প্রথমবারের পাইলট ছাড়াই উড়ল মার্কিন ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার (Black Hawk Helicopter)। কেন্টাকি থেকে একটি পরীক্ষামূলক উড়ানের জন্য ব্যবহার করা হয় কম্পিউটার সিমুলেশন।
মার্কিন ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার (Black Hawk Helicopter)। সেই ১৯৭২ সাল থেকে মার্কিন সেনাবাহিনীর (USA Army) অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এই ট্য়াক্টিকাল ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্র্যাফ্টগুলি। গত সপ্তাহের এই মার্কিন কপ্টার অটোমেশন এবং সামরিক ক্ষেত্রে ইতিহাস গড়ল। গত ৫ ফেব্রুয়ারি, প্রথমবারের জন্য কেন্টাকি প্রদেশে কোনও পাইলট ছাড়াই উড়ল এই হেলিকপ্টার। রয়টার্স জানিয়েছে, পাইলটবিহীন হেলিকপ্টারটি প্রায় ৪০০০ ফুট উচ্চতায় প্রতি ঘণ্টার ১১৫ থেকে ১২৫ মাইল বেগে প্রায় ৩০ মিনিট ধরে ওড়ে। মার্কিন সেনা জানিয়েছে, এই পরীক্ষামূলক উড়ান সফল হয়েছে।
এই পরীক্ষামূলক ঐতিহাসিক উড়ানের জন্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি প্রদেশে কম্পিউটর প্রয়ুক্তি ব্যবহার করে একটি আস্ত ছদ্ম শহর তৈরি করা হয়েছিন। সেই কাল্পনিক বহুতলগুলি এড়িয়ে এগিয়ে যায় মার্কিন কপ্টারটি। অথচ, সেই সময় ককপিটে কেউ নেই। এর জন্য বিশেষভাবে সজ্জিত একটি সিমুলেটেড সিটিস্কেপ তৈরি করা হয়েছিল। ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম এই পরীক্ষামূলক উড়ান পরিচালনা করা হয়েছিল। পপুলার সায়েন্সের রিপোর্ট অনুসারে গত সোমবার ওই একই হেলিকপ্টার দিয়ে আরেকটি সিমুলেটেড স্বায়ত্তশাসিত ফ্লাইট উড়ান পরীক্ষা করে হয়েছিল। এর দুদিন পর আরও একবার পাইলট ছাড়া ব্লক হক হেলিকপ্টার ওড়ানো হয়। তবে, সেই উড়ডান সম্পর্কে কোনও তথ্য শেয়ার করা হয়নি।
ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার প্রতি ঘন্টায় ৩৭৫ কিলোমিটার গতিপবেগে উডডতে পারে। অপারেশনল সীমা ৫৮৩ কিলোমিটার। ৯৯৭৯ কিলোগ্রাম পর্যন্ত ওজন বহনের ক্ষমতা রাখে এই কপ্টার। সাধারনত এই হেলিকপ্টার দুজন মিলে চালাতে হয়ষ ইঞ্জিনও রয়েছে দুটি। একেকটি ব্ল্যাক হক কপ্টারের দাম ২ কোটি ১৩ লক্ষ মার্কিন ডলার।
আমেরিকার পাশাপাশি জাপান, কলম্বিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ইজরায়েল, ব্রাজিল, চিন, ফিলিপিন্স, সুইডেন এবং তুরস্কের সেনা এবং বায়ুসেনা এই হেলিকপ্টর ব্যবহার করে। কয়েকদিন আগে অস্ট্রেলিয়াও ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার কেনার জন্য আমেরিকার সঙ্গে চুক্তি করেছে। আফগানিস্তানের তালিবানদের কাছেও ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার রয়েছে। যদিও তার সংখ্যা যথেষ্টই কম বলে দাবি আমেরিকার।
অ্যালিয়াস নামে একটি মার্কিন প্রতিরক্ষা গবেষণার অংশ হিসাবে সম্পূর্ণ কম্পিউটার-চালিত এই উড়ান পরীক্ষা করা হয়। কেনটাকির ফোর্ট ক্যাম্পবেল থেকে ওই পরীক্ষা চালানো হয়। আলিয়াসের প্রোগ্রাম ম্যানেজার স্টুয়ার্ট ইয়ং বলেছেন, এই ধরনের স্বায়ত্তশাসিত উড়ান প্রযুক্তির লক্ষ্য হল অতিরিক্ত নিরাপত্তা। তাছাড়া ইন-ফ্লাইট সহায়তা এবং খরচ কমানোর লক্ষ্যে এই পরীক্ষা করা হচ্ছে৷
এই প্রযুক্তি পুরোপুরি ব্যবহার শুরু হলে সেনাবাহিনী তাদের অভিানের ক্ষেত্রে অনেক বেশি নমনীয়তা পাবে। দিনে হোক কি রাতে, পাইলট থাকুক কি না থাকুক - বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতিতে বিমান বা হেলিকপ্টার পরিচালনা করতে সক্ষম করবে এই প্রযুক্তি।