৯/১১-এর সন্ত্রাসবাদী হামলায় মৃত্যুকে চোখের সামনে দেখেছিলেন স্ট্যানলি প্রেইমনাথ। দেখেছিলেন কীভাবে একটি বিমান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের তাঁদের টাওয়ার লক্ষ্য করে এগিয়ে এসেছিল। কোনওমতে প্রাণ নিয়ে পালিয়েছিলেন স্ট্যানলি।
ভগবান এমনই মহিমাশালী। এই বিশ্বাস নিয়েই এখন বেঁচে রয়েছেন স্ট্যানলি প্রেইমনাথ। একটা সময় বিখ্যাত মার্কিন ব্যাঙ্কের উচ্চ পদস্থ কর্তা ছিলেন। কিন্তু, ৯/১১-এর সন্ত্রাসবাদী হামলা বদলে দিয়েছে স্ট্যানলিকে। প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু, তিনি মনে করেন তাঁর এই নতুন জীবনদান হয়েছে স্রেফ ভগবানের আশীর্বাদে। এশিয়ানেট নিউজ-এর নিউ ইয়র্ক কারেসপন্ডেন্ট ডক্টর কৃষ্ণা কিশোরকে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রেইমনাথ জানিয়েছেন, ৯/১১-র দিনের সকালের কথা। ৯/১১-এর সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সাউথ টাওয়ারে ছিলেন স্ট্যানলি। অন্য দিনের মতোই নিশ্চিন্তে অফিস গিয়েছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্ট্যানলি। নিজের ডেস্ক থেকে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের নর্থ টাওয়ারে হামলা দেখেছিলেন। একটা বিমান সোজা এসে নর্থ টাওয়ারের মধ্যে ঢুকে গেল, দেখেছিলেন তিনি। আতঙ্কে সাউথ টাওয়ারের লোকজন লিফট দিয়ে নিচে নেমে যায়। নিরাপত্তা রক্ষী দাবি করেন সাউথ টাওয়ার নিরাপদ, কোনও ভয় নেই। ফের লিফটে করে উপরে উঠে আসেন স্ট্যানলি ও তাঁর বন্ধুরা। কিন্তু, অফিসের গেট খুলে ঢুকতে এক মহিলার আর্তনাদ। স্ট্যানলি দেখেন আরও একটি বিমান তাঁদের টাওয়ার লক্ষ্য করে এগিয়ে আসছে। কোনওক্রমে দৌড় লাগান স্ট্যানলি, মুহূর্তের মধ্যে এক বিকট আওয়াজ। কেঁপে উঠেছিল গোটা সাউথ টাওয়ার, ভেসে আসে আর্তনাদ ও বিস্ফোরণের শব্দ। স্ট্যানলির অফিসের চারতলা উপরে ছিনতাই করা বিমানটি ক্র্যাশ করিয়েছিল জঙ্গিরা। জোর প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন স্ট্যানলি, হারিয়েছেন অসংখ্য বন্ধু এবং পরিচিতদের। স্ট্যানলি শরীরে একটাও ক্ষত চিহ্ন ছিল না, নিরাপদে বেরিয়ে এসেছিলেন
এর ঘণ্টাখানেক পরেই পুরো টাওয়ারটা ধসে পড়ে গিয়েছিল। ঘটনার পরে নিজের পরিবারকে চিনতে পারতেন না স্ট্যানলি। বিশ্বাস করতে পারতেন না যে তিনি বেঁচে রয়েছেন। সারাক্ষণ তাঁর কানের কাছে ভাসত বিমানের সেই বিকট আওয়াজ ও আর্তনাদ। চোখ খুললেই দেখতে পেতেন সাউথ টাওয়ার লক্ষ্য করে আসা বিমানটিকে। স্ট্যানলি মনে করেন তিনি ভগবানের আশীর্বাদে প্রাণে বেঁচেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন ভগবানের জন্য তাঁর এই নতুন জীবন পেয়েছেন। এখন একজন ধর্ম যাজকে নিজেকে পরিণত করেছেন স্ট্যানলি। বিভিন্ন স্থানে ভগবানের মহিমার কথা বলে বেড়ান, মানুষকে মানসিক শক্তি দেন।