কলকাতা ও সন্নিহিত ১০টি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা কেন্দ্র, দেখে নিন একনজরে

  • আর ৪৮ ঘণ্টাও বাকি নেই
  • শুরু হয়ে যাবে ভোটের ফল গণনা ও ঘোষণা
  • এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বেশ কিছু আসনের ফল অতীব গুরুত্বপূর্ণ
  • রাজ্যের দীর্ঘতম ভোটপর্বে কাদের নির্বাচিত করলেন বাংলার মানুষ

Asianet News Bangla | Published : Apr 30, 2021 3:24 PM IST

তাপস দাস: আর ৪৮ ঘণ্টাও বাকি নেই। শুরু হয়ে যাবে ভোটের ফল গণনা ও ঘোষণা। জানা যাবে রাজ্যের দীর্ঘতম ভোটপর্বে কাদের নির্বাচিত করলেন বাংলার মানুষ। এবারের ভোট অভূতপূর্ব। কয়েক বছর আগে রাজ্যে যাদের সামান্য উপস্থিতি ছিল, তারা মূল চ্যালেঞ্জার হয়ে উঠেছে মাত্র দু তিন বছর সময়কালে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বেশ কিছু আসনের ফল অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কলকাতা ও তৎসন্নিহিত এলাকার দশটি এরকম বিধানসভা কেন্দ্র বেছে নেওয়া হল। 

১. ভবানীপুর

এই কেন্দ্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছিল। ২০১১ -র নির্বাচনে তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠিত হবার পর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিতে আসতে হত মুখ্যমন্ত্রী থাকার জন্য। সুব্রত বক্সী ভবানীপুর বিধানসভার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবার পর, সেখান থেকে জিতে আসেন মমতা। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও এই কেন্দ্র থেকেই ভোটে দাঁড়ান তিনি। এবারের ভোটে মমতা লড়েছেন নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে। এই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, যিনি দলের প্রথম বিধায়কও বটে। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রীকে এই কেন্দ্রে টক্কর দিয়েছেন শিবির বদল করা রুপোলি পর্দার অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। মমতার ছেড়ে যাওয়া বিধানসভার ফল কী হয়, সেদিকে নজর থাকবে সবার। 

২. জোড়াসাঁকো

এবারের বিধানসভা ভোটে বাঙালি-অবাঙালি প্রসঙ্গ বারবার উত্থাপিত হয়েছে, উঠে এসেছে বহিরাগত প্রসঙ্গ। জোড়াসাঁকো নামের সঙ্গে বাংলা ভাষা সংস্কৃতির তুমুল যোগাযোগ যেমন রয়েছে, তেমনই ঘটনা হল, রবীন্দ্রনাথের বসতবাড়ির এই এলাকা এখন প্রায় সম্পূর্ণত অবাঙালি অধ্যুষিত। এই কেন্দ্রের মূল দুই প্রার্থীও অবাঙালি। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বিবেক গুপ্তা। অবাঙালি পরিবারভুক্ত হলেও কলকাতাতেই জন্ম ও পড়াশোনা তাঁর। ২০১২ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। অন্যদিকে বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছেন মীনা দেবী পুরোহিত। দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর ও সুব্রত মুখার্জি মেয়র থাকার সময়ে ডেপুটি মেয়রের ভূমিকাও পালন করেছেন রাজস্থানের বিকানিরের স্নাতক, কলকাতা পুরসভার ২২ নং ওয়ার্ডের এই কাউন্সিলর। এই কেন্দ্রের নির্বাচকরা কোন দিকে ঝুঁকে, সে ব্যাপারে আগ্রহ যথেষ্ট। 

৩. টালিগঞ্জ

২০১১ সালে এই বিধানসভা কেন্দ্রের সীমানা পুনর্নির্ধারিত হয়। সেবার থেকেই এই কেন্দ্র তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। দুই দফাতেই এখানে জয়লাভ করেছেন অরূপ বিশ্বাস, যিনি রাজ্যের মন্ত্রীও বটে। অরূপ বিশ্বাস টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রির নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছেন, এমন অভিযোগ বহুবার উঠেছে। আবার এও ঘটনা, যে দায়ে দফায় তাঁকে কাছে পেয়েছেন টালিগঞ্জের মানুষজন, বিশেষত করোনাকালীন লক ডাউনের সময়ে। বিজেপি এবার এই কেন্দ্রে অরূপের সামনে ঠেলে দিয়েছে আসানসোলের সাংসদ তথা বলিউড ইন্ডাস্ট্রির গায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে। টলিউড-বলিউড যোগফলের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী গেরুয়া শিবির। টালিগঞ্জ এবারের বিধানসভা নির্বাচনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। 

