ঘূর্ণিঝড় আমফানের মতো এত গতিশীল ঝড় কোনওদিন প্রত্যক্ষ করেনি গঙ্গাসাগর-সহ সুন্দরবন। তবে, এবার একটাই বাঁচোয়া ছিল যে ঝড় আসার সময় ভাটা ছিল। এরপরও যে ধ্বংস ঘূর্ণিঝড় আমফান করে দিয়েছে তা যদি জোয়ারের সময় হত, তাহলে সুন্দরবনের বহু দ্বীপ হয়তো চিরতরে হারিয়ে যেত। একান্ত সাক্ষাৎকারে এমনই এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন গঙ্গাসাগরের বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান এবং গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান বঙ্কিম হাজরা। তিনি জানিয়েছেন, দুপুর বারোটা থেকেই প্রবল ঝোড়া বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি হতে শুরু করে। আকাশ এতটাই কালো হয়েছিল যেন মনে হচ্ছিল সন্ধ্যে নেমে এসেছে। দুপুর ২টোয় ঘূর্ণিঝড় আমফান গঙ্গাসাগরের উপরে আছড়ে পড়ে। বিকেল চারটার পর থেকে সেই ঝড়ের প্রকোপ কমতে থাকে। কিন্তু, এর ক্ষণিক পরেই অ্যান্টি-ক্লক ওয়াইজ আমফান ফের ফিরে এসে ধাক্কা মারে গঙ্গাসাগর-সহ ঘোড়ামারা, মৌসুনী, বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, পাথরপ্রতিমা। এই সময় ঝড়ের বেগ ১৯০ কিলোমিটার পার করে গিয়েছিল। ঝড়ের এতটাই বেগ ছিল যে মুহূর্তের মধ্যে সুন্দরবন অঞ্চলের ৯০ শতাংশ গাছ উপরে পড়ে যায়। উপড়ে পড়ে যায় একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি। চূড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ম্যানগ্রোভ। নদী এবং সাগরের জল-ও ফুলে-ফেঁপে অন্তত ১০ থেকে ১৫ উচ্চতায় চলে আসে। কিন্তু, জোয়ার না থাকায় জলোচ্ছ্বাসে কোনও এলাকা ভেসে যেতে পারেনি। কিছুক্ষণ জলের এই ভয়াল মূর্তি থাকলেও আস্তে আস্তে থিমিয়ে যায়।