সাতসকালে সাইকেল চালিয়ে কোথায় যাচ্ছেন বড়বাবু। নতুন সাইকেল। তার সঙ্গে বড়বাবু এক্কেবারে উর্দিপরে। পায়ে আবার পুলিশের জুতো। সকলেরই কৌতুহল। মুর্শিদাবাদের বড়াঞা থানার বড়বাবু দেবদাস বিশ্বাসের পিছু নিল সংবাদমাধ্যমও। খানিক পরেই দেখা গেল নতুন সাইকেল নিয়ে এলাকার একটি বাড়িতে ঢুকেছেন দেবদাস।
সাতসকালে সাইকেল চালিয়ে কোথায় যাচ্ছেন বড়বাবু। নতুন সাইকেল, তার সঙ্গে বড়বাবু এক্কেবারে উর্দিপরে। পায়ে আবার পুলিশের জুতো। সকলেরই কৌতুহল। মুর্শিদাবাদের বড়াঞা থানার বড়বাবু দেবদাস বিশ্বাসের পিছু নিল সংবাদমাধ্যমও। খানিক পরেই দেখা গেল নতুন সাইকেল নিয়ে এলাকার একটি বাড়িতে ঢুকেছেন দেবদাস। তাঁর পিছু নিয়ে সেই বাড়ির উঠোনে হাজির সংবাদমাধ্যম। জানা গেল বড়ঞা থানার ওসি দেবদাস বিশ্বাস আসলে সাইকেলটি কিনেছেন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী তানিয়া আফরিনের জন্য। দিন কয়েক আগেই বড়ঞার নিমা বাহাদুরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী তানিয়ার সাইকেল চুরি হয়ে যায়। এরপর থেকেই পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হতে বসার জোগাড় হয়েছিল তানিয়ার। সাইকেল ছাড়া স্কুলে যাতায়াত করতে অসুবিধা হচ্ছিল। এছাড়াও টিউশন পড়তে যাওয়াটাও ব্যহত হচ্ছিল। উপায়ান্ত না পেয়ে শেষমেশ তানিয়ার বিয়েও ঠিক করে ফেলেছিল বাবা-মা। বিষয়টি পুলিশকর্তা দেবদাস বিশ্বাসের কানে পৌঁছতেই তিনি মঙ্গলবার সকালে এলাকার একটি সাইকেলের দোকানে হাজির হয়ে যান। সেখান থেকে নিজের গ্যাঁটের অর্থ খরচ করে একটি লেডিস সাইকেল কেনেন। আর সাইকেল চালিয়ে হাজির হয়ে যান তানিয়ার বাড়ি। সাইকেল চুরি হওয়ায় পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল। এই পরিস্থিতিটা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারেনি তানিয়া। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। রাতদিন কান্না-কাটি তার লেগেই ছিল। এরমধ্যে বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য চাপ আসতে থাকায় সে আরও ভেঙে পড়েছিল। সাইকেল পেয়ে বেজায় খুশি তানিয়া। এখন স্কুল থেকে টিউশনে যাওয়ার সমস্যাটা আর থাকবে না বলেই জানিয়েছে সে। পুলিশের কাজ যে শুধুই আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ এমনটা নয় তা যেন আরও একবার প্রমাণ হল এই ঘটনায়। পুলিশ যে প্রয়োজনে যথেষ্ট মানবিক ভূমিকাও নিতে পারে তা দেবদাস বিশ্বাসের উদ্যোগ দেখিয়ে দিল। যেখানে প্রায়ই পুলিশকে রাজনীতিবিদদের প্রভাব প্রতিপত্তিতে দিশেহারা হতে হয়, সেখানে তানিয়ার জন্য দেবদাসের এমন উদ্যোগ সকলের মনে পুলিশকে অনেক ভুল ধারনাকে মুছে দিতে সাহায্য করবে বলেও মনে করা হচ্ছে।