৪. যাদবপুর

যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রটি যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত। ১৯৬৭ সাল থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে সিপিএমের দখলে থাকা এই কেন্দ্রে ২০১১ সালে পালা বদল হয়। কিন্তু সে ওই একবারই। সেবার বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে হারিয়েছিলেন মণীশ গুপ্ত। ২০১৬ সালে ফের এই আসন জিতে নেয় সিপিএম। বিধায়ক হন সুজন চক্রবর্তী। এবারও যাদবপুরে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী সুজন। বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন, ডিসেম্বরে সিপিএম থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া পূর্বতন কাউন্সিলর রিঙ্কু নস্কর। বিজেপির প্রার্থী মলয় মজুমদার। খাতায় কলমে বিধানসভার হিসেবে সুজনের জয় কিছুটা নিশ্চিত মনে হলেও গত লোকসভা ভোটের হিসেব দেখলে এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের পাল্লা ভারী দেখাচ্ছে। তবে রিঙ্কুর সঙ্গে সিপিএমের ভোটের একাংশ পদ্মে ঝুঁকবে এ কথাও বলা যায়। 

৫. ভাঙড়

এবারের বিধানসভা নির্বাচনের মানচিত্রে ভাঙড় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল স্রেফ একজনের কারণেই। তিনি আব্বাস সিদ্দিকি। ভোটের ঠিক আগে আব্বাসের তৈরি ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে সিপিএম-কংগ্রেসের জোট সকলের নজর টেনেছে। আব্বাসের ভাই নৌশাদ ভাঙড় কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত রাষ্ট্রীয় সেকুলার মজলিশ পার্টির প্রার্থী। মুসলিম অধ্যুষিত ভাঙড় কেন্দ্র থেকে তাঁর জয়ের ব্যাপারে বাজি ধরেছেন অনেকেই। অন্যদিকে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এখানে দীর্ণ থেকেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ভাঙড়ের কোনও প্রার্থীকে দাঁড় করালে অন্যপক্ষের অসহযোগিতা সম্পর্কে প্রায় নিশ্চিত শাসক দল এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে বিশিষ্ট চিকিৎসক রেজাউল করিমকে। তাঁর ভাবমূর্তির উপর নির্ভর করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে এই কেন্দ্রে জমি আন্দোলন নিয়ে নিজেদের মাটি কিছুটা হলেও শক্ত করা সিপিআই এমএল রেড ফ্ল্যাগও এই কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছে। কয়েকটি জায়গায় তাদের প্রার্থী মির্জা হাসান ভোট টানবেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিজেপির সৌমি হাতি এই কেন্দ্রে রয়েছেন। চতুর্মুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার এই কেন্দ্রও এবার নজর টানা। 

৬. ব্যারাকপুর

অর্জুন সিংয়ের গড় বলে পরিচিত ব্যারাকপুর বিধানসভা কেন্দ্র ঘিরে বিজেপি আশায় বুক বেঁধেছিল অনেকটাই। সেখানে কিছুটা হলেও তাদের কপালে চিন্তার ছাপ ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী নির্বাচন। এই কেন্দ্রে শাসক দল প্রার্থী করেছে টলিউডের পরিচালক রাজ চক্রবর্তীকে। রাজের সমর্থনে সভা করেছেন টালিগঞ্জ পাড়ার পরিচিত মুখেরা, এমনকী রোড শো করেছেন জয়া বচ্চন। এই ঝাপটা সামাল দিতে বিজেপি অবশ্য অন্য পদ্ধতি নিয়েছে। কিছু দিন আগে প্রকাশ্যে খুন হওয়া বিজেপির জেলা নেতা মণীশ শুক্লার বাবা চন্দ্রমণি শুক্লাকে প্রার্থী করেছে গেরুয়া শিবির। তাদের চাবিকাঠি সহানুভূতি ভোট ও অর্জুন সিংয়ের সংগঠন। গত লোকসভা নির্বাচনে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া অর্জুন সিং। লোকসভা নির্বাচনের হিসেব মাথায় রাখলে পদ্মশিবির এখানে অনেকটাই এগিয়ে থাকলেও রাজ চক্রবর্তীর উপস্থিতি হিসেব পাল্টে দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। 

৭. হাবড়া

হাবড়া আসনের গুরুত্ব উভয়পাক্ষিক। এই কেন্দ্রে শাসক দলের হয়ে ভোটে লড়ছেন রাজ্যে খাদ্য দফতরের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। হাবড়া বিধানসভা আসনের ভোটের অনেকটাই মতুয়া নির্ভর। মতুয়া সম্প্রদায়ের ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি রাজ্যের শাসক দলের তরফ থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই দেখাশোনা করেন। জ্যোতিপ্রিয়র বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও, ঘটনা হল, ২০১১ ও ২০১৬ সালে এই কেন্দ্র থেকে তিনিই নির্বাচিত বিধায়ক। জ্যোতিপ্রিয় সাংগঠনিকভাবেও দলের নেতা। জেলা তৃণমূলের দায়িত্বভার তাঁরই হাতে। এই কেন্দ্রে জ্যোতিপ্রিয়র চ্যালেঞ্জার রাহুল সিনহা। রাহুল রাজ্য বিজেপির সভাপতির দায়িত্বভার সামলিয়েছেন, ছিলেন বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতিতেও। প্রথমে তাঁকে সরানো হয়েছিল রাজ্য বিজেপি সভাপতি পদ থেকে, তারপর অপসারণ করা হয় জাতীয় কর্মসমিতি থেকে। দীর্ঘদিন বিজেপি রাজনীতির সঙ্গে থাকা রাহুল এতে অসন্তোষ ব্যক্ত করেছিলন। এতদিন রাজনীতিতে থেকেও, বারংবার ভোটে দাঁড়িয়ে কোনওদিনও ভোটে জিততে পারেননি রাহুল সিনহা। রাহুলের ভোট ভাগ্য বদলানোর জন্য তিনি ছাড়াও নিশ্চিত প্রার্থনা করছে গোটা গেরুয়া শিবিরই। 

