ধীরে ধীরে বাঁচার রসদ ফুরিয়ে আসছে পৃথিবীতে। অনেক বিজ্ঞানী বলছেন, কয়েক শতকের মধ্যেই হয়তো পৃথিবী থেকে পাত্তারি গোটাতে হবে মানুষকে। নতুন সভ্যতা গড়ে তুলতে হবে চাঁদে, মঙ্গলে অথবা আরও দূর কোনও গ্রহে। কিন্তু, ভিন গ্রহের সেই বাড়ি কেমন হবে তা কখনও ভেবে দেখেছেন? কল্পবিজ্ঞানের গল্প-সিনেমায় দেখা যায়, ভিনগ্রহে মানুষ থাকে কাচ বা ধাতুর তৈরি গম্বুজ বা অন্য আকারের বাড়িতে। তবে নাসা বলছে কাচ বা ধাতু দিয়ে নয়, চাঁদ-মঙ্গলে মানুষের ভবিষ্যতের বাড়ি তৈরি হবে ব্যাঙের ছাতার মতো ছত্রাক দিয়ে।
নাসা-র মাইকো-আর্কিটেকচার প্রকল্পের প্রধান লিন রথচাইল্ড বলেছেন, এখনও পর্যন্ত চাঁদ বা মঙ্গলে বসতি স্থাপনের বিষয়ে, বাড়ি তৈরির সবব সামগ্রী সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হয়। এতে খরচা হবে বিপুল। তাই নাসা এমন কিছুর কথা ভাবছে, যা অল্প পরিমাণে ভিনগ্রহে নিয়ে গিয়ে, সেখানেই বড় করা যেতে পারে। এই ভাবনা নিয়েই গবেষণা চলছে ছত্রাকের মূল অর্থাৎ মাইসেলিয়া নিয়ে। এই মাইসেলিয়া চোখে দেখা যায় না। মাটির নিচে অজান্তেই জালের মতো বেড়ে চলে।
এই প্রকল্প সফল হলে, ভবিষ্যতে মহাকাশচারীদের আর পৃথিবী থেকে আবাসের পুরো মালপত্র বহন করতে হবে না। পরিবর্তে কেবলমাত্র মৌলিক কাঠামোটি নিয়ে গিয়ে জল দিতে হবে। আর ছত্রাকের বৃদ্ধির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এখনও পর্যন্ত প্রকল্পটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে, গবেষকরা এখনই মাইলসিলিয়া থেকে টুল এবং চেয়ারের মতো টেকশই আসবাব তৈরি করেছেন। সময় লেগেছে মাত্র কয়েক সপ্তাহ।
মাইসেলিয়া ভিত্তিক এই বাড়িগুলি হবে তিন স্তরযুক্ত গম্বুজ। একেবারে বাইরের স্তরটি তৈরি করা হবে বরফ দিয়ে। তাতে বিকিরণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। মাঝের স্তরটি তৈরি করা হবে সায়ানোব্যাকটিরিয়া দিয়ে। সেখান থেকে অক্সিজেন পাওয়া যাবে। তাতে খাদ্য পাবে মাইলসিলিয়া। যা দিয়ে তৈরি হবে একেবারে ভিতরের স্তরটি। মাইসেলিয়া ইতিমধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ অপরিবাহী এবং অগ্নি প্রতিরোধকারী হিসাবে ব্যবহৃত হয়।