লোকসভা ভোটের পর থেকেই এই রাজ্যে প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি। বিধানসভা ভোটের আগেই জোর টক্কর দিচ্ছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। একের পর এক বিধায়ক সাংসদ দল বদলও শুরু করে দিয়েছেন। তৃণমূল নেতাকর্মীরা ভিড় জমাচ্ছেন পদ্ম শিবিরে। এই অবস্থায় ক্রমশই সামনে আসছে বিজেপি যদি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে তাহলে কে বসবেন মুখ্যমন্ত্রীর কুর্শিতে? বিজেপি রাজ্যসভাতি দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারি সকলের নাম নিয়ে একপ্রস্ত জল্পনায় সামিল হয়েছে বঙ্গবাসী। বাদ যায়নি মহারাজও। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়েও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন-- তেমনও গুঞ্জন শোনা গেছে টালিগঞ্জ থেকে টালা পর্যন্ত। কিন্তু সব জল্পনায় জল ঢাললেন বাংলায় বিজেপির রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
বুধবার সংবাদ সংস্থা এনএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়েছেন বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র কোনও প্রজেক্টেড মুখ্যমন্ত্রী নেই। অর্থাৎ দলের রাজ্যস্তরের কোনও নেতাকে সামনে রেখে লড়াই করবে না বিজেপি। ভোটের পর সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে দলের নেতা ও বিধায়করা একসঙ্গে বসে স্থির করবেন কে হবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। দীর্ঘ দিন ধরেই বাংলার দায়িত্বে রয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তাঁর হাত ধরেই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপির খাতায় নাম লিখিয়েছিলেন তৎকালীন মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগি মুকুল রায়। এদিনও দিল্লিতে তাঁর উপস্থিতিতেই গেরুয়া শিবিরের নাম লিখিয়েছেন শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য।
বর্তমান রাজনৈতিতে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ও বামদলগুলি থেকে অনেকেই যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে। ক্রমশই ভিড় বাড়ছে গেরুয়া শিবিরে। এই অবস্থায় বিজেপির মধ্যে ক্রমশই প্রকট হচ্ছে আদি ও নব্য বিজেপির দ্বন্দ্ব। যা ইতিমধ্যেই কানে পৌঁছেছে দিল্লির নেতাদের। মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের বিবাদে মাঝে মধ্যেই গরম হয়ে ওঠে মুরলীধর সেন লেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে হস্তক্ষেপ করতে হয় দিল্লির নেতাদের। বিধানসভা ভোটের আগে দলে কোনও রকম অর্ন্তদ্বন্দ্ব চাননা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী , অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডার মত শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের রাজ্যনেতাদের সবরকম পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বারবার। রাজনৈতিক মহলের ধারনা সেই কারণে রাজ্য নেতৃত্বের ওপর রাশ টেনে রাখতে আগে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে রাজি নয় দিল্লি। কেন্দ্র বিজেপির মূল লক্ষ্যই বিধানসভা নির্বাচনে জয়। তাই সমস্ত মতো বিরোধ ভুলে রাজ্য নেতৃত্বকে কাজ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।