একেবারে খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তির পদটায় তাঁর টিকে থাকাটা এখন পুরোটাই নির্ভর করছে মার্কিন সংসদের উচ্চকক্ষ অর্থাৎ সেনেটের উপর। নিম্নকক্ষ অর্থাৎ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ইমপিচড বা অভিশংসিত করেছে। এবার সেনেটের বিচারের উপর তাঁর প্রেসিডেন্ট পদে থাকাটা নির্ভর করছে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে - ১, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের অপব্যাবহার করেছেন। ২, তিনি মার্কিন কংগ্রেসের কাজে বাধা দিয়েছেন। দুটি অভিযোগেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়েছে অভিযোগের পক্ষে। ফলে দুটি ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এবার অভিযোগের ভিত্তিতে সেনেটে হবে বিচার। এক মাসের মধ্যেই এই বিচার শুরু হওয়য়ার কথা। ট্রাম্প-এর দোষী সাব্যস্ত হওয়ার জন্য দুই তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন। তবে ট্রাম্প এই যাত্রা টিকে যাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ নিম্নকক্ষে ডেমোক্র্যাট-দের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও মার্কিন সেনেটের নিয়ন্ত্রণ কিন্তু রিপাবলিকানদের হাতে। এমনিতেই আর এক বছর পরেই ফের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগে রিপাবলিকানদের কেউ প্রেসিডেন্টকে সরাতে চাইবেন না বলেই আশা করছে হোয়াইট হাউস।
সেনেটে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচারসভার সভাপতিত্ব করবেন মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। সেনেটররা জুরি সদস্য হিসাবে কাজ করবেন। তাঁর প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প সেনেটে একজন আইনজীবী-কেও নিয়োগ করতে পারবেন। বিচার প্রক্রিয়ার শেষে সেনেট ভোট দেবে। সেনেটের দুই-তৃতীয়াংশ যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প-কে দোষী সাব্যস্ত করে, তবে তাঁকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরতে হবে। ভাইস-প্রেসিডেন্ট মেয়াদের অবশিষ্ট সময় প্রেসিডেন্টের ভূমিকা পালন করবেন।
১০০ সদস্যের মার্কিন সেনেটে রিপাবলিকান পার্টির দখলে রয়েছে ৫৩টি আসন। কাজেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে যদি তা হয় সেই ক্ষেত্রে কিন্তু ইতিহাস গডড়বেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৪০ বছরের ইতিহাসে মাত্র ট্রাম্পকে নিয়ে ৩জন প্রেসিডেন্ট ইমপিচড হয়েছেন, কিন্তু কেউ প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসৃত হননি। ওয়াটারগেট-এর সময় প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এই অবস্থার খুব কাাকাছি এসেছিলেন কিন্তু মামলাটি শেষ হওয়ার আগেই তিনি পদত্যাগ করেন। ট্রাম্পের সেই ইতিহাস গড়েন কি না সেটাই এখন দেখার।