খেয়াল পড়ে এই মহিলাকে, এই দিনেই কল্পনা-সহ সাত নভোশ্চরকে নিয়ে ভেঙে পড়েছিল কলম্বিয়া

  • যাত্রার শুরুতে ১৮ বার  বাতিল হয়েছিল কলম্বিয়া 
  • যাত্রা শুরুর ৮২ সেকেন্ডেই আঘাত লাগে বাঁ পাখায় 
  • নিরাপত্তা বিভাগের গোয়েন্দা স্যাটেলাইটের সাহায্য নেওয়া হয়নি
  • বিপদের সম্ভাবনা বুঝেও খুব বেশি আমল দেয়নি  

অ্যাপোলো-১১ মিশনের কমান্ড মডিউলের নামও ছিল কলম্বিয়া। স্পেস শাটল কলম্বিয়া  নামের প্রেরণা ছিল সেই কমান্ড মডিউলটিও। ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত কলম্বিয়া ২৭ বার মহাকাশে গিয়েছিল এবং পৃথিবীতে ফিরেছিল। কিন্তু ২৮ বারে সে ভেঙে পড়ে।

২০০৩-এর ১৬ জানুয়ারি কলম্বিয়া রিক হাসবেন্ড-এর নেতৃত্বে সাত বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী সমেত ১৬ দিনের যাত্রা করে। ৫ জন আমেরিকান ও একজন ইসরায়েলি সবাই বিমানবাহিনী কিংবা নৌবাহিনীর সদস্য। একমাত্র ভারতীয় বংশোদ্ভূত কল্পনা চাওলাই কোনও সামরিক বাহিনীর নিয়মিত সদস্য ছিলেন না। 

Latest Videos

যাত্রা শুরু থেকেই বিপত্তি ছিল সঙ্গী। ১১ জানুয়ারি যাত্রা শুরুর কথা থাকলেও ১৮ বার তা বাতিল হয়।  শেষপর্যন্ত ১৬ জানুয়ারি মহাকাশে যাত্রা করে কলম্বিয়া। কিন্তু ৮২ সেকেন্ড পরেই স্যুটকেসের মতো একটি রিফ্যাক্টরি ফোম খসে গিয়ে আঘাত করে কলম্বিয়ার বাঁ পাখায়। সেই মুহূর্তে কলম্বিয়ার গতি ছিল বাতাসের গতির থেকেও আড়াই গুণ বেশি, উচ্চতা ছিল মাটি থেকে প্রায় বিশ কিমি ওপরে।

আগেও কলম্বিয়ার ফোম বেশ কয়েকবার খুলে পড়েছিল। তাই খুব একটা পাত্তা দেওয়া হয়নি। নাসার ম্যানেজমেন্ট ও টেকনোলজি দফতর নিজেদের ভেতর বিপদের সম্ভাবনা নিয়ে বেশ কয়েকবার আলোচনা করে। কিন্তু আগের অভিজ্ঞতার কারণে তারা খুব বেশি আমল দেয় না। তবে অস্বাভাবিকতা শুরু হয় ১ ফেব্রুয়ারি, যেদিন কলম্বিয়ার পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা। ওই দিন সকাল ৮টা ৪৪ মিনিটে কলম্বিয়া পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করে। প্রথম পাঁচ মিনিট স্বাভাবিকভাবে নামার পরই কলম্বিয়া এমন এলাকায় প্রবেশ করে যেখানে তাপ ১,৬৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। সেই এলাকা পার হওয়াই ছিল বিপদজ্জনক। হলও তাই। 

ঠিক তিন মিনিট পর থেকে শুরু হয় অস্বাভাবিকতা। পর্যবেক্ষকরা  লক্ষ্য করেন কলম্বিয়ার লেজের দিক ভীষণ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। কয়েক সেকেন্ড পরেই নাসার মিশন পরিচালকরা কলম্বিয়ার বাঁ পাখার সেন্সরে গোলমাল লক্ষ্য করেন। ঠিক ৮টা ৫৯ মিনিটের মাথায় মিশন কন্ট্রোল থেকে কলম্বিয়ার যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তার পরের  মুহুর্তেই টেক্সাসের আকাশে ভেঙে পড়ে কলম্বিয়া। টিভি ফুটেজেও কলম্বিয়ার টুকরো টুকরো হয়ে পড়ার দৃশ্য ধরা পড়ে। 

সেই দুর্ঘটনার কারণ ছিল গোদা বাংলায় ফোমের পাখায় আঘাত আর তার থেকে তৈরি হওয়া ক্ষত। যদিও ব্যাপারটা এতটা সরল নয়। আবার পুরো ব্যাপারটা ওখানেই শেষ নয়। আসল কারণ হল পূর্বাভিজ্ঞতার  ওপর বেশি জোর দিয়ে বিপদের সব সম্ভাবনা সরিয়ে রাখা হয়েছিল। এছাড়া সবচেয়ে বড় ভুল ছিল নিরাপত্তা বিভাগের গোয়েন্দার স্যাটেলাইটের সাহায্য না নেওয়া। নিলে হয়ত কলম্বিয়াকে রক্ষা করার সুযোগ থাকত। কলম্বিয়াকে আরও কিছুদিন মহাকাশে রেখে পাখার ক্ষতিগ্রস্থ অংশটি মেরামত করা যেত। কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারার কারণে নাসার ম্যানেজমেন্ট কমিটিকে কঠোর সমালোচনার সামনে পড়তে হয় । বহিষ্কার হওয়া ছাড়াও শাস্তি পান পুরো মিশনের পরিচালনায় থাকা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

কলম্বিয়া পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশের পর বাঁ পাখার ক্ষতিগ্রস্থ জায়গায় তাপের কারণে চাপ বেড়ে যাচ্ছিল। অতিরিক্ত চাপে ক্রমেই বাঁ পাখার সব কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যেতে থাকে। একসময় বাঁ পাখার তাপ ও চাপ সহ্য করার ক্ষমতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায় এবং কলম্বিয়া ভেঙে টুকরো টুকরো টুকরো হয়ে যায়।

Share this article
click me!

Latest Videos

টোটোর ভাড়া চাইতেই এইরকম কাণ্ড! দেখলেই আঁতকে উঠবেন, চাঞ্চল্য Malda-এ | Malda News Today
গভীর রাতে ধানক্ষেতে ভয়াবহ দৃশ্য! শিউরে উঠবেন আপনিও, আতঙ্কে গোটা Jaynagar, দেখুন | South 24 Parganas
সীমান্তের নিরাপত্তা হুমকির মুখে! Bangladeshi Infiltration কবে থামবে? | Gede Border | Rohingya
কি বললেন? সুকান্তকে পাল্টা জবাব দিলেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | Sukanta Majumdar | Bangla News
বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে এ কী করলো নাবালিকার সঙ্গে! চমকে যাবেন আপনিও, চাঞ্চল্য Nabadwip-এ | Nadia