৮. রায়দিঘি

রায়দিঘি আসনের পত্তন হয়েছে ২০১১ সালে। এই আসনটি মথুরাপুর লোকসভা আসনের অন্তর্ভুক্ত। প্রথম বছর থেকেই এই আসন চলে যায় তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। ২০১১ ও ২০১৬, দু বারই এখান থেকে জিতেছিলেন দেবশ্রী রায়। কিন্তু দেবশ্রীর জয়ের থেকেও এই আসন বেশি আলোচিত থেকেছে পরাজিত প্রার্থীর জন্য। ২০০১ ও ২০০৬ সালে মথুরাপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী বামফ্রন্টের মন্ত্রী কান্তি গাঙ্গুলি দুবারই হেরে যান টালিগঞ্জের অভিনেত্রীর কাছে। কাজের মানুষ বলে পরিচিত কান্তির পরাজয় সিপিএমের সাংগঠনিক দুর্বলতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে ফের প্রার্থী হয়েছেন কান্তি। কিন্তু এবার আর ভোটে নেই দেবশ্রী। তিনি ফিরে গিয়েছেন অভিনয় জগতে, বলেই দিয়েছেন ১০ বছর সময় নষ্ট করেছেন। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে অলোক জলদাতাকে। অন্যদিকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন প্রয়াত তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সত্যরঞ্জন বাপুলির পুত্র শান্তনু বাপুলিকে। এই পরিস্থিতিতে কান্তি গাঙ্গুলি হৃত সম্মান পুনরুদ্ধার করতে পারেন কিনা, সে দিকে চোখ রয়েছে সকলেরই। 


৯. বালি 

হাওড়া জেলার বালি বিধানসভা কৌতূহল তৈরি করেছে দুই প্রার্থীকে ঘিরে। ঘটনাচক্রে দুজনেই মহিলা প্রার্থী। একজন বিজেপির, অন্যজন সিপিএমের। বিজেপির বটে, তবে সদ্য বিজেপি হয়েছেন বৈশালী ডালমিয়া। তিনি ২০১৬ সালের নির্বাচনেও তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে ভোটে লড়েন ও জেতেন। তৃণমূলত্যাগী বৈশালীকে দলে যোগদান করার সঙ্গে সঙ্গে ভোটের টিকিট দিয়েছে বিজেপি। গতবারের বিধায়ক বৈশালীকে ঘিরে বহিরাগত আওয়াজ উঠেছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। অন্য যে মহিলা প্রার্থীকে নিয়ে এখানে কৌতূহল, তিনি দীপ্সিতা ধর। বাম রাজনীতিতে তরুণ ও উজ্জ্বল মুখ বলতে যাঁদের কথা সর্বপ্রথমে আসে, তাঁদের অন্যতম দীপ্সিতা ধর। তিনি বাংলার রাজনীতিতে ছিলেনই, পরবর্তীকালে তিনি জাতীয় রাজনীতিতেও মুখ হয়ে উঠেছেন, জেএনইউয়ে পড়াশোনা ও সেখানকার রাজনীতিতে যুক্ত থাকার সুবাদে। এই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চিকিৎসক রাণা চ্যাটার্জি। 

১০. ডোমজুড়

হাওড়া জেলার ডোমজুড় আসনটি রাজ্যের অন্যতম নজরকাড়া আসন। শুভেন্দু অধিকারীর পর, তৃণমূল কংগ্রেসের যে নেতা তথা মন্ত্রী বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় পদ্ম শিবির শক্তিশালী হয়েছে বলে মনে করা হয়, তিনি রাজীব ব্যানার্জি। মমতা মন্ত্রিসভার মন্ত্রী তথা ডোমজুড়ের বিধায়ক শুভেন্দুর দলত্যাগের পরেই তৃণমূল ছাড়েন। এবার তাঁকেই এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। ৪০ শতাংশের মত মুসলিম জনসংখ্যার ডোমজুড় কেন্দ্রে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, ভরসা রাখতে। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে কাজ করতে দেয়নি তৃণমূল সরকার। ফলে দুর্ভোগ পোয়াতে হয়েছে বিধানসভা এলাকার মানুষের। হাওড়া জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কল্যাণেন্দু ঘোষ। এই কেন্দ্রে বিজেপি নিজেদের জয় নিশ্চিত বলেই ধরে নিয়েছে। 

Share this article
click me!