কোভিড পরীক্ষাও হতে পারে প্রাণঘাতি
এমনটাই ঘটল এক মার্কিন মহিলার ক্ষেত্রে
সোয়াব টেস্টের পরই নাক থেকে বের হচ্ছিল তরল
শেষ পর্যন্ত কীভাবে রক্ষা পেলেন তিনি
শুধু করোনাভাইরাস নয়, কোভিড হয়েছে কি হয়নি, তা জানার পরীক্ষাও হতে পারে প্রাণঘাতি। করোনাভাইরাস পরীক্ষা করাতে এসেছিলেন এক মহিলা। কিন্তু, সোয়াব পরীক্ষা করতে গিয়ে প্রাণটাই প্রায় চলে যাওয়ার উপক্রম। বিস্ময়কর এই ঘটনার কথা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ওই মহিলার শেষ পর্যন্ত করোনা ধরা পড়েছে কি না তা জানা যায়নি, তবে পরীক্ষা করাতে গিয়ে ওই মহিলার মাথার খুলি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে আমেরিকায়। ৪০ বছর বয়সী ওই মহিলা স্থানীয় এক হাসপাতালে কোভিড টেস্ট করিয়েছিলেন। তারপরই তাঁর নাকের মধ্যে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয় এবং নাক থেকে এক ধরণের তরল বের হতে শুরু করেছিল। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করতে গিয়ে জানতে পারেন, লালারসের নমুনা সংগ্রহের জন্য যখন তাঁর নাকের মধ্য দিয়ে সোরাব প্রবেশ করানো হয়েছিল, সেটির আঘাতেই তাঁর মাথার খুলির বাইরের প্রাচীরের একটা অংশের ক্ষতি হয়েছিল। এই কারণেই নাকের ফুটো দিয়ে ব্রেন ফ্লুইড বা মস্তিষ্ক নিঃসৃত তরল বেরিয়ে আসছিল।
তবে বিষয়টি ধরা পড়ার পরই খুলির প্রাচীরের ওই ক্ষত মেরামতের জন্য চিকিৎসা শুরু করেছিলেন মার্কিন ডাক্তাররা। এখন ওই মহিলার অবস্থার দ্রুত উন্নতি হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। তবে চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেছেন, যদি সঠিক সময়ে তাঁর চিকিত্সা না করা হতো, তবে তাঁর মস্তিষ্কে প্রাণঘাতী সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে হাসপাতাল ও পরীক্ষাকেন্দ্রের যে কর্মীরা নমুনা সংগ্রহ করছেন, তাঁদের এই প্রক্রিয়াটি আরও ভালোভাবে শেখানো দরকার বলে মত দিয়েছেন তাঁরা।
চিকিৎসকদের মতে এই বিষয়ে শুধুমাত্র পেশাদারদের স্বাস্থ্যকর্মীদেরই কাজে লাগানো উচিত। সেইসঙ্গে নমুনা সংগ্রহকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের জেনে নিতে হবে রোগীদের অতীতের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যাদি। বিশেষত যেসব রোগীদের ক্ষেত্রে খুলিতে কোনও অস্ত্রোপচার হয়েছে কিংবা সাইনাসের সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে সোয়াব প্রবেশ করানোর ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। রোগীদের স্বাস্থ্যের ইতিহাস অনুযায়ী কোভিড পরীক্ষার প্রোটোকলগুলি পরিবর্তন করতে হবে।
তবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার জন্য সোয়াব টেস্টের প্রক্রিয়াটি কিন্তু মোটেই বেদনাদায়ক নয়। তবে অনেকের কাছেই অস্বস্তির মনে হতে পরে। সোয়াবটি নাকের ফুটো দিয়ে একেবারে শ্বাসনালী পর্যন্ত প্রবেশ করানো হয় বলে, নাকের ভিতরে এমন অনেক স্নায়ুকে তা স্পর্শ করে, যার থেকে অশ্রু বা বমনের উদ্রেক হতে পারে। কিন্তু, প্রক্রিয়াটিতে ৫ সেকেন্ডেরও কম সময় লাগে।