধ্যায় শুরু করেন।