থানার ভিতরে সটানে হাজির এক ব্যক্তি। মুখে মাস্ক। হাতে একটা প্লাস্টিকের প্যাকেট। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশকর্মীকে একটা রিপোর্ট বাড়িয়ে দেন তিনি। কিসের রিপোর্ট? প্রশ্ন করতেই উত্তর আসে- ওটা আমার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট। পজিটিভ এসেছে। এই কথা শোনামাত্র যেন হিম স্রোত বয়ে যায় পুলিশকর্মীর। কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। কারণ, করোনা আক্রান্ত যখন তাহলে হাসপাতালে যাওয়া দরকার। তা বলে ভর দুপুরে টালিগঞ্জ থানার মধ্যে হাজিরা কেন। ওই ব্যক্তিকে আরও কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই পুলিশকর্মী থানার ভিতরে থাকা সমস্ত সহকর্মীদের জানিয়ে দেন, তাদের অফিসে এক করোনা আক্রান্ত মানুষ হাজির হয়েছে। এমন কথা শোনামাত্র তখন থানার ভিতরে হইচই পড়ে যায়। পুলিশকর্মীদের জিজ্ঞাসায়, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি জানান, তিনি রাসবিহারী মোড়ে একটি ভুজিয়ার দোকান চালান। দিন কয়েক ধরেই সর্দি-কাশি হচ্ছিল। সন্দেহ হওয়ায় একটি বেসরকারি ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করান। সেই রিপোর্ট আসার পর দেখেন তিনি পজিটিভ। এরপরে কী করতে হবে, বুঝতে না পেরে তাই রিপোর্ট নিয়ে টালিগঞ্জ থানায় এসেছেন। যদি পুলিশ কিছু সাহায্য করতে পারে। ওই ব্যক্তি কাহিনি জানার পর টালিগঞ্জ থানার পুলিশকর্মীরা তাঁকে আস্বস্ত করেন এবং একটা জায়গায় বসতে বলেন। কিন্তু ততক্ষণে থানার অধিকাংশ পুলিশকর্মী সংক্রমণের ভয়ে রাস্তার বেরিয়ে পড়েছেন। থানা কার্যত ফাঁকা। করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে থানার মধ্যে একটা স্থানে বসিয়ে ব্যরিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। যাতে ভুলবশত কেউ না ওদিকে চলে যায়। এরপর স্বাস্থ্যভবনের কোভিড ১৯ ট্র্যাকিং সেলে ফোন করা হয় টালিগঞ্জ থানা থেকে। পরে পুরো থানা স্যানিটাইজ করা হলে তবে পুলিশকর্মীরা ফের থানায় ঢোকেন।