বিদিশার মন জুড়ে খেলা করত সৃষ্টিশীলতা। ছোট থেকেই সে এত ভালো আঁকতে পারতো যে তা সকলকে অবাক করে দিত। তাঁর প্রতিবেশী থেকে ঘনিষ্ঠজনেরা সকলেই মনে করত বড় হয়ে সে মস্ত বড় শিল্পী হবে।
রাতের সাড়ে দশটা বা এগারোটার লোকালটা এখনও ছুয়ে যাবে স্টেশনটাকে। কিন্তু মেয়ের প্রতিক্ষায় বাবার রাতের ঘুম উজিয়ে অপেক্ষা করার ক্ষণটার তো মৃত্যু হয়ে গেল বুধবার সন্ধ্যায়। কারণ প্রাণের যে অধিক মেয়ে সে তো এখন না ফেরার দেশে। বুধবার সন্ধ্যায় দমদম নাগেরবাজারের ভাড়া ফ্ল্যাটবাড়ির মেসে উদ্ধার হয়েছে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ। বছর একুশের মেয়েটার এমন পরিণতিতে এখন শোকে মূহ্যমান ভাটপাড়়ার দে বাড়ি। কান্নায় ভেঙে পড়তে পড়তে বিছানা নিয়েছেন মা। যারা বিদিশাকে ছোট থেকে কোলে করে মানুষ করেছে তাঁদের চোখের কোল ভিজে যাচ্ছে তাঁর কথা বলতে গিয়ে। এক প্রতিবেশী জানালেন, বিদিশার মন জুড়ে খেলা করত সৃষ্টিশীলতা। ছোট থেকেই সে এত ভালো আঁকতে পারতো যে তা সকলকে অবাক করে দিত। তাঁর প্রতিবেশী থেকে ঘনিষ্ঠজনেরা সকলেই মনে করত বড় হয়ে সে মস্ত বড় শিল্পী হবে। মডেলিং-কে কেরিয়ার হিসাবে না নিয়ে বিদিশা যদি আঁকাকেই তাঁর সৃষ্টিশীলতার মাধ্যম করতে তা হলে হয়তো আজ এই দিন আসত না বলেই অনেকে মনে করছেন। এমনকী, বিদিশার মতো শান্ত মেয়ে এমন একটা কাজ করতে পারে তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। মডেলিং-এর কাজ করে ফিরতে রোজ অনেক রাত হয়ে যেত। স্টেশনে গিয়ে বসে থাকত হত বাবাকে। তাই কাজের সুবিধার জন্য নাগেরবাজারে মেসে থাকতে শুরু করেছিল বিদিশা। মাঝে মাঝে বাড়ি ফিরত। সেই মেয়ে যে আর ফিরে আসবে না- তা ভেবেই শোকে ডুকরে উঠছে ভাটপাড়ার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের টালিখোলা এলাকা।